শৈলকুপায় সাপের ছোবলে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের। গতকাল মায়ের অনুপস্থিতিতে ছোট ভাই সোহাগ মন্ডলকে সঙ্গে নিয়ে একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন বড় ভাই শাহীন মন্ডল। মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিষধর সাপ তাদের দু’জনকে কামড় দেয়। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার নাগপাড়া গ্রামে।
নিহতদের বোন শাপলা খাতুন জানান, শাহীন, তুহিন আর সোহাগ মিলে তারা তিন ভাই আর এক বোন। বাবা নবাব আলী বেশ কিছুদিন আগে মারা গেছেন। দুই ভাই বিয়ে করে পৃথক সংসার করেন।
সোমবার বিকালে মা জুনি বেগম তার ভায়ের বাড়ি একই উপজেলার আউশিয়া গ্রামে যান। যাবার সময় ছোট ছেলে সোহাগ মন্ডলকে বাড়ি রেখে যান। রাতে ঘুমাতে যাবার সময় বড় ভাই শাহিন মন্ডল তার কাছে নেন ছোট ভাই সোহাগ মন্ডলকে। পোতাপাকা টিন সেডের একই কক্ষে তারা দুই ভাই ঘুমিয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১ টার দিকে হঠাৎ করে বিষধর সাপ তার বড় ভায়ের ঘরে প্রবেশ করে। খাটের উপর ঘুমিয়ে থাকা দুই ভাই শাহীন মন্ডল ও সোহাগ মন্ডলকে কামড় দেয়।
শাহীন মন্ডলের স্ত্রী আছিয়া বেগম বিষয়টি বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার দেন। পাশ^বর্তী চামটিপাড়া গ্রামের ওঝাঁ শফি উদ্দিন শেখকে বিষয়টি বললে তিনি সাপে কেটেছে বলে জানান, এবং দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
দুই ভাইকে রাতেই কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়া হলে ভোরের দিকে কর্ত্যবরত চিকিৎসকরা জানান তারা মারা গেছেন।
এই সংবাদ নাদপাড়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে নেমে আসে শোকের ছায়া। এ ছাড়া সোমবার একই উপজেলার যুগনী গ্রামে সাপের ছোবলে মারা গেছে বিলকিস নামের এক গৃহবধু।
এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বজলুর রহমান জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। একসঙ্গে সাপের কামড়ে দুই ভায়ের মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টকর। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় শৈলকুপা উপজেলা সাপের কামড়ে ৩ ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ায় সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলা জুড়ে।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা সায়েম আহমেদ, জানান, জনবসতির আশপাশে পানি জমে থাকলে সেখানে সাপ আছে কিনা সনাক্ত করতে হবে, এ ছাড়া ঘরে কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। একই সাথে সাপে কামড়ালে দ্রুত হাসপাতালে আনার কথাও জানিয়েছেন।