যশোরের কেশবপুরে কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের বরনডালি ঘোচমারা বিলের দুই ট্রান্সফরমার গত বুধবার রাতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ঘোচমারা বিলের প্রায় ২’শ বিঘা জমির বোরো আবাদ। সম্প্রতি ওই বিলে আরও একটি সেচ প্রকল্প স্থাপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার জের ধরে এ ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসী ওই ট্রান্সফরমার চুরিকে রহস্যজনক বলে দাবি করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে উপজেলার বরনডালি গ্রামের মৃত গরিবুল্লাহ মোল্যার ছেলে গোলাম মোস্তফাসহ ৩ জন কপোতাক্ষ তীরবর্তী ঘোচমারা বিলে গভীর নলকুপ স্থাপন করে এলাকার শতাধিক কৃষকের প্রায় ২’শ বিঘা জমিতে আবাদকৃত বোরো ধান ক্ষেতে সেচ প্রদান করে আসছেন। পরবর্তীতে বর্তমান সরকার ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের নীতিমালা প্রনয়ণ করলে তাৎক্ষণিকভাবে গোলাম মোস্তফা কপোতাক্ষ নদ থেকে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে বিএডিসির পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিজ অর্থে ২টি ৩০ কেভি শক্তির ট্রান্সফরমার কিনে সেচ কার্য পরিচালনা করে আসছেন। সম্প্রতি একই গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে শাহিনুর রহমান সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে ৫’শ ফুটের মাথায় আরও একটি বিএডিসির নলকুপ নদে স্থাপনের জন্যে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিএডিসির সহকারি প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম সরেজমিনে তদন্তে আসেন। এতে গোলাম মোস্তফার সেচ প্রকল্পটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় তিনি গত ৩০ সেপ্টেম্বর শাহিনুর রহমানের সেচ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিএডিসি সেচ এর উপসচিব, যশোরের প্রকল্প পরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এলাকার কৃষক আক্তারুজ্জামান বুলি বলেন, ওই সেচ প্রকল্পের পানি দিয়ে স্থানীয় শতাধিক কৃষক ঘোচমারার বিলে পাট ও বোরো ধান উৎপাদন করে সারা বছর খেয়ে পরে বেঁচে থাকেন। গত বুধবার রাত ১২টার পর হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। এ সুযোগে চোরেরা সরসকাটি বাজারের পাশে স্যাখফুল্লাহর খাল সংলগ্ন খুটি থেকে ২টি ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে যায়। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ওই বিলের আসন্ন বোরো আবাদ।
সেচ মালিক শওকত মোল্যা বলেন, নীতিমালা লঙ্ঘন করে শাহিনুর রহমান সেচ পাম্পে সংযোগ নিতে চায়। এ কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার জের ধরে দেড় লাখ টাকা মূল্যের ওই ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর কেশবপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম আবু আনাস মো. নাসের বলেন, এলাকার শওকত মোল্যা নামে ওই সেচ প্রকল্প। চোরেরা বোয়ালিয়ার বিলের বিদ্যুতের খুটির কাটআউট খুলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে ওই চুরি সংঘটিত করেছে। ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানূর রহমান বলেন, সেচ নীতিমালার বাইরে কেউ সংযোগ পাবে না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।