শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতেই তাদের মাথায় এভাবে আকাশ ভেঙে পড়বে, এটা অভাবনীয়, অকল্পনীয়! আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের কারো কারো অতি সীমালঙ্ঘনের ফল এটি। দেশে আওয়ামী লীগের আদর্শবান নেতাদের সংখ্যা কম আছে কী? নানা কারণে যারা বরাবরই দলে কোণঠাসা হয়ে রয়েছেন। রাজনীতি এখন শুধু লেবাসে! কতিপয় অতি আবেগি চেতনাধারী, সুবিধাভুগী, চাটার দল ও লুটপাটকারী, দলের জন্য একটা ভোটও যাদের যোগাড় করার ক্ষমতা নেই। আজ তারাই চাঁদাবাজি, লুটপাট ও সন্ত্রাসী করে আওয়ামী লীগের যেটুকু সুনাম ছিল তাও ডুবিয়েছে।
সর্বসময়ই দেশে যারা ক্ষমতায় এসেছেন, রাজধানীর ফুটপাত, বাসস্ট্যান্ড, নৌ ও রেলপথের টার্মিনাল, শিক্ষা, গণপূর্ত, রাজউক, নৌপরিবহন অধিদপ্তরসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের দপ্তরগুলো নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জায়গা দখল, বাড়ি দখল, নদী দখল, ইত্যাদি নান অপকর্ম করেও ওদের পেট ভরেনি। সর্বশেষ, খেলার ক্লাব পরিচালনার নামে মাদক, মনোরঞ্জনের জন্য নারী ও ক্যাসিনো ব্যবসা খুলে বসেন ওই নেতারা। তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের অনেক নীতিবান, আদর্শবান নেতাকর্মীও হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন। আ.লীগের সর্বশেষ নীতিনির্ধারণী বৈঠকে দলের শুদ্ধি অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ক্যাসিনো ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করে বিপুল অবৈধ অর্থ উপার্জনসহ বদলে যাওয়া যুবলীগ, কৃষক লীগের একাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনও লাপাত্তা রয়েছে চিহ্নিত চাঁদাবাজ হাইব্রিডরা।
সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, এ যাবত যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের ‘বস’ ছিলো সম্রাট। তাদের ‘বখরা’ যেত সম্রাট পর্যন্ত। সম্রাটের মাধ্যমে বখরা এবং সুবিধাভোগ করতো হাইলেভেলের নেতা, সাংবাদিক, পুলিশ...! ক্যাসিনোর গোড়া হলো এই সম্রাট। তাকে নাড়লে ডালপালাও নড়ে উঠাসহ অনেক বিষয় ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়েই কি ধরা হবে না? তারমানে, যার বখরা যত উপর পর্যন্ত পৌঁছায়, সে তত বেশি নিরাপদ...!
সম্রাটকে যদি আজ গ্রেপ্তার করা না হয়, আওয়ামী লীগের জন্য এই ‘সম্রাট’ রীতিমতো ‘দৈত্যে’ পরিণত হবে। সম্রাট আওয়ামী লীগের মতো একটা জনপ্রিয় প্রাচীন দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের একজন নেতা মাত্র। আজ প্রমাণ হয়েছে, সে একজন আত্মস্বীকৃত চাঁদাবাজ, জুয়াড়ু, টাকা পাচারকারী, সন্ত্রাসী। তার মত একজন লোককে গ্রেপ্তার করতে এতো নাটক, দ্বিধাদ্বন্দ্ব, লালবাতি, সবুজবাতি! সরকারের প্রাণ যায় যায় অবস্থা! অথচ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজ দলের হলেও কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। একই প্রতিধ্বনি শোনা যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যেও। গতকাল ২ অক্টোবর এক বৈঠকে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তৃণমূলে নেতৃত্ব নির্বাচনে অপর্কমে জড়িতদের বাদ দেয়া হবে।’ কথা ও কাজে স্ববিরোধিতা প্রকাশ পাবে না বলেই আমরা মনে করি। আওয়ামী লীগের অবস্থা যেন এমন না হয়, ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’।