ভোলাহাটে রেশমের বাম্পার ফলনে চাষির মুখে হাসি

এফএনএস (গোলাম কবির; ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : : | প্রকাশ: ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০২:৩৮ এএম

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্তুপ রেশম গুঠি বস্তা ভর্তি করছেন রেশম চাষি সমরুদ্দিন। পারিবারিক সূত্র ধরে বেশ ছোট বেলা থেকে রেশম চাষের সাথে জড়িত ভোলাহাট উপজেলার চরধরমপুর গ্রামের সমরুদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরে রেশম চাষের সাথে জড়িয়ে থাকলেও লাভের মুখ দেখেননি তেমন। রেশম চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বার বার। কিন্তু বাবা-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে চালিয়ে গেছেন রেশম চাষ। ভাদরি বন্দের বাম্পার রেশম ফলন পেয়ে মহা খুশি তিনি ও তার পরিবার। হাসি খুশি মুখে সমরুদ্দিন রেশমের স্তুপ থেকে রেশম গুঠি বস্তা ভর্তি করতে করতে জানান, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড ডিজি স্যার আবদুল হাকিম ও পিডি স্যার আবদুল মান্নান যোগদান করার পর থেকে তার মত ভোলাহাট উপজেলার ১৬০জন রেশম চাষি রেশমের বাম্পার ফলন পেয়ে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ঐ স্যারেরা রেশম চাষিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। আদর্শ পদ্ধতিতে রেশম চাষের পরার্মশ দিয়েছেন। সরকারি বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। জীবানূমুক্ত ডিম সরবরাহ করেছেন। ফলে এক বছরের ৪টি বন্দ অগ্রণী, চৈয়তা, জৈষ্ঠি ও ভাদরি বন্দে রেশমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন চাষিরা। তিনি আরো বলেন, এ ৪টি বন্দে ১শত ডিমে এ স্যারদের যোগদানের পূর্বে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ কেজি ফলন পেতেন। আর এখন ফলন পান ১শত ডিমে ৯০-৯৫ কেজি। পূর্বে মণ প্রতি দাম পেতেন মাত্র ৮-৯ হাজার টাকা এখন দাম পান ১৪-১৫ হাজার টাকা মণ। ফলে সব মিলিয়ে রেশম চাষিদের রেশম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। পুরাতন ১৬০ জন চাষি রেশমের ফলন ও দাম পেয়ে পরিবারে যেমন স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন তেমনি রেশম চাষে আগ্রহ জাগছে নতুনদের। সমরুদ্দিন জানান, আগ্রহী চাষিদের মাঝে উন্নতমানের তুঁত চারা সরবরাহসহ আর্থীক সহায়তা দিলে রেশম চাষ পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পাবে বাড়বে রেশম চাষিদেও পরিবারে স্বচ্ছলতা। এ ব্যাপারে একই মতামত চরধরমপুর গ্রামের রেশম চাষি বজলুর রশিদ, সায়েদা খাতুন, ধরমপুর গ্রামের তোফাজ্জুল হক, বজরাটেক গ্রামের হামিদুলের। তারাও বলেন, রেশমের বাম্পার ফলনে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পঠিয়ে শিক্ষিত করার সুযোগ পাচ্ছেন। ভোলাহাট রেশম বোর্ড র্ফাম ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, রেশমের বাম্পার ফলনের পিছনে জীবানুমুক্ত ডিম সরবরাহ, নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান ও বাড়ীতে গিয়ে পরিদর্শন করে পরামর্শ দেয়ার কারণে রেশমের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান। রেশম চাষিদের দাবী এ ভাবে চলতে থাকলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে রেশমের পূর্বের ঐতিহ্য। রেশম চাষিদের ঘরে ঘরে ফুটবে সুখের হাসি।

 

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW