রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে রেলওয়ের বড় আকৃতির দু’টি মেহগনি গাছ ও হতদরিদ্র একটি পরিবারের বসত ঘর ভেঙে দিয়ে ব্যাক্তিগত রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানাগেছে, রাজবাড়ী-গোয়ালন্দ ঘাট রেলওয়ের লাইনের পাশে ছোট ভাকলা ইউনিয়নের হাউলি কেউটিল গ্রামে গাজী সাইফুল ইসলাম বিদ্যানিকেতন নামে একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুল শুরুর উদ্যোগ নেন স্থানীয়র প্রভাবশালী গাজী সাইফুল ইসলাম।
পাশ্ববর্তী একাধিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে তিনি স্কুলের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এর অংশ হিসেবে নির্ধারিত স্থানে যাতায়াতের পথ না থাকায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে রেল লাইনের পাশে দুটি মেহগনি গাছ কেটে প্রশস্ত রাস্তা বের করেন। রাস্তার নির্মাণ কাজ করার সময় পাশে হতদরিদ্র আবদুস সামাদ খাঁর বাড়ির একটি ঘর জোরপূর্বক ভেঙে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করেন।
ক্ষতিগ্রস্থ্য আবদুস সামাদ খাঁর মা খোদেজা বেগম ও স্ত্রী শেফালী বেগম বলেন, ‘আমরা গবীর মানুষ, বাড়িতে পুরুষ মানুষ থাকে না। জোর-জবরদস্তি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে রেলের বড় দু’টি গাছ কেটেছে এবং আমাদের ছাপড়া ঘর ভেঙে গাজী সাইফুল রাস্তা নির্মাণ করেছে। আমরা বাধা দিলেও তারা আমাদের কোন কথা শোনেননি।
প্রস্তাবিত গাজী সাইফুল ইসলাম বিদ্যানিকেতন কিন্ডার গার্টেন স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, আজমত আলী বেপারী নামের একজন শিক্ষক কিছু কাগজপত্র নিয়ে বসে কাজ করছেন। তিনি জানান, কোন গাড়ি না ঢোকার কারণে রেললাইনের পাশের দু’টি মেহগনি গাছ ছোট ভাকলা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আমজাদ হোসেনকে জানিয়ে কাঁটা হয়েছে। তবে গাছ দু’টি বনবিভাগের অফিসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, কারো ঘর জোর করে ভাঙা হয়নি। তাদের অনুমতি নিয়েই ঘর সরিয়ে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা বন কর্মকর্তা মীর সাইদুর রহমান জানান, রেল লাইনের পাশে রেল কর্তৃপক্ষ এবং বন বিভাগ যৌথভাবে স্থানীয়দের সমিতির মাধ্যমে এই গাছগুলো প্রায় এক যুগ আগে রোপন করা হয়। গাছ কাটার বিষয়টি তিনি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। এরপর একটি গাছ আমার অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছে। অপরটি যতদুর শুনেছি একটু ছোট ছিল। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যাতিত গাছ কাঁটা আইনত অপরাধ। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দেয় তা বাস্তবায়ন করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজবাড়ী অঞ্চলের আইডাব্লউ হাফিজুর রহমান জানান, রেললাইনের পাশের কোন গাছ কাঁটা হয়েছে বলে তিনি জানেন না। তবে এ ধরনের কাজ কেউ করে থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত গাজী সাইফুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি কথা না বলে লাইন কেটে দেন। এরপর আর ফোন রিসিভ করেননি।