ব্যাংকে নিজ ডেস্কে কাজ করছিলেন গহর জাহান (৪৩)। অসুস্থ বোধ করায় একবার পানি পান করেন। একটু পর আবার পানির গ্লাস মুখে নিতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।গত ২৫ আগস্ট সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরার জসীম উদদীন রোড শাখায় প্রাইম ব্যাংকের শাখায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ব্যাংকের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মনিরুজ্জামান টিপু।গহর জাহান ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মনিরুজ্জামান টিপু বলেন, ‘এ ঘটনায় পুরো প্রাইম ব্যাংক পরিবার শোকাহত।’প্রাইম ব্যাংকের ক্লোজ সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে গহর জাহানের কাজ করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার ঘটনা ধরা পড়ে। এরপর ওই দৃশ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। পরে তা ভাইরাল হয়ে যায় মুহূর্তে।সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত সোমবার দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে গহর জাহান তাঁর ডেস্কে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এর দুই মিনিট আগে ১২টা ৩৩ মিনিটে তাঁর ডেস্কে এক নারী আসেন। ওই নারীর একটি কাগজ নেড়েচেড়ে দেখছিলেন গহর জাহান। সে সময় গহর জাহানকে কয়েক বার মুখে-কপালে হাত দিতে দেখা যায়। ১২টা ৩৪ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে তিনি একবার পানি পান করেন। এর ঠিক ১৮ সেকেন্ড পর, অর্থাৎ ঠিক ১২টা ৩৫ মিনিটে তিনি পানির গ্লাস মুখে নিয়েই ডেস্কের ওপর নুইয়ে পড়েন।নুইয়ে পড়ার পর ডেস্কের সামনে চেয়ারে বসে থাকা ওই নারী প্রথমে এগিয়ে যান গহর জাহানের দিকে। তারপর একে একে সহকর্মীরা এগিয়ে আসেন। তখন এক সহকর্মী তাঁকে চেয়ারে বসানোর চেষ্টা করলে তিনি নিচে পড়ে যান। নিচে শুইয়ে রেখেই তাঁকে সেবা দেন সহকর্মীরা। ঘটনার ১২ মিনিট পর সহকর্মীরা তাঁকে সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যান।প্রাইম ব্যাংকের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মনিরুজ্জামান টিপু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গহর জাহান নিজ ডেস্কেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। এভাবে একজন মানুষ মরতে পারেন, এটা ভাবা যায় না। মনিরুজ্জামান টিপু আরো বলেন, ‘চাকরিজীবনের শুরুতে গহর জাহান রাজশাহীর বিভিন্ন শাখা অফিসে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসেও তিনি শাখা অফিসগুলোতে কর্মরত ছিলেন। গহর জাহানের গ্রামের বাড়িও রাজশাহী শহরের মহিষবাথান এলাকায়। তিনি তাঁর বড় ভাইয়ের বাসায় থাকতেন বলে আমরা জেনেছি। ঘটনার দিনই তাঁকে রাজশাহীতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই তাঁর লাশ দাফন করা হয়।