ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র ভুবেনশ্বর নদের অন্ততঃ অর্ধশত পয়েন্টে বাশের বানা বাঁধ ও ভেসাল দিয়ে দিনরাত নীধন করা হচ্ছে পোনা মাছ। গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধির ফলে রুই কাতলা ও মৃগেলের পোনা মাছে ওই নদী ছয়লাব হয়ে রয়েছে। আর স্থানীয় অসাধু জেলে ও গৃহস্থ পরিবারগুলো ওই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে আড়াআড়ি বাশের বানা বাঁধের মাধ্যমে ফাঁদ জাল ও চাই বসিয়ে নীধন করে চলেছে ৪/৫ ইঞ্চি লম্বাকৃতি মিঠা পানির পোনা মাছ। এ ছাড়া আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে ওই নদী সহ আশপাশের খালবিল সহ বিভিন্ন কোলে রয়েছে আরও অন্ততঃ ১৫টি ভেসাল বাঁধ। এসব ভেসাল বাঁধে রাতের বেরায় অবাধে নীধনযজ্ঞ চালানো হচ্ছে পোনামাছ। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নাকের ডগায় মৎস্য সম্পদের এসব ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হলেও কারও কোনো মাথা ব্যাথা নেই বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সোমবার দুপুরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মালিক তানভির হোসেনের সাথে বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিপ করেন নাই। তবে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন বলেন, “ আমি বিষয়টি অবগত ছিলাম না, ভুবেনশ্বর নদের অবৈধ বাঁধগুলোর বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেবো”।
জানা যায়, উপজেলা সদর ইউনিয়নের ভুবেনশ্বর নদের লোহার টেক গ্রাম, বাছার ডাঙ্গী গ্রাম, সর্দারবাড়ী গ্রাম, মৌলভীরচর গ্রাম, আঃ করিম মৃধার ডাঙ্গী গ্রাম সহ জাকেরের সুরা গ্রাম পর্যন্ত নদী জুড়ে প্রায় অর্ধশত আড়াআড়ি বাশের বানা বাঁধ রয়েছে। এসব আড়াআড়ি বাঁধের মাঝে মধ্যে পানি সমান করে পোতা হয়েছে ফাঁদ জাল ও বড় আকারের চাই। নদীতে চলমান সমস্ত প্রকার মাছের পোনাগুলো এসব ফাঁদজাল ও চাইয়ের মধ্যে আটক হচ্ছে। এ ছাড়া ওই নদের সর্দারবাড়ী গ্রাম পয়েন্টে নদী আটকিয়ে একটি ভেসাল ও জাকেরের সুরা গ্রামের নদীতে রয়েছে আরও দু’টি ভেসাল। একই সাথে উপজেলার কামার ডাঙ্গী গ্রামের কোলে আরও দু’টি ভেসাল, মাথাভাঙ্গা গ্রামের কোলে একটি, শ্রী মোহনের কোলে একটি, লোহারটেক গ্রামের খালে একটি সহ পোনামাছ চলাচলের জলমহলে অন্ততঃ ১০টি ভেসাল বাঁধ দিয়ে নীধন করা পোনা মাছ। সোমবার উপজেলা জাকেরের সুরা গ্রামে সরেজমিনে ভেসাল বাঁধে গেলে স্থানীয় ছবেদ প্রামানিক জানায়, “ প্রতিটি ভেসাল মালিক জেলে স্থানীয় কোনো প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় রাতের বেলায় পোনা সহ সমস্ত প্রকার মাছ শিকার করে থাকে বলে প্রশাসনও দৃষ্টিপাত করেন না”।