সুজানগরে পেঁয়াজের ভাণ্ডারে পেঁয়াজ সংকট

এফএনএস (শেখ তৌফিক হাসান; সুজানগর, পাবনা) : : | প্রকাশ: ৫ অক্টোবর, ২০১৯, ০২:১৫ এএম : | আপডেট: ৫ অক্টোবর, ২০১৯, ০২:৩১ এএম

উত্তরাঞ্চলের মধ্যে পাবনার সুজানগর উপজেলাকে পেঁয়াজের ভাণ্ডার বলা হয়। এক‘শ ৯৮টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামে পেঁয়াজ আবাদ করা হয়। উপজেলার বড় চাষীরা ৫০থেকে ৬০বিঘা জমিতে এবং প্রান্তিক চাষীরা কমপক্ষে ১৫থেকে ২০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে থাকেন। প্রতি বছর বড় চাষীরা এক থেকে দেড় হাজার মণ এবং প্রান্তিক চাষীরা চার থেকে পাঁচ‘শ মণ পর্যন্ত পেঁয়াজ উৎপাদন করে থাকেন। ফলে এ উপজেলায় কখনও পেঁয়াজ সংকট হয়না। বরং এ উপজেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হয়। কিন্তু এ বছর শেষ মুহূর্তে পেঁয়াজের ভাণ্ডার খ্যাত এই সুজানগরেও পেঁয়াজ সংকট দেখা দিয়েছে। পৌর বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বাদশা বিশ্বাস বলেন দীর্ঘদিন পর এবার সত্যই উপজেলায় চরম পেঁয়াজ সংকট দেখা দিয়েছে। কেননা অন্যান্য বছর এ সময় উপজেলার হাট-বাজারে প্রতিদিন প্রায় ২/৩হাজার মণ পেঁয়াজ আমদানি হলেও এবার মাত্র ৭/৮‘শ মণ পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। আর সেকারণে বর্তমানে হাট-বাজারে ৮০/৯০টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ময়নুল হক সরকার জানান, প্রতি বছর উপজেলায় প্রায় ২লক্ষ ২০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। আর উৎপাদিত ওই পেঁয়াজ উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিক টন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হয়। এ বছরও উপজেলায় ২লক্ষ ১০মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কিন্তু জমি থেকে পেঁয়াজ উঠানোর প্রাক্কালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এতে কৃষক জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে ঘরে উঠানোর পর পর পচন ধরে। ফলে কৃষক মৌসুমের শুরুতেই অর্ধেক পেঁয়াজ বিক্রি করে দেয়। সেকারণে বর্তমানে হাট-বাজারে পেঁয়াজ সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বড় কৃষক কামরুজ্জামান বলেন আমি এ বছর প্রায় এক হাজার মণ পেঁয়াজ পেয়েছিলাম। পেঁয়াজে পচন ধরায় মৌসুমের শুরুতেই কমদামে বেশিরভাগ পেঁয়াজ বিক্রি করে দিয়েছি। বর্তমানে ঘরে তেমন পেঁয়াজ নেই। একই কথা বলেন মানিকহাট গ্রামের পেঁয়াজ চাষী ওমর আলী প্রামাণিক। তিনি জানান গত বছর মৌসুমের শেষ দিকেও তার ঘরে প্রায় ৪‘শ মণ পেঁয়াজ মজুদ ছিল। কিন্তু এ বছর পেঁয়াজে পচন ধরায় মজুদ রাখতে পারেন নাই। অনেক আগেই তিনি সব পেঁয়াজ বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে বর্তমানে মৌসুম শেষে হাট-বাজারে পেঁয়াজ সংকট দেখা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তবে পেঁয়াজ ক্রেতারা বলেন এখনও অনেক কৃষক অধিক লাভের আশায় ঘরে পেঁয়াজ মজুদ রেখেছেন। তারা ওই পেঁয়াজ মজুদ না রেখে হাট-বাজারে বিক্রি করলে সংকট কিছুটা কমে যাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিৎ দেবনাথ বলেন পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনে মজুদদারদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

 

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW