ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানা বিএনপি’র দ’ুগ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া বোমা ও বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটেছে। ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকালে কালীগঞ্জ শহরের থানা রোডের বিএনপি’র অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে। বোমাবাজির ঘটনায় এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের ওপর দোষারোপ করছে। এ ঘটনায় পুলিশ ফারুক হোসেন (৪০) নামের একজনকে আটক করেছে।
বিএনপি’র একটি সূত্রে জানাগেছে,সম্প্রতি জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। সে কমিটিতে সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব শহীদুজ্জামান বেল্টু ও বিএনপি নেতা হামিদুল ইসলাম হামিদের নাম না থাকায় দীর্ঘদিন দিনের বিরোধ মিটিয়ে তাদের অনুসারী নেতাকর্মিরা এক জোট বেধেছে। অপরদিকে এ কমিটিতে যাদের নাম এসেছে তারা সকলেই বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম ফিরোজের অনুসারী বলে দাবি বিএনপি নেতা হামিদের। কার্যত এ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করেই দলে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
দলের সাধারন নেতাকর্মিদের বক্তব্য, বিগত সংসদ নির্বাচনে অনেকে মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। মনোনয়ন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাইফুল ইসলাম ফিরোজকে দেয়া হলেও দলের মনোনয়ন বঞ্চিত ও সিনিয়র নেতারা গা বাঁচাতে তেমন কেউ ভোট ভিক্ষায় নামেননি। এরপরও ভোটের পরে ফিরোজ সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজনীতি শুরু করেন। কিন্ত সম্প্রতি ঘোষিত জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটিতে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিন্ত কমিটিতে তাদের নাম আসেনি। ফলে নতুন করে আবার বিরোধ শুরু হয়েছে।
বিএনপি’র এক অংশের নেতা হামিদুল ইসলাম হামিদ জানান, তার ভাইপোরা মঙ্গলবার বিকালে নিমতলা বাসস্ট্যান্ডে বসে ছিল। এ সময় কতিপয় সন্ত্রাসী প্রথমে তাদেরকে লক্ষ করে প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে তারা জীবন বাঁচাতে দৌড় দিলে পেছন থেকে তাদেরকে লক্ষ করে আবার পরপর ৩ টি বোমা নিক্ষেপ করে। এ সময় রনি নামের তার এক ভাইপো ও সাবেক ছাত্রনেতা আহত হয়।
সাইফুল ইসলাম ফিরোজের দাবি জেলা বিএনপি’র মিটিং শেষ করে দলের সিনিয়র নেতাকর্মিদের নিয়ে কালীগঞ্জ থানা রোডের ধান হাটার সামনে আসলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা বেল্টু এবং হামিদপন্থী একদল সন্ত্রাসী তাদেরকে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে তারা পর পর ৩ টি হাত বোমার বিষ্ফোরন ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। সাইফুল ইসলাম ফিরোজ জানান, বিগত দিনেও হামিদ ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকে অযথা দলের মধ্যে গ্রুপিং লবিং সৃষ্টি করে দলের সাংগাঠনিক ভীত দুর্বল করার চেষ্টা করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকালে বিএনপি’র দ’ুগ্রুপের নেতাকর্মিদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পরপর ৩ টি বোমার বিস্ফোরন হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলী জানান, বিএনপি’র দ’ুগ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখনও থানায় কোন মামলা হয়নি। ফারুক নামের একজনকে আটক করা হয়েছে।