টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে গ্রাম্য শালিসে জুতা পেটা করে ৭ বছরের শিশু ধর্ষণ চেষ্টা ঘটনার বিচার করেছে মাতবররা। ঘটনাটি উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের চালাটিয়া গ্রামের।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিশুটির মা জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংসারিক কাজে দাঁড়িপাল্লা আনতে নিজ শিশু কন্যা ও ভাতিজি সহ তিনি প্রতিবেশি মৃত বেলায়েত হোসেনের ছেলে সালিম বিল্লাহর (৫৫) বাড়িতে যান। সালিম বিল্লাহ বলেন তার স্ত্রী বাড়ি নেই। তাই রান্নাও হয়নি। একথা শুনে মা তার মেয়ে ও ভাতিজিকে সালিম বিল্লাহর কাছে বসিয়ে রেখে নিজ বাড়ি থেকে ভাত আনতে যান। ফিরে এসে দেখেন সালিম বিল্লাহ তার (ভিকটিমের মা) মেয়েকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করছে। এ ঘটনা দেখে চিৎকার চেঁচামেচি করলে সালিম বিল্লাহ তার পা ধরে ক্ষমা চায় এবং ঘটনাটি গোপন রাখতে বলে। ইতোমধ্যে প্রতিবেশিরা পা ধরা অবস্থায় দেখে ফেলে এবং ঘটনা জেনে মারধর করে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই দিন রাতেই আটিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার জয়নাল উদ্দিনের নেতৃত্বে স্থানীয় মাতবর মীর কামাল হোসেন, মো. শাহজাহান মিয়া, মো. হানু মিয়া, ওবায়দুর রহমান, মুকুল মাষ্টার ও তার বাহমভুক্ত লোকজন শালিস বৈঠকের আয়োজন করে। সেখানে সালিম বিল্লাহকে জুড়িবোর্ডে দোষী সাব্যস্ত করে জুতা পেটা করা হয়। ঘটনার উপযুক্ত বিচার না পেয়ে শিশুটির মা স্থানীয় সাংবাদিকদের অবহিত করেন। পরেরদিন শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ঘটনার সচিত্র প্রতিবেদন ভাইরাল হয়। দেলদুয়ার থানার সেকেন্ড কর্মকর্তা আরিফুর রহমান সোমবার বিকালে ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে থানার সোর্স এবং শালিস কার্যক্রম পরিচালনাকারী জয়নাল মেম্বারসহ ভিকটিম ও তার মাকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে রাতেই শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
শালিস পরিচালনাকারী জয়নাল মেম্বার এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনা জানতে পেরে স্থানীয় মাতবরদের নিয়ে দোষী সালিম বিল্লাহকে জুতা পেটা করা হয়।
জানতে চাইলে আটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে দেখেছি। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। ঘটনাটি ন্যক্কারজনক।
এ বিষয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ.কে সাইদুল হক ভূইয়া বলেন, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে সোমবার রাতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।