ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার ৫১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে একজন চিকিৎসক ডাঃ মতিনকে দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। অফিস নথিতে সাতজন ডাক্তার পোষ্টিং থাকলেও কেউ অন ডিউটিতে আসছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এতে ওই হাসপাতালের সরকারি অবকাঠামো, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি থাকা স্বত্ত্বেও কোনো উপকার আসছে না রুগীদের। ফলে উপজেলার সিংহভাগ রুগী চিকিৎসা সেবা গ্রহনের জন্য ছুটে চলেছেন জেলা শহরে। এ ব্যপারে বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাতজন ডাক্তার পোষ্টিং আছে। এদের মধ্যে ডেপুটেশনের আছেন দুইজন ডাক্তার। বাকী পাঁচজন ডাক্তার নিয়মিত ডিউটিতে আসেন না। কিন্তু কর্তব্যহীন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ক্ষমতা আমার নেই। আমি শুধু উর্দ্ধতনদের ডাক্তার উপস্থিতির বিষয়টি জানাতে পারি ”।
এছাড়া গত মঙ্গলবার উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা দিনভর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন,“হাসপতালে ডাক্তার না থাকার বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন মহোদয়কে বার বার অবগত করেছি। এমনকি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সভায় হাসপতালের সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি, কিন্তু সমাধান পাচ্ছি না”।
বুধবার দুপুরে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে জানা যায়, হাসপাতালের বহিঃবিভাগ, অন্তবিভাগ, দন্ত বিভাগ, গাইনী বিভাগ ও নাক কান গলা সহ সব ক’টি বিভাগ বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র আউটডোরে একজন চিকিৎসক ডাঃ মতিন সাধারন রুগীদের চিকিৎসাপত্র দিচ্ছেন। তিনি বলেন, “ অফিস নথিতে তিনি উপজেলা পদ্মা নদী চরে চরঝাউকান্দা ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকে পোষ্টিংরত। কিন্তু ওই কমিউনিটি ক্লিনিকটি পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার কারণে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসে ডিউটি সারছেন”। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩টি ডাক্তার পদের মধ্যে বর্তমান পোষ্টিংরত রয়েছেন ৭জন চিকিৎসক। এদের মধ্যে ডেপুটেশনে আছেন দুইজন ডাক্তার। বাকী পাঁচ জন ডাক্তারের মধ্যে অনুপস্থিত রয়েছেন চারজন চিকিৎসক। এরা হলেন- আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ রেজাউল করিম, দন্ত বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আইরিন সুলতানা ও গাইনী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ রেদওয়ানা পারভীন। হাসপাতালে সেবা গ্রহনকারী রুগীরা এসব পোষ্টিংরত চিকিৎসকদের কোনোদিন দেখেন নাই বলেও জানায়। জব্বার বেপারী (৪৫) নামক হাসপাতালের এক ভর্তি রুগী বলেন, “ প্রতিদিন সকালে শুধু একজন ডাক্তার রুগী ওয়ার্ডে এসে ঘুরে যান। এ ছাড়া অন্য কোনো ডাক্তারদের আমরা দেখি নাই। এ হাসপতালে জ¦র, ব্যাথা, গ্যাষ্ট্রিক ও কাঁটা ফাঁটা সহ সাধারন রুগীরাই চিকিৎসা নিতে আসেন। ডাক্তার সংকটে মরণঘাতি কোনো রোগের চিকিৎসা সেবা এ হাসপাতালে দেওয়া হয় না”।