আজ ৬ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কৃতিসন্তান বাংলার চলচিত্রের মধ্যগগনের নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ২৩ বছর পূর্তি হলো। তিনি বাংলা সিনেমার একসময়কার তুমুল সুপারহিট নায়ক ছিলেন। জনপ্রিয়তায় তাঁর কোনো জুড়ি ছিলনা। বড়ই পরিতাপের বিষয়, যে নায়কের জনপ্রিয়তা আকামচুম্বি ছিল, সেই অমর নায়কের ‘মৃত্যু’ আজও প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছিলেন, নাকি তাঁকে ‘হত্যা’ করা হয়েছিল ২৩ বছরেও এ প্রশ্ন অমীমাংসিত। চার দফা তদন্তেও এ প্রশ্নের সর্বজনগ্রাহ্য উত্তর আসেনি। অবশেষে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তদন্তভার দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
নতুন তদন্তকারীরা নেমেছেন টুকরো টুকরো আলামত, ইশারা মিলিয়ে ২০ বছর আগের মৃত্যুমুহূর্তটি পুনর্র্নিমাণের কাজে। তাঁরা স্বীকার করছেন, অত্যন্ত কঠিন হবে এ কাজ। কেননা গত ২০ বছরে অনেক আলামতই আর অবিকৃত নেই। অনেকেরই স্বাক্ষ্য পাওয়া যাবে না। সিনেমার জগতে সালমান শাহ নামে পরিচিত হলেও নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেতার পুরো নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, র্যাব একে একে মামলাটির তদন্ত করে। মাঝখানে ১৫ বছর ধরে চলেছে বিচার বিভাগীয় তদন্তও। সবকটি তদন্ত প্রতিবেদনেই ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে পরিবারের নারাজির মুখে তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন হয়েছে।
মৃত্যু-অপমৃত্যু মামলা :
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় ভাড়া বাসায় মিলে সালমান শাহর লাশ। ওই সময় বাংলা সিনেমায় তাঁর জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি মধ্যগগনে। স্ত্রী সামিরা হক পুলিশকে জানান, সকালবেলা ড্রেসিংরুমে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁরা সালমানের নিথর দেহটি নামান।
সালমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সালমান শাহর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। ২০০২ সালে মারা যান সালমান শাহর বাবা।
অপমৃত্যুর ওই মামলায় বলা হয়, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গ্রীনরোডের নিজ বাসা থেকে ইস্কাটনে ভাড়া বাসায় সালমানের সঙ্গে দেখা করতে আসেন কমর উদ্দিন। সালমান শাহর ব্যক্তিগত সহকারী আবুল ও তাঁর স্ত্রী সামিরা তাঁকে বলেন, ‘সালমান শাহ রাত জেগে কাজ করেছে। এখন তাঁকে ঘুম থেকে ডাকা যাবে না।’ তিনি প্রায় ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে বাসায় ফিরেন। বেলা সাড়ে ১১টায় সেলিম নামের একজন ফোনে জানান, সালমানের কী যেনো হয়েছে। সালমানের বাবা, মা ও ভাই ওই ফ্ল্যাটে ছুটে যান। ওইখানে শয়নকক্ষে সালমানের নিথর দেহ দেখতে পান তাঁরা।
সালমানের মা নীলা চৌধুরী গণমাধ্যমে জানান, সালমান শাহর মৃত্যুর দিনই অনেকটা পরিবারের অজান্তে সালমানের বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরীর স্বাক্ষর নিয়ে রমনা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে পুলিশ। ওই মামলার তদন্ত চলাকালে ১৯৯৭ সালে রিজভি আহমেদ নামের একজন অন্য এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে জবানবন্দিতে স্বীকার করেন, সালমানকে হত্যা করে আত্মহত্যার ঘটনা সাজানো হয়েছে এবং তিনি নিজেও ওই হত্যাকা-ে জড়িত ছিলেন। সালমানের বাবা কয়েকজনের নামোল্লেখে আদালতে নালিশি হত্যা মামলা করেন। আদালত দুটি অভিযোগ একসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন।
গাফিলতি ছিল তদন্তে?
তদন্ত প্রতিবেদনগুলো ঘেঁটে দেখা যায়, ঘটনাস্থলের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত এমন কয়েকজন যেমন, সালমানের বাসার গৃহকর্মী মনোয়ারা ও ডলি, সহকারী আবুল হোসেন খান, ফ্ল্যাটের নিরাপত্তারক্ষী আবদুল খালেক, ফ্ল্যাটের ব্যবস্থাপক নূরউদ্দিন জাহাঙ্গীর, লিফটম্যান আবদুস সালাম এবং ফ্ল্যাটের আশপাশের বাসিন্দাদের কারও জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়নি।
নীলা চৌধুরীর অভিযোগ, সেলিম নামে যে ব্যক্তি সালমান শাহর মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানিয়েছিলো, তারই জবানবন্দি নেওয়া হয়নি কোনো তদন্তে। মরদেহ সিলিং ফ্যান থেকে নামানোর প্রত্যক্ষদর্শী কারও জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। আর ১৫ বছর ধরে চলা বিচার বিভাগীয় তদন্তে কেবল সালমানের পরিবারের চার সদস্যের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ভালো করে তদন্ত না করেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সালমান শাহর মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত’। কিন্তু কী কারণে সালমানের আত্মহত্যা করেন তার ব্যাখ্যা নেই কোনো তদন্ত প্রতিবেদনে।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও অন্য সব স্বাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটা স্পষ্ট যে সালমান ‘আত্মহত্যা’ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর পরিবার বিষয়টি মেনে নিচ্ছে না। তাঁর পরিবারের দাবি, তদন্তে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে।
কিন্তু এ বিষয়ে মামলার তদন্ত তদারককারী কর্মকর্তা সিআইডির তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান খান গণমাধ্যমে জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছিল কি না তা তাঁর মনে নেই। তদন্ত একটা চলমান প্রক্রিয়া। পুনরায় তদন্ত দোষের কিছু দেখি না।
আসলে কখন মৃত্যু হয়েছে?
নীলা চৌধুরীর দাবি, কমরউদ্দিন ঘটনার দিন সালমানের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও তাঁকে দেখা করতে না দেওয়া অত্যন্ত সন্দেহজনক। চলচ্চিত্র পরিচালক বাদল খন্দকার গণমাধ্যমে জানান, যিনি ওইদিন সালমানের বাসায় গিয়েছিলেন। ছবির কাজের শিডিউল নিতে তিনি সকালে গেলে বাসার নিচে দারোয়ানেরা তখন বলাবলি করছিল, সালমান রাতেই ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন। এরপর সালমানের বাসায় গিয়ে তিনি দেখেন, ড্রেসিংরুমে সালমানের মৃতদেহ। সালমানের বাবা-মাকে এ খবর দেওয়া হয়নি জানতে পেরে তিনি সেলিম নামের চলচ্চিত্রের একজন প্রডাকশন ম্যানেজারকে সালমানের বাসায় খবর দিতে বলেন।
সালমানের তখনকার সহকারী আবুল হোসেন খান গণমাধ্যমে জানান, ঢাকার অদূরে নবাবগঞ্জে থাকেন আবুল। ওইদিন শুক্রবার বেলা ১১টায় ঘুম থেকে উঠে পানি ও চা পান করে ড্রেসিংরুমে ঢোকেন সালমান। পরে সালমান জুমার নামাজ পড়তে যাবেন কি না তা জানার জন্য ওই রুমের দরজায় টোকা দিয়ে আবুল হোসেন বুঝতে পারেন, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে সালমানের স্ত্রী সামিরা চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেখতে পান, সালমানের দেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। রশি কেটে তাঁর দেহ নামানো হয়।
সালমানের বাসার লিফটম্যান আবদুস সালামের সঙ্গেও ওই বাসার নিচে কথা হয়। সালাম গণমাধ্যমে জানান, ‘ইস্কাটন প্লাজার ওই বাসায় ২৯ বছর ধরে কাজ করছি। ঘটনার দিন সকালে শুনতে পারি, সালমান ভাই আত্মহত্যা করেছেন। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’
সুইসাইড নোটের লেখক কে?
সালমান শাহর বাসা থেকে পুলিশ একটি সুইসাইড নোট বা আত্মহত্যার চিঠি উদ্ধার করে। চিঠিতে লেখা আছে, ‘আমি চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার, পিতা-কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ১৪৬/৫, গ্রীনরোড, ঢাকা-১২১৫ ওরফে সালমান শাহ এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে আজ অথবা আজকের পরে যেকোনো দিন মৃত্যু হলে তার জন্য কেউ দায়ী থাকবে না। স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে আমি আত্মহত্যা করছি।’
এই চিঠিতে কারও স্বাক্ষর ছিল না। তবে সিআইডির হস্তবিশারদেরা পরীক্ষা করে বলেছেন, এটা সালমান শাহের হাতের লেখা।
কিন্তু সালমানের মা নীলা চৌধুরী এই চিঠি নিয়ে গুরুতর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। চিঠির ভাষার আনুষ্ঠানিক ভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তুলে নীলা চৌধুরীর দাবি, কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করার আগে এ রকম মামলা লেখার স্টাইলে এতো গুছিয়ে বাবার নাম, ঠিকানা উল্লেখ করে চিঠি লেখে বলে আমার জানা নেই। এখানেই আমার ঘোরতর সন্দেহ।’
কোথা এলো চেতনানাশক?
মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, সালমানের ফ্ল্যাট থেকে দুটি ছোট বোতলে (ভায়েল) ভরা তরল পাওয়া যায়। সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষক মুহাম্মদ আবদুল বাকী মিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বর্ণহীন তরলে ‘লিগনোকেইন হাইড্রোক্লোরাইড’ পাওয়া গেছে, চিকিৎসকেরা যেটি লোকাল অ্যানেসথেসিয়ার (স্থানীয় চেতনানাশক) কাজে ব্যবহার করেন।
সালমানের মৃত্যুর বিষয়ে তিনটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে কোনোটিতেই এই রাসায়নিকের ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।
এ বিষয়ে সিআইডির তখনকার পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান খান গণমাধ্যমে জানান, ‘মানুষ অজ্ঞান করার এই রাসায়নিক আলামত জব্দ করেছিল ডিবি পুলিশ। কে এটি সালমানের বাসায় নিয়ে আসে, তা বলতে পারব না।’
নীলা চৌধুরীর আইনজীবী মাহফুজ মিয়া ও ফারুক আহম্মেদ জানান, সালমানের বাসায় চেতনানাশকের উপস্থিতির রহস্য বের করা গেলে সালমানের মৃত্যৃর আসল রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।
সালমানের শশুর শফিকুল হক হীরার দাবি, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। ডিবি ও সিআইডি তদন্ত করে আদালতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও দিয়েছে। মৃত্যুর পর ওই বাসা ছিল সালমানের পরিবারের দখলে। তারাই এই অ্যানেসথেসিয়ার শিশি ওই বাসায় রেখে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে।’
মৃতদেহ ঝুলে থাকা ‘ফ্যান’ জব্দ হয়নি :
ইস্কাটন প্লাজার ১১ তলার এ নম্বর ফ্ল্যাটে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করতেন সালমান। ওই বাসার ড্রেসিংরুমে যে ফ্যানে ঝুলে মারা যান, সালমানের বাবা বারবার অনুরোধ করলেও ওই ফ্যানটি কোনো তদন্ত সংস্থাই জব্দ করেনি। ড্রেসিংরুমের তালা ও চাবিও জব্দ করেনি পুলিশ। তবে হালকা সবুজ রঙের ওই ফ্যানটি এখনো সংরক্ষণ করে রেখেছেন সালমানের মা নীলা চৌধুরী।
নাটকীয় মোড়ে তদন্ত :
সালমানের মৃত্যুর ১০ মাস পর তদন্ত এক নাটকীয় মোড় নেয়। সালমানের বাবা কমরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ১৯৯৭ সালের ১৯ জুলাই রিজভি আহমেদ নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে বাসায় অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ এনে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিজভি আহমেদ আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে দাবি করেন, সালমানকে খুন করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ওই হত্যার পেছনে আছেন সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, তাঁর শাশুড়ি লতিফা হক, চলচ্চিত্রের খল চরিত্রের অভিনেতা ও সালমানের বন্ধু আশরাফুল হক ওরফে ডন ও চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। এঁদের সঙ্গে হত্যাকা-ে রিজভি নিজেও ভাড়াটে খুনি হিসেবে যুক্ত হন। তদন্ত শেষে পুলিশ বলেছে, এই জবানবন্দিটি মিথ্যা, বাদীপক্ষের সাজানো।
পলাতক আসামি রিজভি লন্ডন থেকে মুঠোফোনে গণমাধ্যমে জানান, তাঁর জবানবন্দি পুরোটাই সাজিয়ে দিয়েছিলেন নীলা চৌধুরী। জবানবন্দিতে তিনি যাদের কথা বলেছিলেন, তাদের কাউকেই তিনি চেনেন না।
একটি আলোচিত মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত এভাবে দীর্ঘায়িত হওয়া এবং তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ ওঠা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক গণমাধ্যমে জানান, তদন্তে যদি প্রচুর অসংগতি থাকে এবং মৃত্যুর কারণ রহস্যাবৃত হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করা। আর এটাও সত্য যে সন্দেহাতীতভাবে যদি আত্মহত্যা প্রমাণিত হয় সেক্ষেত্রে অধিকতর তদন্ত খুব বেশি যৌক্তিক হতে পারেনা। (তথ্যসূত্র : প্রথম আলো- ১৪.০১.২০১৭)
সালমানের কী ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ হয়েছিল? নাকি ‘আত্মহত্যা’ কিংবা ‘হত্যা’ করা হয়েছিল? এমন নানাবিধ অমীমাংসিত প্রশ্নের জবাব না মিললেও সালমানকে ঘিয়ে নবাগত লেখিকা নূপুর সরকার এর ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শিরোনামে কবিতাটি সালমান ভক্তদের প্রতিনিয়ত ভাবিয়ে তুলে। নূপুর সরকার লিখেছেন-
যদি সব কথা হারিয়ে যায়/সব কিছু বলার ইচ্ছে ফরিয়ে যায়/যদি চোখের ভাষা দূরূহ হয়ে আসে/তবে নিস্তব্ধতাকে আঁকড়ে ধরে/হাজারো অনুভূতির কথোপকথন নিও চালিয়ে। যদি ছুঁয়ে দেয়া বারন করা হয়/আঙুলের ফাঁকে ছুঁয়ে দেয়ার ইচ্ছেরা
অভিমানে যদি মরে মরে যায়...
যদি একবার ছুঁবে বলে সহ¯্র বছর ধরে/অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়/তবে অকারণে ছুঁয়ে দিয়ে, ভুলটুকু মেনে নিয়ে/চুপ করে যেও হারিয়ে। এবার তোমার বিদায়/কী নিবে আর, কি আছে নেওয়ার?
ঠোঁটের মিশির, চোখের গভীর/বুকের জমিন, স্বপ্নের উধোন/উষ্ণ শরীর, নিশি হতে ভোর/গাঙচিল ছায়া, হিজল মায়া/সবই নিয়েছো, বলো কি আর চাই?
স্মৃতিগুলো আঁকড়ে জানাই/এবার তোমার বিদায়। সবটুকু মায়া পেছনে ফেলে/এক আকাশ অভিমানের বোঝা বুকে চাপিয়ে/চুপ করে তবে যেও হারিয়ে।