ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর প্রতিকুল আবহাওয়া ও উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে শুক্রবার থেকে নারের টানে ঘরে ফিরছেন ঈদ যাত্রীরা। পদ্মা নদীর অন্যান্য ঘাট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, মাওয়া-কাউরাকন্দি সহ চন্দ্রপাড়া-নারিশার সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে উপজেলার গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়েও পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপনের জন্য ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। নারের টানে বাড়ী ফিরতে গিয়ে হাজারো দুর্ভোগ শিকার করে ট্রলার ও ষ্পীডবোট দিয়ে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন ঈদ যাত্রীরা। রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কর্মজীবি ও বিভিন্ন পেশাজীবিরা গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে ফিটনেসহীন ষ্পীডবোট ও ট্রলার সহ নানা বিড়ম্বনা শিকার করে চরম ঝুঁকির ফিরছেন মায়ের কোলে।
জানা যায়, রাজধানী ঢাকার গুলিস্থান থেকে বাস যোগে মাত্র দেড় ঘন্টায় উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারে চর মৈনট ঘাটে নেমেই ট্রলার ও ষ্পীডবোটে যাত্রীরা সহজে ঘরে ফিরছেন। কিন্ত গত দু’দিনের প্রতিকুল আবহাওয়ার কারনে উত্তাল হয়ে ওঠেছে পদ্মা নদী। তারপরও ট্রলার ও ষ্পীডবোট দিয়ে প্রায় ৬ কি.মি. উত্তাল জলসীমানা পার হয়ে ঘরে ফিরছেন ঈদ যাত্রীরা।
শুক্রবার দুপুরে উক্ত ঘাটের ঈদযাত্রী জাহাঙ্গীর কবির (৪৫) জানান, “ নারের টানে বাড়ী ফিরতে গিয়ে ভোর বেরায় ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়েছি। রাস্তায় জ্যামের কারনে মৈনট ঘাটে পৌছতে বিলম্ব হয়েছে। এরপর পদ্মার উত্তার ঢেউ পারি দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে ফিরেছি”। আরেক যাত্রী সাহেব আলী (৪৫) বলেন, “ খোলা ষ্পীডবোটের পদ্মা নদী পার হতে সব যাত্রী প্রায় ৩০ মিনিট কাল সম্পূর্ণ পানিতে ভিজে ঢেউয়ের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে বেশীরভাগ শিশু ও বৃদ্ধরা ভয় পেয়ে কেউ কেউ অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন বলেও জানান তিনি”। আরেক ট্রলার যাত্রী নাফিজুর রহমান (৩৫) বলেন, “ পদ্মা নদী যত ভয়ঙ্করই থাকুর ঈদ করতে বাড়ীতে তো ফিরতেই হবে। তবে ষ্পীডবোট যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হলেও ট্রলার যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ঘাট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও তিনি হতাশা ব্যাক্ত করেন”।
উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাট ঘুরে জানা যায়, ঈদ যাত্রী বহনের জন্য পদ্মা নদীর দু’পারে দুটি ঘাটে মোট ৩০টি ষ্পীটবোট ও ২০টি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি ছোট ষ্পীডবোটে ১০ জন এবং বড় ষ্পীডবোটে ২০ জন করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। ট্রলারে যাত্রী বোঝাইয়ের কোনো নির্দিষ্ট পরিমান উল্লেখ নেই। শুত্রবার থেকে চর মৈনট ঘাটে ষ্পীডবোট যাত্রী প্রতি ২শ’ টাকা এবং ট্রলারে ১২০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে জানা যায়।