ফরিদপুর অগ্রনী ব্যাংক হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার শাখার কর্মকর্তা রওশন আলী ও (রওশন আলীর ভাতিজা) মিরাজুল ইসলাম তুহিন মিয়া’র হত্যা কারীদের বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নিহতের পরিবারবর্গ।
সংবাদ সম্মেলনে কাইচাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাইচাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ঠান্ডু মাষ্টার বলেন, ২০১৬সালে ৪জুন আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। নির্বাচনের সময় হানিফ, হাসান গংরা আমার বিরোধিতা করে। তার পরেও আমি জনগনের ভোট চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। তার পর থেকে হানিফ, হাসান গংরা আমাকে আমার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৭সালের ২০ সেপ্টেম্বর আমাকে ও আমার পরিবারের নামে একটি মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। মামলাটি ইতোমধ্যে তদন্ত পূর্বক মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। আর সে কারনেই হানিফ, হাসান গংরা আরো বেশী হিংসা পরায়ন হয়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১০ আগস্ট আমাদের পরিবারের উপর বর্বোরোচিত হামলা চালায়। হামলায় আমার ছোট চাচা ব্যাংকার রওশন আলী ও চাচাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত হয় আমার পরিবারের আরও ১০জন। এই হত্যাকান্ডকে অনেকে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল হিসাবে সাংবাদিক ভাইদের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছে। মূলত হানিফ, হাসান গংরা আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যা করার জন্যই ঐদিন নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। আমি এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায় বিচার দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত তুহিনের বোন ড. আসমা শহীদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে হানিফ, হাসান গংরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করে এবং আহত করে আরো ৮ জনকে। আহতরা বর্তমানে ঢাকাসহ ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। তিনি বলেন, এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের মধ্যে অন্যতম আসামি হানিফকে আটক করা হলেও বাকিরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ইতোমধ্যে আসামিরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছে। অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়।
হওয়ার পর থেকেই সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী। এ সময় বক্তব্য রাখেন কাইচাইল ইউপি চেয়ারম্যান ও কাইচাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ঠান্ডু মাষ্টার, চরযশোরদী ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমনা পথিক, নিহতের স্বজন মনিরা বেগম প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্বরকলিপি প্রদান করা হয়।
উল্লেখ ১০ আগস্ট পূর্ব শক্রতার জের ধরে প্রতিপক্ষের গুলিতে ফরিদপুর অগ্রনী ব্যাংক হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার শাখার কর্মকর্তা রওশন আলী ও (রওশন আলীর ভাতিজা) মিরাজুল ইসলাম তুহিন মিয়া নিহত হয়। এঘটনা আহত হয় আরও ১০জন।
নিহতের ঘটনায় ১১ আগস্ট নিহত রওশন এর ভাই ও নিহত তুহিনের পিতা রায়হান উদ্দিন মিয়া ২১জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় পুলিশ মূল আসামি হানিফসহ ৫জন কে আটক করেছে।