লক্ষ্মীপুরে কমলনগরে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে শারমিন আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধুরকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সুমন ও শ^শুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। নিহত গৃহবধু শারমিন আক্তার একই এলাকার আজাদ হোসেনের মেয়ে। বুধবার ভোরে কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স এলাকা থেকে গৃহবধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়েছেন পুলিশ। পুলিশ জানান,শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে গৃহবধুকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী সুমনসহ শ^শুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে নিহত শারমিন শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে।
নিহত গৃহবধুর স্বজন ও পুলিশ জানায়, বছর খানেক আগে কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স এলাকার আজাদ হোসেনের মেয়ে শারমিনকে একই এলাকার সুমন হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শারমিনকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল স্বামী সুমন হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হত। মঙ্গলবার রাতেও দুইজনের মধ্যে ঝগড়া হয়।
নিহতের ফুফা বশির উল্যাহ সাংবাদিকদের জানান,যৌতুকের জন্য শারমিনকে শারীরিক নির্যাতন ও শ^াসরোধে হত্যা করে মৃতদেহ রেখে পালিয়ে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন। এতি একটি প্ররিকল্পিত হত্যাকান্ড। হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবী করেন তিনিসহ আরো নিহতের স্বজনরা। তবে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
চরলরেন্স ইউপি চেয়ারম্যান আহসান উল্যাহ হিরণ জানান,প্রায় এক বছর আগে পাশ্ববর্তী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে সুমন হোসেনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় শারমিন আক্তারের। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন শারমিন আক্তারকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন আবুল কাশেমের বাড়ীতে ওই গৃহবধুর ঝূলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকজন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী সুমন হোসেন ও পরিবারের লোকজন পলাতক থাকে। নির্যাতন করে হত্যার পর শারমিনের মৃতদেহ ঝূলিয়ে রাখা হয়েছে দাবি করছে পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন জানান, গৃহবধুর শারমিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এতি একটি হত্যাকান্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী সুমনসহ শ^শুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।