ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুইদল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে হুমায়ুন কবীর (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতাল এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের ধোপাঘাট বাজার এলাকায়। নিহত হুমায়ুন কবীর রাওনা পূর্বপাড়া গ্রামে মৃত আবদুল মতিন মিয়ার ছেলে।
আহতরা হলেন- নিহতের বড়ভাই লিটন মিয়া (৫০), ছোটভাই জর্জ মিয়া (২৫), মা রাহেলা খাতুন (৬৮), এবং প্রতিপক্ষ আশরাফুল (৩৩) ও শরীফুল (৩৬)। গফরগাঁও থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) অনুকূল সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়, তবে হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও জানান. পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় রাওনা ইউনিয়নের ধোপাঘাট নামাপাড়া গ্রামের মৃত শহর আলী মেম্বারের ছেলে আশরাফুল, শরীফুল ও নয়ন মিয়ার সঙ্গে একই ইউনিয়নের রাওনা পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মতিন মিয়ার ছেলে নিহত হুমায়ুন কবীর ও তার ছোটভাই জর্জ মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। পূর্ব বিরোধের জের ধরে বুধবার রাতে আশরাফুল, শরীফুল ও নয়ন মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জনের দেশীয় অস্ত্রে সশস্ত্র লোকজন হুমায়ুন কবীর ও জর্জ মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা বৃদ্ধা রাহেলা খাতুনকে পিটিয়ে আহত করে। সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে নিজেদের বাঁচাতে বাড়িতে বসবাসরত নারী ও শিশুরা ভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। পরে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা স্থানীয় ধোপাঘাট বাজারে এসে ইসমাইল হোসেনে চা-ষ্টল ভাংচুর করে। খবর পেয়ে হুমায়ুন কবীর ও জর্জ মিয়ার সুসংগঠিত হয়ে সশস্ত্র অবস্থায় ধোপাঘাট বাজারে অবস্থান করে। এ সময় দুইপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘষে সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালে হুমায়ুন কবীর ও জর্র্জ মিয়াকে প্রতিপক্ষ আশরাফুল, শরীফুল ও নয়ন মিয়া রামদা দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুই ভাইকে উদ্ধার করে প্রথমে পাশর্^বর্তী ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই হুমায়ুন কবীর ও জর্জ মিয়াকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হুমায়ুন কবীরকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের বড়ভাই আহত লিটন মিয়া অভিযোগে জানান, প্রায় আড়াই বছর আগে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে আশরাফুল, শরীফুল ও নয়ন আমার ছোটভাই হুমায়ুন কবীরকে কুপিয়ে আহত করে। ঐ ঘটনায় গফরগাঁও থানায় মামলা হলেও পুলিশ রহস্যজনক কারণে কোন আসামি গ্রেফতার করেনি। পুলিশ আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে আজ আমার ছোটভাই হুমায়ুন কবীরকে প্রাণ দিতে হতো না।