পাঁচবিবি উপজেলার শিক্ষার্থী বহুল বড়মানিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ফেসিলিটিজ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক নিমিত তিন কক্ষ বিশিষ্ট একমাত্র পাকা ভবনটির ছাঁদ সংস্কার অভাবে খসে পড়ছে। প্রয়োজনীয় শ্রেণি কক্ষ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই ক্লাস করছে। টিনসেডের ৭টি কক্ষ থাকলেও সেগুলির জড়াজীর্ন অবস্থা। সামান্য বৃষ্টি হলেই ভাঙ্গা টিনের ফুটো দিয়ে ঘরের ভিতরে পানি পরে। ছাত্র-ছাত্রীদের বই খাতাপত্র ভিজে যায়। ফলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও পাঠদান বন্ধ রাখতে হয় বৃষ্টির সময়।
উপজেলার শহরতলীর ছোট যমুনা নদীরতীরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর আন্ত-উপজেলা সড়কের পার্শ্বে অবস্থিত এই বড়মানিকা উচ্চ বিদ্যালয়। সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা ও মনোরম পরিবেশের কারণে বিদ্যালয়টিতে সবসময় ছাত্র-ছাত্রী ভরপুর থাকে। প্রতি বছর দেড় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী জে,এস,সি ও এস,এস,সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, ইর্ষনীয় ফলাফল অর্জন করে। ৭শ/৮শ মিটারের মধ্যেই অবস্থিত সরকারি ২টি বালক ও বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রভাব থাকলেও বিদ্যালয়টি স্বমহিমার উজুল। স্কাউটিং, খেলাধুলা ও সহপাঠ্যক্রমে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আধিপত্য সবসময় লক্ষনীয়।
গত সপ্তাহে সরজমিন গিয়ে দেখা যায় অত্র বিদ্যালয়ের গাছতলায় ছাত্র-ছাত্রীরা বসে বিতর্ক প্রতিযোগীতা করছে। গাছতলায় কেন এসব প্রশ্ন করলে প্রধান শিক্ষক আয়নুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় শ্রেণি কক্ষের অভাব, উপরক্ত হলরুম না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা সহপাঠ্যক্রম বিষয়গুলি বাইরেই করে থাকে। তিনি আরও জানান ১৯৯৫ সালে ৩ কক্ষ বিশিষ্ট ১টি ভবন ছাড়া (যা বর্তমান পরিত্যাক্ত হওয়ার পথে) সরকারি কোন ভবন বা কক্ষ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। সংস্কার অভাবে এই ভচনের ৩টি কক্ষই ড্যামেজ হয়েছে। ছাদের প্লাস্তার চাবলা খুলে পড়ছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকায় সবায় ভীত থাকে। এমতাবস্থায় শ্রেনি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে এ ভবনে।
স্থানীয় উদ্দোগে তাৎক্ষনিক প্রয়োজন মিটানোর জন্য টিন সেডের ৭টি রুম তৈরি করা হলেও এখন সেগুলির অবস্থা শোচনীয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই টিনের ফুটো দিয়ে ঘরের ভিতর পানি পড়ে। ছাত্র-ছাত্রীদের বই খাতাপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যায় বছরে কয়েকবার। ফলে বৃষ্টির সময় অধিকাংশ দিন শ্রেনি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়।
বিদ্যালয়েল সভাপতি রায়হান মনু জানান, ৯৫-এর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও উদ্বাস্ত শিবির দেখার জন্য এই বিদ্যালয়ে এসেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর ব্যাপকতা ও শৃংখলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন পাশাপাশি বিদ্যালয় ভবনের দৈন্যদশা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। প্রস্তানকালে তিনি বলেছিলেন “আমরা যদি কোনদিন ক্ষমতায় আসি, এই বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করব ইনশাআল্লাহ”। বর্তমান সরকারের শিক্ষাবান্ধব নীতির কারণে অত্র এলাকার সকল বিদ্যালয়ে ফেসিলিটিজ ও সেসিপ এর বহুতল ভবন নির্মান, প্রায় সমাপ্তীর পথে, শুধুমাত্র বড়মানিকা উচ্চবিদ্যালয় ছাড়া। চলতি বছর নতুন ভবন অথবা শ্রেণিকক্ষ নির্মান করতে না পারলে ২০২০ সালের সেসনে নতুন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি ক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট মহল।