বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স। বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান ১২ শতাংশের মত। নানা রকম ঝামেলার কারণে প্রবাসীরা অবৈধ পথে বা হুন্ডির মাধ্যমে তাদের আয় দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু এবার বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো বৈদেশিক আয় বা রেমিটেন্সের বিপরীতে ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে অর্থাৎ এখন কেউ ব্যাংকে রেমিটেন্স পাঠালে ২ শতাংশ ইনসেনটিভ পাবে। অর্থাৎ ১ হাজার টাকা পাঠালে দেশে তাঁর অ্যাকাউন্টে যোগ হবে ১ হাজার ২০ টাকা, লাখে ২ হাজার টাকা। এছাড়া, আকেটি সুবিধা হলো- ১৫০০ ডলার পর্যন্ত রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে টাকার উৎস জানতে চাইবে না সরকার। কোনো কাগজপত্রও চাওয়া হবে না। তবে এর বেশি হলে কাগজ দিতে হবে। প্রতি ট্রানজেকশ ১ হাজার ৫০০ ডলারের মধ্য থাকলে, দিনে যতবার ইচ্ছে করতে পারবে। প্রতি ট্রানজেকশনের জন্য ২ শতাংশ পাবে। আমরা আশা করি এর মাধ্যমে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোয় আরও বেশি উৎসাহীত হবে।
এখনও প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক উপায় বা অবৈধ পথ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ ঘটনা বেশি ঘটছে এবং দেশগুলোতে দ্রুত অর্থ পাঠানোর সুবিধা ও কম খরচের কারণে মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতির ব্যবহার বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া বিনিময় হারের পার্থক্যের কারণে অর্থাৎ বিদেশ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং ও হুন্ডির মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠালে দেশে যে পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়, তার চেয়ে কম পাওয়া যায় বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠালে। সে জন্য অনেকেই ব্যাংকিং চ্যানেল এড়িয়ে অবৈধ উপায়ে দেশে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা দেখা যায়। ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান করার ফলে এ সমস্যার সমাধান হবে এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি ও হুন্ডি ব্যবসা নিরুৎসাহিত হবে বলে আমরা আশা রাখি।