ফরিদপুরে এক ব্যাক্তিকে নির্যাতন করে হত্যার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে যুবদল নেতাসহ পাঁচ ব্যাক্তিকে সশ্রম কারাদ- ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদ- ভোগ করতে হবে।
পাশাপাশি এ হত্যা মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ ও আলামত গোপন করার দায়ে ২০১ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই পাঁচ আসামিকেই আরও পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদ- ও পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড অনাদয়ে আরো এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়। তবে আসামিরা দুইটি সাজাই একসাথে ভোগ করতে পারবেন।
গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের বিশেষ দায়রা আদালতের হাকিম মো. মতিয়ার রহমান এ রায় দেন।
মামলাচলাকালীন সময়ে এ মামলার আসামিরা বিভিন্ন সময়ে জামিনে থাকলেও আদালতে যুক্তিতর্ক চলাকালে তাদের সকলের জামিন বাতিল করা হয়। গতকাল রায় ঘোষণার আগে আসামিদের ফরিদপুর কারাগার থেকে পুলিশ প্রহরায় আদালতে নিয়ে আসা হয়। রায় ঘোষণার পর আবার তাদের আদালত থেকে জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নগরকান্দার চর যশোরদী ইউনিয়ন যুবদলের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ মোল্লা (৩৬) ও তার চার সহযোগী নয়া মোল্লা (৬০), ইমারত মোল্লা (৩২), কালাম মোল্লা (৩৮) ও সিদ্দিক মোল্লা (৩৬)।
এ হত্যা মামলার নথি ঘেটে ওই যায়, ২০০৬ সালের বিএনপি সরকারের মেয়াদের শেষের দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দার চর যশোরদী ইউনিয়নের যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ মোল্লা তার সহযোগীরা বিভিন্ন অপরাধ পরিচালিত করতেন। চর যশোরদী ইউনিয়নের মেঘারকান্দি গ্রামের কার্তিক সিকদারের এক নাবালিকা কন্যা চঞ্চলা সিকদারকে জোর করে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করে বিবাহ করেন সিরাজ মোল্লা। এরপর সিরাজ কার্তিক সিকদারের বাড়িঘর দখল করে নিজে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ১লা জুন রাতে সিরাজ ও তার সহযোগিরা কার্তিক সিকদারকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে ফেলে রেখে যায়। আহত কার্তিককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতেও বাধা দেয়া হয়। পরদিন ২ জুন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় কার্তিক সিকদার।
২০০৭ সালের মার্চ মাসের ১৩তারিখে নিহত কার্তিক সিকদারের স্ত্রী মিলনী সিকদার জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে এসে সিরাজ সিকদার ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।