বিভিন্ন উন্নত দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এবং বাংলাদেশের বাস্তব দিক বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন মতবাদের সুফল ও কুফল ভেবে এবং সমাজে তার প্রভাব চিন্তা করে এর মধ্যে বিশেষ ভাবে তুলে ধরা হয়েছে পদক্ষেপ গুলো। আমরা জানি যে আধুনিক রাষ্ট্রে গনতন্ত্র সামাজিক অগ্রগতির একমাত্র চাবিকাঠি। তাই আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য গনতন্ত্রকেই বেছে নিতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। বর্তমান পৃথিবীতে পুঁজিবাদের জয়জয়কার অবস্থা। এক মার্কীন রাষ্ট্য্রবিজ্ঞানী তো বলেই ফেলেছেন, Capitalism is the end of the History অর্থাৎ পুঁজিবাদই ইতিহাসের শেষ। কিন্তু চার্লস ডারউইনের বিবর্তন যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে পুঁজিবাদী শোষনের একদিন শেষ হবে। ফিরে আসবে মানুষের মধ্যে বৈষম্যহীনতা। পুঁজিবাদে রাজনৈতিক স্বাধীনতা থাকে কিন্তু সেটা থাকে বুর্জোয়াদের জন্য। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা থাকে না শোষিত বঞ্চিতদের জন্য। পুঁজিবাদে শোষিত আরও শোষিত হতে থাকে। তাই পুঁজিবাদকে আমরা ইতিহাসের শেষ বলতে পারি না। আবার অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করা হয় কিন্তু রাজনৈতিক স্বাধীনতা থাকে না। এসব দিক ভেবে নিয়ে আমার লেখায় যে পদক্ষেপগুলির কথা বলা হয়েছে তা কোন মতেই একক কোন মতবাদের উপর ভিত্তি করে নয়। এর সম্পুর্ণ অংশই নেয়া হয়েছে বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি ও সমস্যা থেকে। যা আধুনিক কল্যাণমূলক গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নিহীত। বাংলাদেশের মূল সমস্যা চিহ্নিত করে এর সমাধান দেয়া হয়েছে। সামনে নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি তুলে ধরবে জনগণের সামনে। ক্ন্তিু সঠিক কর্মসূচি না দিলে দারিদ্র্যতা সহ অনেক সমস্যাই দূর হবে না। কিছুদিন পুর্বে এক গবেষনায় দেখা গেছে গত চার বছরে মাত্র ৭% (সাত সতাংশ) দারিদ্র্যতা দূর হয়েছে। এমনি ভাবে চলতে থাকলে ৬৫ বৎসর লাগবে সম্পূর্ন দারিদ্র্যতা কাটিয়ে উঠতে। এভাবে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলতে থাকলে আমরা উন্নত দেশের সাথে তাল মেলাতে পারবো না। তাই নির্বাচনী ওয়াদা হিসাবে নিম্নের পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন সাহসী পদক্ষেপ না নিলে দেশ এগিয়ে যাবে না। পদক্ষেপগুলো লেখকের সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত মতামত। বিষয়গুলো ভেবে দেখবেন।
১। বাংলাদেশের সম্পদ সীমিত। জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে সে তুলনায় সম্পদ বাড়ছে না। তাই একটি সন্তানের বেশী নেওয়া অভিশাপ যে কোন পরিবারের জন্য। সরকারী ভাবে আইন করতে হবে, একটি সন্তানের বেশী নেওয়া যাবে না। স্বাধীনতা উত্তরকালে দেশের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৭ কোটির মত। যা এখন দাড়িয়েছে ১৬ কোটি। গত ৪০ বৎসরে জনসংখ্যা হয়েছে দিগুনেরো বেশী। এভাবে চলতে থাকলে স্বাধীনতার ৫০ বৎসর পরে কি হবে তা সহজেই অনুমেয়। তাই আইন অমান্যকারীদের (যারা একের অধিক সন্তান নিচ্ছেন) বিরুদ্ধে শাস্তি-মুলক ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। যেমন দেশের যে কোন ধরনের নির্বাচনে বিশেষ করে গ্রামের বা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থীদের, একের বেশী সন্তান হলে অযোগ্য ঘোষনা করা যেতে পারে। একের অধিক সন্তানের জন্য সরকারী চাকুরী পাবে না। বা সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। একটি সন্তানের পরে সরকারী দায় দায়িত্বে সন্তান জন্মদান বন্ধ করাতে হবে।
২। আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষিক্ষেত্রে ব্যপক সংস্কার করতে হবে। তন্মধ্যে বর্গাপ্রথার উচ্ছেদ সর্বাগ্রে অগ্রগণ্য। কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে। বর্গাপ্রথার বিলুপ্ত ঘটাতে হবে।
৩। প্রকৃত ভুমিহীনদের মধ্যে সরকারী খাস জমি বিনাশর্তে দিতে হবে।
৪। কৃষির উন্নতি মানেই জাতির উন্নতি। তাই সরকারী উদ্যোগে সমবায় খামার গড়ে তুলতে হবে। বেসরকারী উদ্যোগেও সমবায় খামারএর জন্য উৎসাহ দিতে হবে।
৫। শিক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে হবে। স্নাতকোত্তর পর্যন্ত বিনামুল্যে পাঠদান এর ব্যাবস্থা নিতে হবে। অপ্রয়োজনীয় খাত থেকে ব্যায় ভার কমিয়ে শিক্ষা খাতে ব্যায় বৃদ্ধি করতে হবে।
৬। প্রতিটি গ্রামে একটি করে (নূন্যতম) প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে স্থাপিত সকল প্রাথমিক বিদ্য্লায় এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলিকে সরকারী করতে হবে।
৭। মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হওয়ার পরে যদি দেখা যায় যে ছাত্রের উপরের দিকে শিক্ষা গ্রহণ না করাই ভালো, তাহলে তাকে কারিগরি শিক্ষার দিকে ঠেলে দিতে হবে। তাই প্রতিটি জেলায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে হবে।
৮। মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাঠ্য বইয়ে যৌন শিক্ষাকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। যাতে অপরাধপ্রবনতা গড়ে না ওঠে। এবং সচেতন ভাবে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যাতে করে ইভটিজিং চিরতরে বন্ধ হয়।
৯। শিক্ষাক্ষেত্রে সামরিক শিক্ষাকে বাধ্যতামুলক করতে হবে। এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে নূন্যতম ১ বৎসর সামরিক প্রশিক্ষন বাধ্যতামুলক করতে হবে। তবে প্রশিক্ষন কালীন সময়ে ভাতার ব্যাবস্থা করতে হবে। দেশের স্বার্থে যে কোন যুদ্ধে যাতে জনগণ সরাসরি যুক্ত হতে পারে সেইজন্য আগে থেকে ট্রেনিং এর ব্যাবস্থা করে রাখা।
১০। সেশন জট দূর করে নিয়মিত ভাবে কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক পড়া শেষ করে গ্রামে ১ বৎসর কাজ করতে হবে। এটি বাধ্যতামূলক করতে হবে। বিশেষ করে যারা উপরের স্তর পর্যন্ত পড়বে তাদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। যেহেতু শিক্ষাটাকে ফ্রি করা হয়েছে সেইহেতু দেশের প্রতি প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে। গ্রামে কাজ করার সময় প্রত্যেককে ভাতা দেওয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে। গ্রামের সার্বিক কল্যাণই এর প্রধান লক্ষ্য। বিশেষ করে নিরক্ষরকে অক্ষর জ্ঞান দান সহ গ্রামের উন্নতির জন্য যে কোন পদক্ষেপ নেয়া যাতে পারে।
১১। প্রত্যেক শিক্ষিত লোকের চাকূরীর ব্যাবস্থা করতে হবে। সেইজন্য প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তারপরও যদি শিক্ষিত বেকার থাকে তাহলে তাদের ভাতা দেওয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে। স্নাতকোত্তর পাশ করা ছাত্রদের অবশ্যই চাকুরীর ব্যাবস্থা করতে হবে। যদি চাকুরী না পায় তাহলে সার্টিফিকেট জমা দিয়ে ঋণ পাওয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে।
১২। প্রত্যেক জেলায় ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে হবে।
১৩। খেলাধুলার মান উন্নয়নের লক্ষে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়ারদেরকে সরকারী ভাতার ব্যাবস্থা করতে হবে।
১৪। শিল্প ক্ষেত্রে ব্যাপক সরকারী উদ্যোগ নিতে হবে। বন্ধ কলকারখানা চালু করতে হবে। এবং সম্ভাবনাময় শিল্পখাত সৃষ্টি করতে হবে। শিল্পক্ষেত্রে বেসরকারী উদ্যোগকেও স্বাগত জানাতে হবে।
১৫। সরকারী মালিকানাধীন কিছু প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।
১৬। ঋণ নেওয়া বেসরকারী কারখানা কোন মতেই বন্ধ করা চলবে না। যদি কোন কারণে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সরকারের নিকট তা হস্তান্তর করতে হবে।
১৭। ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। কোন ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল করতে দেয়া যাবে না। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
১৮। ৭১ এর ঘাতক দালাল দের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে। এবং গণ আদালতের রায় কার্যকর করতে হবে।
১৯। গণতন্ত্র কে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।
২০। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
২১। বিশেষ ক্ষমতা আইন (Special Power Act) বাতিল করতে হবে।
২২। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক দলাদলি করতে দেয়া যাবে না।
২৩। সংসদ নির্বাচন দল ভিত্তিক ভোটাভুটির মাধ্যমে হতে হবে। কোন ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হবে না। যে দল বেশী ভোট পাবে সে দল জয়ী হবে। পরে দল তার সদস্যদের মনোনীত করবে। প্রয়োজনীয় স্থানে সংবিধানের সংশোধনী করে নিতে হবে। এতে করে কোন ব্যক্তি প্রার্থী না হওয়াতে কোন ব্যাক্তির অর্থ খরচ হবে না। যার ফলে দূর্ণীতি কমে আসবে। সারাদেশের মানুষ দলের প্রতিকে ভোট দিবে। নির্বাচনে কালো টাকার ছরাছরি না থাকলে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে। আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচনের ফলে যোগ্য ব্যক্তির সংখ্যা বারবে। পৃথিবীর অনেক দেশে এ রকম ব্যাব চালু আছে।
২৪। বেতার ও বিটিভিকে স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে হবে।
২৫। যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল স্থানে বিশেষ করে নদীর উপর সেতু নির্মাণ করতে হবে।
২৬। ঢাকার যানযট নিরসনের জন্য প্রধান সড়ক সমুহে দ্বিতল রাস্থা তৈরী করতে হবে। দোতালা বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে চাহিদা অনুযায়ী।
২৭। রাজধানীতে ট্রাম গাড়ী চলাচলের ব্যাবস্থা করতে হবে। মেট্রোরেলের ব্যাবস্থা নিতে হবে।
২৮। মাটির নীচ দিয়ে চলার উপযোগী মেট্রো রেলের সম্ভাব্যতা যাচাই করে বিশ্ব ব্যাংক, আই এম এফ, এবং এ ডি বি সহ উন্নত দেশের কাছ থেকে শর্তহীন ঋণ নেওয়া যেতে পারে।
২৯। অযথা রাস্তা খোড়াখুড়ি বন্ধ করতে হবে। যে সমস্ত সংস্থা এই রাস্তা খোড়াখুড়ি করবে তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে বৎসরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে আগে থেকে ঘোষনা দিয়ে পরে রাস্তা কাঁটা হবে।
৩০। পুরাতন জেলা এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে বেশী ঐ সমস্ত জেলাকে বিভাগে উন্নীত করতে হবে। যেমন-বগুড়া, কুমিল্লা ইত্যাদি।
৩১। রাজধানীর উপর থেকে মানুষের চাপ কমানোর জন্য রাজধানীর আশপাশে উপশহর গড়ে তুলতে হবে। সেই সমস্ত উপ শহরে প্রচুর পরিমানের ফ্লাট নির্মাণ করতে হবে। নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য কম টাকায় ঐ সমস্ত ফ্লাট বিলি করতে হবে। বিশেষ করে গড়ে ওঠ্বা বিভিন্ন বস্তি সমুহকে সরানোর পর তাদের আয় সংগতি অনুযায়ী ঐ সমস্ত ফ্লাট বিলি করতে হবে।
৩২। সন্ত্রাস দমনের জন্য শুধু আইন করলেই হবে না তার যথাযথ বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। সন্ত্রাসী যাতে জামীন না পায় তার যথাযথ ব্যাবস্থা করতে হবে। সন্ত্রাসী ধরা মাত্রই তার শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে।
৩৩। দেশে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কেন্দ্র করতে হবে। ভিক্ষা বৃত্তি চিরতরে বন্ধ করার জন্য ভিক্ষুকদেরকে ঐসমস্ত কেন্দ্রে নিয়ে কুটির শিল্পসহ নানাবিধ কাজে লাগাতে হবে। প্রতিটি জেলায় এই কেন্দ্র চালু করতে হবে।
৩৪। বাজার ব্যাবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রনে থাকতে হবে। কোন অবস্থাতেই পণ্যমূল্য বাড়তে দেয়া যাবে না। বাজার মূল্য অনুযায়ী সরকারী ও বেসরকারী বেতন নির্ধারীত হবে। জনগণের গড় আয় অনুযায়ী বাজার মূল্য নির্ধারীত হবে।
৩৫। ঘুষ, দূর্নীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। তার জন্য উপযুক্ত শাস্তির বিধান করতে হবে।
৩৬। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল দেশের সাথে বন্ধুত্ব হবে বৈরী মনোভাব নয়। তবে ইসরাইল বেতিরেকে।
৩৭। মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদ এর খবরদারী ও এর চাপের কাছে নতী স্বীকার করা যাবে না।
৩৮। সকল দেশের সহযোগীতা নেয়া হবে। ঋণ বা সাহায্য যাই পাওয়া যাক না কেন তা জনগণের কল্যাণের জন্য ব্যয় হতে হবে।
৩৯। প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। অপ্রয়োজনীয় খাত চিহ্নিত করে সেখান থেকে অর্থ বরাদ্ধ প্রত্যাহার করতে হবে। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণূ খাতে সেই অর্থ ব্যয় করতে হবে।
৪০। সর্ব ক্ষেত্রে পুরুষের ও নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে নারীর সমান অধিকার থাকবে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষক ও ফতোয়াবাজ এর শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪১। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরন (De Centralized) করতে হবে। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। বুলেট নয় ব্যালটই ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পদ্ধতি। এই নীতি সর্বদা প্রযোজ্য হবে।
৪২। জনগণের মধ্যে ক্ষমতার শেয়ার ছড়িয়ে দিতে হবে। তৃণমুল পর্যন্ত ক্ষমতার শেয়ার দিতে হবে। তৃণমুল থেকে নেতৃত্ব বের করে নিয়ে আসতে হবে।
৪৩। আইন সকলের জন্য সমান। দরিদ্র দের জন্য বিনা খরচে আইনি সহায়তা দিতে হবে।
৪৪। সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অবশ্যই এস এস সি হতে হবে। দেশের প্রধান যিনি হবেন রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককেই নূন্যতম এস এস সি ডিগ্রীধারী হতে হবে।
৪৫। দেশের যে কোন নাগরিকের ১০০ কোটি টাকার বেশী সম্পদ থাকতে পারবে না। এর বেশী সম্পদ রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে নিতে হবে।
৪৬। ব্যক্তিগত মালিকানায় কলকারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান থাকবে, তবে ১০০ কোটি টাকার বেশী হলে বাকি অর্থ বা সম্পদ সরকারের মালিকানার শেয়ার করতে হবে।
৪৭। শুধুমাত্র রাজধানীতে ব্যক্তি মালিকানাধীন কোন স্থাবর সম্পদ থাকতে পারবে না। সরকারী মালিকানাধীন বাড়ীতে থাকবে নাগরীকগণ। তাদের জন্য স্বল্প মুল্যে ভাড়ার ব্যাবস্থা করতে হবে। শুধুমাত্র রাজধানীতে এটি করতে হবে।পৃথিবীর অনেক দেশে এরকম ব্যব¯’া চালু আছে।
৪৮। ঐতিহাসিক এলাকাসমুহকে পর্যটনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। কক্সবাজার সিবিচকে আন্তর্জাতিক মানের সিবিচ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। এবং সুন্দরবনকে ঢেলে সাজাতে হবে। কোন বন খেকোকে দায়িত্ব দেয়া চলবে না। কক্সবাজার এবং সুন্দরবনকে উপভোগ করার জন্য দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
৪৯। উপজাতীয় অঞ্চল সমুহকে স্বায়ত্তশাষিত এলাকা হিসাবে ঘোষনা করতে হবে। প্রয়োজনে সংবিধানের পরিবর্তন করতে হবে।
৫০। সংবিধানের মুলনীতি হবে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বিশ্ব মানবতার অর্থে আন্তর্জাতিকতাবাদ এবং সমাজতন্ত্র এই চারটি মুলনীতি হবে বাংলাদেশের সংবিধানে। প্রয়োজনে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে।
৫১। ফারাক্কা চুক্তি স্থায়ী ভাবে করতে হবে। যাতে করে এর প্রয়োজনীয়তা বার বার দেখা না দেয়। তবে সে ক্ষেত্রে সমতা নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে হইবে।
৫২। সার্ককে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেইজন্য সার্কভুক্ত দেশসমুহকে নিয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে এই উপমহাদেশে সার্ক নিরাপত্তা সংস্থা গঠন করতে হবে।
৫৩। হরতাল, অবরোধ একেবারে নিষিদ্ধ করতে হবে। আগামি ২০বছরের জন্য। তবে ধর্মঘট, সমাবেশ ইত্যাদি করা যাইতে পারে।
৫৪। পতিতাদের উচ্ছেদ করা হবে না। তাদের পুনর্বাসন করা হইবে। সরকারী ভাবে পতিতাদের পতিতাবৃত্তি পেশাকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
৫৫। শিশু শ্রম বন্ধ করতে হবে। যে সকল শিশু বাধ্য হইয়া শ্রম করে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। বিশেষ করে পথশিশু বা টোকাইদের লেখাপড়া নিশ্চিত করতে হবে। গার্মেন্টস সহ সকল পর্যায়ে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। যে সকল শিশুদের থাকার জায়গা নাই তাদের জন্য হোষ্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে। বিনা খরচে থাকা ও পড়ালেখার নিশ্চয়তা দিতে হবে। ক্রমান্বয়ে তা প্রতি জেলায় করতে হবে।
৫৬। গার্মেন্টস শ্রমিকদের থাকার জন্য আবাসিক হোস্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে। সে জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাইতে পারে।
৫৭। বাংলা ভাষায় ধর্ম চর্চা করার প্রচলন করতে হবে। যেমন আযান দেয়া বাংলা ভাষায়, নামায পড়া বাংলা ভাষায়, মিল্দা মাহফিল সহ সকল কিছুই বাংলা ভাষায় করতে হবে। ফলে ধর্মিয় শিক্ষা পাবে জনগণ। ধর্মিয় কুসংস্কার, গোড়ামী থাকবে না। এখানে ভুল বুঝার অবকাশ নাই। পৃথিবীর অনেক দেশে নিজেদের ভাষায় ধর্ম চর্চা করেন। ফলে ধর্ম চর্চা করার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়ে যাবে।
৫৮। আইটি সেক্টরে (Information Technology) ব্যাপক উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে কম্পিউটার শিল্পকে সাধারণের নিকট নিয়ে যেতে হবে। প্রতি জেলায় আইটি পার্ক স্থাপন করতে হবে। যেখান থেকে মেধাবী আইটি প্রফেশনাল তৈরী হবে। সফট্ওয়ার রপ্তানীতে ব্যাপক সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগ নিতে হবে।
৫৯। পল্লি রেশনিং চালু করতে হবে।
৬০। শস্য বীমা চালু করতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক।