সোনারগাঁয়ে ভুল চিকিৎসায় আমান্তিকা নামে এক প্রসুতি রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ক্লিনিক ভাংচুর করেছে রোগীর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা। সোমবার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতাল নামের একটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুদ্ধ স্বজনরা ক্লিনিকের পরীক্ষাগার, মেশিনপত্র, গ্লাস, দরজা জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ঘটনার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুদ্ধ স্বজনদের বিচারের আশ^াসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মোঃ পিন্টু মিয়া বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
জানাযায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বড় সাদিপুর গ্রামের পিন্টু মিয়ার স্ত্রী আমান্তিকা গর্ভবতী হলে সিজারের জন্য শুক্রবার বিকেলে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। ক্লিনিকের চিকিৎসক ডাঃ নূরজাহান বেগম ওই দিন রোগীকে সিজার করার পরামর্শ দেন এবং তিনি নিজেই রোগীকে সিজার করায়। অপারেশনের মাধ্যমে আমান্তিকার একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। এ সময় তারাহুড়া করে সিজার করার কারণে রোগীর পেটে গজ কাপড় রেখেই ডাঃ নূরজাহান অপারেশনের কাঁটা স্থান সেলাই করে ফেলে। সিজারের পর রোগীর অনরত বমি ও পেটে অস্বস্তি তৈরি হয়ে পেট ফুলে যায়। পুনরায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসলে সে নারায়ণগঞ্জ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়। রোগীকে নারায়ণগঞ্জে কেয়ার হাসপাতালে নিয়েগেলে ডাক্তার নূরজাহান ওই হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় রোগীকে সিজার করিয়ে জরায়ু কেটে ফেলে। রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হলে কেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকার গেন্ডারিয়া আজগর আলী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে সোমবার ভোরে সে মারা যায়। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে দুপুরে সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে এসে ক্লিনিকের পরীক্ষাগার, মেশিনপত্র, গ্লাস, দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ঘটনার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষুদ্ধ স্বজনদের বিচারের আশ^াস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। নিহত আমান্তিকার স্বজনেরা তার লাশ এম্বুলেন্সে করে সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালের সামনে নিয়ে আসে। এ সময় আমান্তিকার লাশ দেখে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত আমান্তিকার স্বামী মোঃ পিন্টু মিয়া জানান, বন্দর উপজেলার কল্যাণদী গ্রামের সোহেল মিয়ার মেয়ে আমান্তিকার সাথে ২০১৮ সালের ৩রা আগস্ট বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় ডাক্তারের ভূল চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে হারান এবং তার কন্যাসন্তান এতিম হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের তিনি বিচার দাবী করেছেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল ভাংচুর হয়েছে। বিক্ষুদ্ধ স্বজনদের পুলিশ বিচারের আশ^াস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় মামলার করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।