সারাজীবনই জনকল্যানে কাজ করেন শিক্ষিত যুবক এমদাদ। নাইট স্কুল প্রতিষ্ঠা করে বিনামূল্যে এ পর্যন্ত পিছিয়ে পড়া ৪ টি গ্রাম নিরক্ষরমুক্ত করেছেন। কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষের বিনামূল্যে ডায়াবেটিস ও রক্তের গ্রুপ নির্নয় করেছেন, এলাকার কৃষক কৃষাণীদেরকে কম খরচে চাষাবাদ করতে বাড়িতে পরিবেশবান্ধব জৈব সার উৎপাদনের প্রশিক্ষন দিয়েছেন, এছাড়াও এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ -৫ প্রাপ্ত এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে সম্বর্ধনা প্রদান করে উৎসাহ প্রদান করেন। নৈশ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদেরকে সঞ্চয়ী মনোভাব গড়ে তুলতে উৎসাহিত করেন। তাদের মাঝে শীতবস্ত্র প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার রাতে কৃষকদের মাঝে বিতরন করলেন রোদ বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে মাতার (টোপর) বা মাথালী। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেন মোল্যা, কালীগঞ্জ প্রেসক্লার সাধারন সম্পাদক সাবজাল হোসেনসহ এলাকার সূধিজনেরা। এমদাদ ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের দৌলৎপুর গ্রামের মৃত কাজী আবদুল ওয়াহেদের পুত্র ও কাজী আবদুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের পরিচালক।
কাজী এমদাদ জানান, স্থানীয় কোলাবাজারে তিনি একটি প্রিক্যাডেটে শিক্ষকতা করেন। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে প্রিক্যাডেট ছুটি হয়ে যায়। পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারণে তাকে বাড়িতে অনেক কাজ করতে হয়। এরপর রাতে বয়স্কো স্কুল চালাতে কষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক। তারপরও সামাজিক দায়বদ্ধতায় বিবেকের তাড়নায় নৈশ বিদ্যালয় পরিচালনাসহ বিভিন্ন কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন। নৈশ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অধিকাংশই বয়ষ্কো ও অশিক্ষিত। তবে তাদের মনোভাব উদার। তারা শেখার প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী। ফলে শত কষ্টের মধ্যেও তার ভালো লাগে।
কাজী এমদাদ আরো জানান,শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদেরকে ব্যক্তিগত জীবনে সঞ্চয়ী হতে স্কুলের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে একটি করে মাটির ব্যাংক কিনে প্রতিদিনের রোজগারের মধ্য থেকে কিছু পয়সা জমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে টাকাটা তারা পরিবারের আপদকালীন সময়ে ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য কাজে আসবে। স্কুল চালানো জন্য গ্রামের চাকরীজীবিরা খরচ বাবদ কিছু পয়সা দিয়ে থাকেন। যা দিয়ে লেখাপড়ার সামগ্রীসহ ব্যবস্থাপনার ব্যয় করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেন জানান, এমদাদের তুলনা শুধু এমদাদই।
স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার জানান, কাজী এমদাদ নিজে একজন অস্চ্ছল মানুষ। তারপরও মনের জোরে একজন মানুষ হিসেবে সমাজের দায়বদ্ধতা থেকে অবহেলিত মানুষের এবং সমাজ উন্নয়নে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাকে ধন্যবাদ দিতে হয়।