নাটোরের সিংড়ার সাতপুকুরিয়া দ্বি-মুখী উচ্চবিদ্যালয়ের দ্বি-তল ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবন নির্মাণে নি¤œ মানের ইট ও সুরকি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিক বার অভিযোগ করেছেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
সূত্রে জানা যায়, সিংড়ার চলনবিলের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত সাতপুকুরিয়া দ্বি-মুখী উচ্চবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা উর্ধ্বমূখী ভবণের কাজ করছেন রাজশাহীর মেসার্স মুমু এন্টার প্রাইজের ঠিকাদার আমিরুল কবির বাবু। যার চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ২লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা। কাজের শুরু থেকেই দ্বিতীয় তলা ভবণে পিলার ঢালাই কাজে নি¤œ মানের সুরকি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ করেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় এলাকাবাসী। পরে সরোজমিনের গিয়ে দেখা যায়, বিলের ধারে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানে নি¤œমানের ও ধুলো মিশ্রিত সুরকি দিয়ে ঢালাই কাজ চলছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে কাজ দেখা-শোনায় নিয়োজিত মো: রুবেল হোসেন বলেন, এক গাড়ী ইটে একশ থেকে দেড়শটি ইট খারাপ আসবেই। এটা কোন ব্যাপার নয়।
অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে অবগত করা হলেও তারা সরোজমিনে এসে কাজ পরিদর্শন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নি¤œমানের মালামাল ফেরত নিতে বলেছেন। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেদিকে কর্ণপাত না করে ইচ্ছে মতো নি¤œমানের সুরকি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আশঙ্কা নি¤œমানের সুরকি ব্যবহারের ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।
স্থানীয় ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাজারে লোকজন আলোচনা করছে কাজটিতে নি¤œমানের সুরকি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে আমাদের সন্তানদের নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। কারণ প্রতিষ্ঠানটি বিলের ধারে অবস্থিত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক জানান, বিলের মাঝে অবস্থিত চলবিলের ঐতিহ্যবাহী অত্র প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানে চার শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষার্থীদের আসন সংকুলন না হওয়ায় শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় একতলা পুরাতন ভবনের ওপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা ভবণ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এভাবে ভবন নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কোথায়?
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিন ধানের মধ্যে চিটা থাকবেই মন্তব্য করে বলেন। কাজ নি¤œমানের সবারই জানা আছে।
প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এটা নিয়ে অনেক কথা ও বাঁধা দেয়া হয়েছে। আর ম্যানেজিং কমিটির মিটিং করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
ঠিকাদার আমিরুল কবির বাবুর সেল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার কাজের পার্টনার সোহেল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।
নাটোর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বকুল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ঠিকাদারকে নতুন ভাল খোয়া এনে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভাল খোয়া না আনলে তাকে আর কাজ করতে দেওয়া হবে না।