ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবীব রুবেল ও তার পিতা তোফাজ্জেল হোসেনের বিরুদ্ধে ভুমিদস্যু, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী তান্ডবের অভিযোগ তুলে এ থেকে পরিত্রান পেতে ভুক্তভোগী ৩৬টি পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে ভুক্তভোগী এসব পরিবারের সদস্যরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। কলেজ এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য অভিযোগ করে বলেন, আহসান হাবীব রুবেল তথা বিতর্কিত রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এবং তার পিতা ভুমিদস্যু, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ তোফাজ্জেল হোসেন ওরফে ভূয়া মেজর ও তাহাদের গুন্ডা বাহিনীর বে আইনি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে রাজাপুরবাসী অতিষ্ট। সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, মিথ্যা ও বানোয়াট জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বানোয়াট কাগজপত্র তৈরি করে ভুক্তভোগী লোকজনের জমি দখলে নিয়াছে এবং নেয়ার পায়রাতা চালাচ্ছে। ছাত্রলীগ সভাপতির বাবা তোফাজ্জেল হোসেন ১৯৯২ সালে একটি জাল দলিল করে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল করেন। পরে মৃত নির্মলের স্ত্রী বিভা রানীর নামে এবং মৃত সীতানাথের স্ত্রী যামিনী বালার কাছ থেকে ১২ ও ২১ শতাংশ জমি তোফাজ্জেল হোসেন ও তার স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম নাজমার নামে ক্রয় করেছে মর্মে ভুয়া দলিল তৈরি করে বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রি করেছে, পরে দলিলটি ভুয়া প্রমানিত হয়েছে। যার নম্বর ২০০১/৯২। এ দলিলের কোন অস্তিত্ব পায়নি রাজাপুর সেটেলমেন্ট ও ভূমি অফিসে। পরবর্তীতে জমি বুঝে চাইলে ও অন্যথায় টাকা ফেরৎ চাইলে হয়রানি ও চাঁদা দাবি করে। এভাবে আরও ভুয়া দলিল রয়েছে যাহা ভুয়া প্রমানিত হয়েছে। এ দুই পিতা-পুত্রের নামে ঝালকাঠি জেলা আদালতে চাঁদাবাজী, জাল জালিয়াতি ও হত্যা মামলার রয়েছে। কিছুদিন আগেও উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জোর পূর্বক মানুষের জমি দখল করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন। এসব একাধিক মামলা সমূহ জেলা দায়রা আদালত, ঝালকাঠিতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য দেওয়ানী মামলা রয়েছে। নি¤œস্বাক্ষরকারী অনেক লোকজনের জমি জমি দখলের পায়তারা করিতেছে। তার কাছ থেকে জমি ক্রেতাগণ দলিলের তুলতে দাতা গ্রহীতার নামে কোন দলিল রেজিষ্ট্রার ভুক্ত হয়নি বলে প্রমানিত হয়। এভাবে ভুয়া দলিলের দোহাই দেয় এবং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবীব রুবেলের পদ ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সেটেলমেন্ট অফিসে রেকর্ডসহ জমি দখল ও গ্রাসের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত চালাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অনৈতিক কাজে অপারগতা প্রকাশ করলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়ায় সদর ইউনিয়ন সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম তাদের ভয়ে ৪৩টি মামলার কার্যক্রম বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে প্রেরণ করেন, যাহার বাদি তোফাজ্জেল হোসেন। ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে সদরের কলেজ এলাকার আবদুল খালেক অভিযোগ করেন, তার কাছে বিভিন্ন সময় হুমকি ও চাদা দাবি করে আসছে। এসব ঘটনায় থানায় জিডিও করতে ভয় পাচ্ছে। পূবালী ব্যাংকের পিয়ন সুলতান হোসেন জানান, তোফাজেল হোসেন কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন কিন্তু তা বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো ৪ লাখ টাকা চাদা দাবি করছে। বাইপাস এলাকার সিরাজ তালুকদার অভিযোগ করেন, তার কাছ থেকে ভুয়া দলিলের ফটোকপি দিয়ে টাকা নিয়ে এখন নানভাবে হুমকি দিচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, আহসান হাবিব রুবেল ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে নানা কর্মকা-ে বিতর্কিত হয়ে পড়েন। ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে মালিকানা দাবি করে মোটা অঙ্কের চাঁদা চায়। টাকা না দিলে লোকজন নিয়ে জমি দখলে নেয় তারা। ওই জমি অন্যান্যের কাছে বিক্রি করে লাখ লাখ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এসব কাজে বাধা দিলে মারধরও করা হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ অভিযোগ দিয়েও ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে কোন প্রতিকার পায়নি বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবীব রুবেল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, জমির দলিল ভুয়া না সঠিক তা আদালতে প্রমান হবে। কয়েকটি জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। তার দাবি এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দ্যেশ্য প্রনদিত, একটি মহল তাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চক্রান্ত ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ সম্মানহানি করছে।