দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাতান ক্ষমতা ১৯ হাজার মেগাওয়াট। যেখানে দৈনিক সর্বোচ্চ চাহিদা সাড়ে ১২ মেগাওয়াট। চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হওয়ার পরও নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে এসবের অনুমোদন দেওয়া প্রশ্নবিদ্ধ।
এদিকে, উৎপাদন বেশি থাকলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ বিতরণে ঘাটতির অভিযোগ পাওয়া যায়। এর মূল কারণ হলো সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি। গাজীপুরে এক বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের উদ্বোধনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও এই কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এখন বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। তবে লাইনগুলো খুব দুর্বল, তাই লোড নিতে পারে না। আগে এই লাইন থেকে ৫০টি বাড়িতে বিদ্যুৎ যেতো। এখন দেড়শ বাড়িতে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়, তাই লোড নিতে না পেরে মধ্যে মধ্যে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনের সক্ষমতা না থাকায় গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে প্রায় সময়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানি। এরই মধ্যে নীলফামারীর ডিমলায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অগ্নিকা-ে তিন পরিবারের ১০টি বসতঘর, আসবাবপত্র ও নগদ অর্থ পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো দাবি করেছে। দেশের বিভন্ন জায়গায় এমন ঘটনা অহরই ঘটছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ মানুষ। এছাড়া সামান্য ঝড়-বাতাসে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিঘিœত হচ্ছে সেবা।
রাজধানীতে তারের জঞ্জালের কথা আমরা সবাই জানি। প্রায় সময়ই এসব তারের করণে ঘটছে দুর্ঘটনা। বৃষ্টি হলে এসব তার পানিতে পড়ে, সেখানে বিদ্যুতয়িত হয়ে পথচাররীর মৃত্যু হয়। কিছুদিন আগেও একজন চিকিৎসক বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইলেন ত্রুটির শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষের উচিৎ অপ্রয়োজনীয় নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন না করে বিদ্যমান বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনগুলো আরও উন্নতকরণ করা; যাতে লোড নিতে পারে, সামান্য ঝড়-তুফানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে না যায়। চিন্তা করতে হবে কিভাবে লাইনগুলো আরও উন্নত করা যায় এবং নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।