সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া এলাকায় একটি ডেভলেপার কোম্পানির বিরুদ্ধে জোড় পূর্বক কৃষি জমি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কৃষকদের জমি ক্রয় না করেই তারা বালু ভরাট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষকদের পক্ষে গণ স্বাক্ষর নিয়ে বাগবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আবদুল কাদির নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনারগাঁ থানার ওসির কাছে স্বারক লিপি প্রদান করেছেন।
জানাগেছে, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া গ্রামের ৯০ভাগ কৃষক তাদের ফসলী জমি থেকে উৎপাদিত ফসল বিক্রির টাকার উপর নির্ভর করে তাদের সংসার পরিচালনা করে থাকেন। এসেপট নামের একটি ডেভলেপার কোম্পানি স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কিছু কৃষি জমি ক্রয় করে। পরবর্তীতে ভূমিদস্যু ও দালালদের মাধ্যমে সাধারণ কৃষকদের জমি জোরপূর্বক ভরাট করে নিচ্ছে। এতে বাঁধা দিলে স্থানীয় দালাল চক্র কৃষকদের উপর নির্যাতন করে। বালু ভরাটের ফলে ওই এলাকায় প্রায় ৫শ হেক্টর জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। এসেপট কোম্পানির পক্ষে জামপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম, যুবলীগের নামধারী নেতা মনির হোসেন, হাবিবুল্লাহ, আবুল কালাম, আজিজুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ও মোবারক হোসেন ভয় ভীতি, মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দিয়ে আসছে। এ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হামীম শিকদার শিপলুর শরণাপন্ন হয়েও কোন প্রতিকার পায়নি। কৃষকদের জমি ফিরে পেতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষকদের পক্ষে বাগবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আবদুল কাদির নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনারগাঁ থানার ওসির বরাবর স্বারক লিপি প্রদান করেছেন।
বাগবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম ও আবুল কালাম অভিযোগ করেন, এসেপট কোম্পানি একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে তাদের জমি বালু ভরাট করে ফেলছে। তাদের জমি উদ্ধারের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি। কৃষকদের আবাদি জমি ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
বাগবাড়িয়া গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে এ জমিতে আবাদ করে সংসার চালিয়ে আসছি। হঠ্যাৎ করে এসেপট নামের একটি কোম্পানি এসে কয়েকজন কৃষকের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে। পরবর্তীতে অন্যান্য কৃষকদের জমি ক্রয় করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কৃষকের অল্প কিছু জমি ক্রয় করে বাকী কৃষকদের ভয় ভীতি দেখিয়ে বালু ভরাট করে ফেলছে। কৃষক নাসিরউদ্দিন জানান, এ কোম্পানির কড়াল গ্রাসে আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়ছি। জমি দখল করে বালু ভরাট করায় জমি অনাবাদি হয়ে পড়ায় আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা কোম্পানির দালালদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হামীম শিকদার শিপলু বলেন, কৃষি জমিতে বালু ভরাটের বিষয়ে কেউ আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসেপট কোম্পানির পরিচালক আবদুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অন্য আরেকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলে ফোন কেটে দেন।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, কৃষকদের কৃষি জমিতে অবৈধভাবে বালু ভরাটের অভিযোগে স্বারকলিপি গ্রহন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।