উন্নত বিশ্বে চিকিৎসকের নির্দেশনাপত্র ছাড়া ওষুধই কেনা যায় না। বিক্রেতা রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য সামান্যতম ঝুঁকির কারণও হতে চাইবেন না। অনুমতি ছাড়া কেউ ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্রও স্থাপন করতে পারে না। আমাদের দেশে ঔষধ প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা চরমে। অনুমোদনপ্রাপ্ত ডিসপেনসারির চেয়ে অনেক গুণ বেশি হবে অবৈধ বিক্রয় কেন্দ্র। এমন ওষুধও প্রেসক্রিপশন ছাড়া কেনা যায়, যেগুলোর ব্যবহারে অতি সাবধান না থাকলে বড় মাত্রার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তার চেয়েও ভয়ংকর হচ্ছে, এখানে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের ছড়াছড়ি এবং নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অবস্থান কঠোর নয়। সম্প্রতি শীর্ষ স্থানীয় একটি জাতীয় দৈনিকের মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে হাত বাড়ালেই মেলে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল। বিশেষজ্ঞরা এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, ভেজাল ওষুধে প্রাণহানির ঘটনা ঠেকাতে অবশ্যই ঔষধ প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। ওষুধ উৎপাদনে দেশ এগিয়ে গেলেও এই সাফল্য দেশের মানুষ ঠিকভাবে পাচ্ছে না অসাধু কোম্পানি গুলোর কারণে। অনেক কোম্পানি যখন আর দশটা পণ্যের মতো ওষুধকেও মুনাফার উপায় হিসেবে দেখছে, যত ইচ্ছা দাম নির্ধারণ করছে, তাদের মদদ জোগাচ্ছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরেরই কেউ কেউ। চিকিৎসকরাও বলছেন, মানহীন অনেক কোম্পানি আছে, যাদের ওষুধ শরীরে কাজ করে না, তখন রোগী উল্টো ডাক্তারকে দোষে। রোগ থেকে বাঁচাবে ওষুধ, সেই ওষুধই অনেক সময় প্রাণঘাতী হচ্ছে। ওষুধ ব্যবসার নামে যারা মানুষকে পণ্য করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের ক্ষেত্রেও আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। বিষাক্ত প্যারাসিটামলে ২৮টি শিশুহত্যার অভিযোগ থেকে রিড ফার্মার সব আসামি খালাস পেয়ে গেছেন ওষুধ প্রশাসনেরই একজন কর্মকর্তার গাফিলতিতে। সেই গাফিলতি যে উদ্দেশ্যমূলক ছিল না তা আমরা নিশ্চিত হই কী করে! স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির একাধিক সূত্র বলেছে, ওষুধ কোম্পানি গুলোর চেয়েও বেশি সমস্যা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে; তারা এক শ্রেণির ওষুধ কোম্পানিকে নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুতে প্রশ্রয় দিচ্ছে। ঔষধ প্রশাসন নিম্নমানের ওষুধ তৈরিকারক কোম্পানি গুলোকে লাল কালিতে চিহ্নিত করেই দায়িত্ব শেষ করছে। অধিদপ্তরের লাইসেন্সের লাল তালিকা ধরে দেখা যায়, নবায়ন ছাড়াই অনেক কোম্পানি উৎপাদন, বিপণন সবই চালাচ্ছে। ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কোন কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী এ প্রতিষ্ঠান গুলোকে মদদ জোগান তাঁদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বেশ কিছুদিন আগে সংসদীয় কমিটি এ বিষয়ে তাগিদ দিলেও ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো খবর নেই। কেন, কার স্বার্থে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের এই শিথিলতা? মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারো নেই। ওষুধের নামে যারা বিষ প্রস্তুতকারী ও তাদের মদদদাতাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
দেশের ওষুধের বাজারে দাম নিয়ে চলছে নৈরাজ্য। ওষুধের বাজার দিন দিন ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে। কৃত্রিম সংকট দেখা দিচ্ছে জীবন রক্ষাকারী নিত্য প্রয়োজনীয় ও জরুরি ওষুধের। ‘সরবরাহ’ না থাকার অজুহাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ বা তিনগুণ দামে। অভিযোগ রয়েছে- এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। ওষধ প্রশাসন কিংবা সরকার এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ ওঠেছে। কোম্পানি গুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়িয়ে যাচ্ছে জরুরি ওষুধ গুলোর দাম। যার ফলে সাধারণ রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। অনেক গরীব মানুষ ঔষধের অতিরিক্ত দামের কারণে ঠিকমত চিকিৎসা করাচ্ছেন না। ফলে সাধারণ রোগ গুলোও অনেক সময় জটিল রূপ ধারণ করছে। এমনকি সরকারি হাসপাতালের সামনে একটি ন্যায্য মূলের ঔষধের দোকান থাকলেও সেখানে চলে মূল্য নৈরাজ্য। দোকানের উপরে ১৬.৫১% কমিশন লেখা থাকলেও তা শুধু লেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খুচরা মুল্যে ঔষধ বিক্রি করছে। ক্ষেত্র বিশেষ খুচরা মুল্যের চেয়ে বেশী দামে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। চেতনানাশক লিগনোকেইন গ্রুপের জেসোকেইন জেলি নামে একটি ওষুধের দাম গত এক বছরে চার দফায় বাড়ানো হয়েছে। জেসন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির এই ওষুধটির দাম ৬০ টাকা থেকে এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকা। এ ছাড়া একই কোম্পানির পভিসেভ সলুশন ৬০ থেকে ১০০ টাকা, পভিসেভ ক্রিম ৩০ থেকে ৫০ টাকা, জেসোকেইন ইনজেকশন ২% ২০ থেকে ২৮ টাকা এবং জেসোকেইন ইনজেকশন ২% এ ২৮ থেকে ৩৮ টাকা করা হয়েছে। গত এক বছরের ব্যবধানে অতি প্রয়োজনীয় দুই শতাধিক ওষুধের দাম ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ বাড়িয়েছে কোম্পানি গুলো। হার্ট, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও স্যালাইন, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট, অ্যান্টিবায়োটিক এবং বয়স্ক ও শিশুদের বিভিন্ন রোগের সিরাপের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। আবার দেখা গেছে কোম্পানী ভেদে একই জাতীয় ঔষধের একেক রকম। ভালো মানের একটি কোম্পানীর ওমিপ্লাজল পাইকারী দাম যেখানে সাড়ে চার টাকা সেখানে একই জাতীয় ঔষধ নিম্ন মানের কোম্পানীর পাইকারী দাম এক টাকা। এ ক্ষেত্রে বেশি ঠকছেন গ্রামের রোগীরা। সূত্রমতে, ওষুধের দাম বাড়ানো কোম্পানি গুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস। তারপরই রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা। এরপর পর্যায়ক্রমে স্কয়ার, ইনসেপ্টা, অ্যাকমি ও এসিআই কোম্পানির ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। তীব্র শ্বাসকষ্টে ব্যবহৃত বেক্সিমকো কোম্পানির বেক্সিট্রল ইনহেলারটি মাঝে মাঝেই বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। পরবর্তীতে তা পাওয়া গেলেও ৮৬০ টাকার ইনহেলার বিক্রি হয় ৯০০ বা ৯২০ টাকা। একই অবস্থা বেক্সিমকো গ্রুপের এজমাসল ইনহেলারটিরও। এখানেই শেষ নয়, বাজার থেকে কোনো কারণ ছাড়াই একেবারে উধাও সাইনোসাইটিস রোগীদের অপরিহার্য নাকের ড্রপ এন্টাজল, নরসল। সংকট রয়েছে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসায় অন্যতম জরুরি ওষুধ পাইরোভিট ট্যাবলেটের। ফার্মাদেশ কোম্পানির ওষুধটি বর্তমানে বাজারে নেই বললেই চলে। আর পাওয়া গেলেও ৩ টাকা পাতার ওষুধটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। উচ্চ রক্তচাপের জন্য ব্যবহৃত লোসারটেন পটাশিয়াম গ্রুপের এনজিলক (১০০ মিলিগ্রাম) প্রতিটি ওষুধ ১০ থেকে ১২ টাকা এবং একই ওষুধের (৫০ মিলিগ্রাম) প্রতিটি ছয় থেকে আট টাকা ও (২৫ মিলিগ্রাম) সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার টাকা করা হয়েছে। এক বছরে এই ওষুধের দাম দুবার বাড়ানো হয়েছে। ডায়াবেটিসের ওষুধ কমেট (৫০০ মিলিগ্রাম) প্রতি পাতার দাম ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা, পেন্টোপ্রাজল গ্রুপের (২০ মিলিগ্রাম) ওষুধের দাম ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে। একটি সূত্র বলছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণের অভাব এবং সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের কারণে অনিয়ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছে কোম্পানি গুলো। ওষুধ কোম্পানি গুলো বলছে, কাঁচামাল সংকট এবং ভ্যাট বাড়ানোর কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে তারা ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- ওষুধ বিক্রিতে সরকারি কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ ও বিধিমালা না থাকায় কোম্পানি গুলো দিনের পর দিন জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম ইচ্ছামতো বাড়িয়ে চলছে। অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি সাধারণ মানুষ। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প দ্রুত বিকশিত হলেও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওষুধনীতির আধুনিকায়ন করা হয়নি। এ সেক্টরের অনিয়ম রোধে জোরদার হয়নি প্রশাসনিক নজরদারি। এতে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ সহজেই বাজারে ঠাঁই করে নিচ্ছে। রোধ করা যাচ্ছে না ওষুধের লাগামহীন উচ্চমূল্যও। পুরনো নীতিমালার বাধ্যবাধকতায় ওষুধের মান ও কার্যকারিতা নিয়েও ক্রেতারা কোনো তথ্য জানতে পারছে না। বিশেষ করে মফস্বলের মানুষ নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। যুগোপযোগী ওষুধনীতি না থাকায় দেশজুড়ে ওষুধ বাণিজ্যে চলছে সীমাহীন নৈরাজ্য। সাধারণ ক্রেতারা ওষুধ বাণিজ্যের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির অভাবে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরেই থেকে যাচ্ছে মানসম্পন্ন ওষুধ। এর বিপরীতে ভেজাল, নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ গ্রামাঞ্চলের ফার্মেসি গুলোয় ঠাঁই করে নিচ্ছে। অন্যদিকে, কমিশনপ্রলুব্ধ অধিকাংশ ডাক্তার অপ্রয়োজনীয় ওষুধ এবং টেস্ট লিখে দিচ্ছেন রোগীকে। এতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করেও পর্যাপ্ত সুফল পাচ্ছে না রোগী। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এসব নিয়মনীতির ফাঁক গলে বাজারে ঢুকে পড়ছে নিম্নমানের ভেজাল ওষুধ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় একশ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট ওষুধ নকল করছে, ভেজাল মেশাচ্ছে। এর পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংগ্রহ করে মফস্বলের ফার্মেসি গুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওষুধের দাম নির্ধারণেও সরকারের ভূমিকা সীমিত। বর্তমানে দেশে প্রচলিত প্রায় ২৩ হাজার ওষুধের মধ্যে ১১৭টির গুণ, মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে সরকারের। অন্যগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে কোম্পানি নিজেই। তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের বাইরে থাকা ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে উৎপাদক কোম্পানি। এতে বিক্রেতা পর্যায়ে ওষুধের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করা হয় এবং কোনো কোনো সময় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নির্ধারিত কিছু ওষুধের বেশি মূল্য রাখা হয়। গত এক বছরে ওষুধের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। বিশেষ করে জীবন রক্ষাকারী কোনো কোনো ওষুধের দাম ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের এখন করুণ অবস্থা। টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে না পেরে তারা সারা বছর রোগ-শোকে ভুগছে। অন্যদিকে, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ কেনায় চরম হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। অধিকাংশ সময় দেখা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধও ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে, বিশেষ করে মফস্বলের ফার্মেসিতে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বন্ধ করতে সরকারের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। আর মানুষ সচেতন হলে টাকা দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কেনার ঘটনা কমে আসবে। রোধ হবে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শতকরা ৮৭ ভাগ ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি হয় কোনো পরামর্শপত্র ছাড়া। অন্যদিকে ওষুধ কোম্পানি গুলো প্রস্তুতকৃত ওষুধের বিপণন ঘটাতে নিয়োগকৃত বিক্রয় প্রতিনিধির ওপর ছেড়ে দিচ্ছে। তারা কমিশনলোভী কিছু চিকিৎসকের মাধ্যমে রোগীর ব্যবস্থাপত্রে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ লিখিয়ে এর প্রসার ঘটাচ্ছে। একজন রোগী না জেনেই অপ্রয়োজনীয় ওষুধগুলো কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর তা সেবনও করছেন। কিন্তু শারীরিক সুস্থতার জন্য এগুলো কোনো কাজে আসছে না। একই সঙ্গে দেশের আনাচে-কানাচে নকল ও ভেজাল ওষুধ কারখানা গজিয়ে উঠেছে। খোদ রাজধানীসহ সারাদেশে এইসব ওষুধ ছড়িয়ে পড়ে এক ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও জনগণকে সচেতন করে তোলার ক্ষেত্রে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্বিকার। বিদেশে বাংলাদেশের ওষুধের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বিপুল অঙ্কের ওষুধ রফতানিও হচ্ছে। এসব ওষুধে ব্যবহƒত কাঁচামাল নিয়ে নেই কোনো অভিযোগ। মানের দিক থেকেও সেগুলো ত্রুটিমুক্ত। কিন্তু ভেজাল ও নকল ওষুধ তৈরি এবং বাজারজাত করে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে যারা চরম ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে এরা কারা? সরকারই বা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা কেন নিচ্ছে না? জীবনরক্ষাকারী ওষুধ নিয়ে সব ধরনের নৈরাজ্য ঠেকাতে সরকারকে এখনই তৎপর হতে হবে। প্রয়োজনে আইনের সংস্কার ঘটিয়ে যুগোপযোগী করে তুলতে হবে দ্রুত। এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল মহলের উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি।