নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌরসভার লক্ষীকোল বাজারে সরকারী জমি দখল করে ব্যক্তিগত তিনটি দোকান নির্মাণ করছেন স্থানীয় কাউন্সিলর আবদুস সামাদ সরকার। আবদুস সামাদ সরকার বড়াইগ্রাাম পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর।
বড়াইগ্রাম পৌর ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, কাউন্সিলরের দখলকৃত জমিটি সিএ খতিয়ানে জমিদারের এবং এসএস ও আরএস খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের নামে এক নম্বর খাস খতিয়ান ভুক্ত। লক্ষীকোল হাটের পেরিফেরি ও সায়রাত ভুক্ত লক্ষীকোল মৌজার জমিটির শ্রেণী- দোকান, এসএ দাগ নম্বর ২০১ এবং আরএস দাগ নম্বর ৩৯৯, পরিমান দুই শতাংশ।
পৌর ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, লক্ষীকোল বাজারের পেরিফেরি ও সায়রাত ভুক্ত জমিতে সম্প্রতি কাউন্সিলর আবদুস সামাদ টিন দিয়ে ঘিরে নিজ দখলে নিয়ে নেন। এরপর গত শুক্রবার রাত থেকে সেখানে ইটদিয়ে দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এদিকে টিন দিয়ে ঘেরার পরই ইউএনও’র পক্ষ থেকে জমিটি উন্মুক্ত করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু কাউন্সিলর আবদুস সামাদ জমি খালি না করে উল্টো পাকা স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি ১২টি ইটের গাঁথনি করে ফেলেছেন। জমিটির কাগজপত্র দেখতে গিয়ে দেখা গেছে আবদুস সামাদ সরকার ১৯৯৩ সালে নাটোর আদালতে একটি মামলা (মামলা নম্বর-১৫২) করে হেরে গেছেন। এরপর তিনি ১৯৯৯ আবার একটি সানি মামলা (মামলা নম্বর-৫৪) করেছেন। তিনি বলেন, এসএ আরএস সরকারী হলে সেই জমি ব্যক্তি মালিকানা হওয়ার সুযোগ নাই। সকল বিষয় ইউএনও স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। তিনিই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, লক্ষীকোল মাছবাজার সংলগ্ন জমিটি দখল করে দোকান নির্মাণ করা হলে মাছ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার চলাফেরা মুসকিল হয়ে যাবে। কাউন্সিলরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেই প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। সরকারী ভাবে এটা নির্মাণ বন্ধ না হলে জনগনকে চরম ভুগতে হবে।
কাউন্সিলর আবদুস সামাদ সরকার বলেন, জমিটি আমার দালিলিক সম্পত্তি। এটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এসএ, আরএস খতিয়ানে খাস জমির মালিকানা কেমন করে হলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি নিশ্চুপ থাকেন। আবার ইউএনও’র নির্দেশ উপেক্ষা করে পাঁকা স্থাপনা কেন নির্মাণ করছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কাজ বন্ধ আছে তবে কেউ যদি ইটের কাজ করে তবে তা আমার জানা নাই।
এ বিষয়ে কথা বলতে বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র আবদুল বারেক সরদারের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ বলেন, কাউন্সিলরকে টিন দিয়ে ঘেরা তুলে নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে শুনলাম সেখানে পাঁকা স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।