জয়পুরহাটের সড়ক জনপদ বিভাগের অর্থায়নে ক্ষেতলাল-গোপিনাথপুর ১০ কিলোমিটার রাস্তা প্রসস্ত ও মজবুতিকরণ কাজ করছেন রিজভী কনস্ট্রাকশন ময়মনসিংহ নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের সড়ক জনপদ বিভাগের অর্থায়নে প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫০ মিটার আরসিসি ঢালায় এর কাজ রয়েছে।
জানাগেছে, সিডিউল মোতাবেক রাস্তার রেজিং এর পার্শ্বে মাটি ভরাট করার জন্য অন্যত্র থেকে মাটি এনে ভরাট করার কথা ছিল। কিন্তু এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির যোগসাজসে এবং নিরিহ জমির মালিকদের বোকা বানিয়ে সিডিউলের দোহায় দিয়ে রাস্তার পার্শ্বের আবাদি জমি থেকে মাটি খনন করে রাস্তার রেজিং এর পার্শ্বে মাটি ভরাট করে। ওই সময় জমির মালিক‘রা এর প্রতিবাদ করলে সরকারি কাজে বাঁধা না দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখায় ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। প্রথমে রাস্তার পার্শ্বের জমি মালিকদের কোন কিছু না জানিয়ে উপযুক্ত মূল্য বা অধিগ্রহণ ব্যতিত এক সপ্তাহের মধ্যে রাতেদিনে এস্কেবেটার দিয়ে ৭ থেকে ৮ ফুট গভীর মাটি খনন করে রাস্তার রেজিং এর পার্শ্বে ভরাট করে। ফলে একদিকে জমির মালিকদের আবাদি জমি খনন করে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে অন্যদিকে পরবর্তী সময়ে রাস্তাও ঝুকিপূর্ণ হয়েছে। বর্ষাকালে যে কোন সময় রাস্তা ভেঙ্গে গর্তে পড়বে। এ নিয়ে এলাকার জমি মালিকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ভাশিলা গ্রামের জমি মালিক আহম্মদ আলী,আনোয়ার,আজগর আলী,কুশুম শহর গ্রামের শ্রী অনিল চন্দ্র বলেন, আমাদের প্রায় ৩ বিঘা আবাদি জমি রাস্তার পার্শ্বের অংশ গভীর ভাবে খনন করে রাস্তায় মাটি ভরাট করেছে। আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা তড়িঘড়ি করে তিন চার দিনের মধ্যে রাতেদিনে মেশিন দিয়ে এমন গভীর করে মাটি কেটেছে তাতে আমাদেরসহ এলাকার অনেক মানুষের আবাদি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ক্ষেতলাল পৌরসভা মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু এবং ১১ সেপ্টেম্বর ক্ষেতলাল উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আরাফাত রহমান রাস্তার কাজ চলাকালিন সময় রিজভী কনস্ট্রাকশনের কৃর্তপক্ষের নিকট ইটাখোলা বাজারে আরসিসি ঢালায় কাজে নি¤œমানের ৩ নং ইট, রাস্তার পার্শ্বে পরিত্যক্ত ড্রেনের ইটের খোয়া, সাধারণ প্লাস্টারের বালি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জনসম্মখে অভিযোগ করেন। ক্ষেতলাল উপজেলা নিবার্হী অফিসারও কাচারি বাজারে চলমান রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সড়ক ও জনপদ বিভাগ জয়পুরহাট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেই মোতাবেক নিবার্হী প্রকৌশলী তানভির সিদ্দীক সড়ক জনপদ জয়পুরহাট দু‘দিন ওই রাস্তার আরসিসি ঢালায় কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। মেয়র এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তিনি সিডিউল মোতাবেক কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। পরের দিন সেখান থেকে নাম মাত্র কয়েক বস্তা ৩ নং ইটের খোয়া,বালি তুলে এনে তাদের ক্যাম্পে রাখেন। পরবর্তীতে পূনরায় কাজ শুরু করেন সাবেকী অনিয়মের মধ্যদিয়ে।
সড়ক জনপদ বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, ১২ সেপ্টেম্বর সড়ক জনপদ বিভাগ জয়পুরহাটের নিবার্হী প্রকৌশলী তানভির সিদ্দীক সরজমিনে এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মেয়র মহোদয়কে সিডিউল মোতাবেক ভাল মালামাল ব্যবহার করে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুনরায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইটাখোলা ও ক্ষেতলাল বাজারের একাধিক এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রকৌশলী‘রা জনগনের স্বার্থ নয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ দেখছেন। এ নিয়ে এলাকার জনমনে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
রিজভী কনস্ট্রাকশন ময়মনসিংহ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হোসেন বলেন,সকল প্রতিকুলতার মধ্যদিয়ে কাজ চালিযে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের এ রাস্তার ৬০ ভাগ কাজ সম্পূর্ন হয়েছে। কোন প্রকার নি¤œমানের মালামাল বা রাস্তার পার্শ্বে পরিত্যক্ত ড্রেনের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়নি।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ জয়পুরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভির সিদ্দীক এ বিষয়ে জানান, ক্ষেতলাল পৌরসভার মেয়র ও নিবার্হী অফিসারের সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনদের কাজের মান নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল আমরা সেটা নিরশন করেছি। নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ চলছে। পার্শ্ববর্তী ভুমি হতে মাটি ভরাটের কোন নিয়ম সিডিউলে নেই। কেউ ইচ্ছে করে দিলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার।