বড়াইগ্রামে মহাসড়কে ফেলে ৩৫ হাজার একশ’ ডিম নষ্ট করার ঘটনায় মালিককে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারী করেছে হাইকোর্ট। এছাড়া আদালত ডিমের মালিকের দায়ের করা লিখিত অভিযোগটি ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।
রীটে স্বরাষ্ট্র সচিব, হাইওয়ে বগুড়া অঞ্চলের পুলিশ সুপার, বড়াইগ্রামের বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আলিম হোসেন সিকদার, এটিএসআই বিজয় কুমার সরকার, কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম, সোহেল রানা, শামীম রেজা, মো.নাঈম ও মো. ফারুককে প্রতিপক্ষ করা হয়েছে। ডিমের মালিক শ্রী বিপ্লব কুমার সাহার দায়ের করা রীটের শুনানী শেষে বৃহষ্পতিবার বিকালে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এই আদেশ দেন।
রীট আবেদনকারীর আইনজীবী মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল এলাকার শ্রী বিপ্লব কুমার সাহা সংবিধানের ১০২ ধারা বলে হাইকোর্টে রীট আবেদন করেন। শুনানীতে তিনি জানান, গত ১৬ মে বিপ্লব সাহা ৩৫ হাজার ১০০টি ডিম নিয়ে বনপাড়া-হাটিকুমরুল সড়ক দিয়ে বনপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে ডিম বহনকারী পিকআপটি দুর্ঘটনাক্রমে সড়ক থেকে কিছুটা নেমে যায়। এ সময় তিনি বনপাড়া হাইওয়ে থানার টহল পুলিশের সহযোগীতা চান। টহল পুলিশ এর জন্য মোটা অঙ্কের উৎকোচ দাবী করেন। পিকআপের চালক দাবিকৃত উৎকোচ দিতে অপারগতা জানালে ওই পুলিশ সদস্যরা পিক-আপে ডিম বাধার রশি কেটে দেন। এতে গাড়িতে থাকা ৩৫ হাজার ১০০ ডিম নষ্ট হয়ে যায় এবং পিকআপের ক্ষতি হয়। পরদিন এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বিপ্লব সাহা হাইওয়ের বগুড়া অঞ্চলের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত দরখাস্ত দেন। কিন্তু তিনি আবেদনের কোনো ব্যবস্থা নেননি। বাধ্য হয়ে তিনি হাইকোর্টে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রীট দায়ের করেন।
শুনানী শেষে আদালত সকল প্রতিপক্ষকে কেন ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ দেয়া হবে না সেই মর্মে রুল দেন। একইসাথে ১ও ২ নম্বর প্রতিপক্ষকে ৩ থেকে ৯ নম্বর প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য কেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে বলবেন না তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া আগামী ৩০ দিনের মধ্যে হাইওয়ে বগুড়া অঞ্চলের পুলিশ সুপারকে ডিমের মালিকের দেয়া দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ব্যাপারে পরদিন বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ওসিসহ সাতজন পুলিশকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়।