দেশের একজন মানুষও ভূমিহীন থাকবে না বর্তমান সরকারের এ নীতির সমর্থনে গৃহহীন মানুষকে পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় বেহাত হওয়া খাসপুকুরের জমি উদ্ধার করে ৫৫শত এর অধিক ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এতে ঠিকানাহীন গৃহহীন, ভূমিহীন, ছিন্নমূল মানুষেরা পেয়েছে নতুন ঠিকানা। ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার মহিষডোবা পুকুর এবং পার্শ্ববর্তী বালিয়াদীঘি দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে ছিল। ওই ২ খাস পুকুরের পাড়ে গড়ে উঠেছে একটি নতুন বসতি। এখানে ২৫শত এর অধিক ছিন্নমূল, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার সরকারি টিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ পেয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। এখানকার বাসিন্দা মুফতি হাফিজুর রহমান,লাকি বেগম ও আ: মজিদ বলেন, আমরা আগে নেকমরদ বাজারের বাগানবাড়িতে বসবাস করছিলাম। কিছুদিন পূর্বে সরকার ওই হাটের জমি উদ্ধার করে নেয়।আমরা শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসন আমাদের মহিষডোবা ও বালিয়া পুকুরে পুনর্বাসন করে। একইভাবে ঘনশ্যামপুর গ্রামের খাস পুকুরের ধাড়ে দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জমি পেয়ে আদিবাসীরা মাথা গোজার ঠাঁই খুজে পেয়েছেন। ইতোমধ্যে সেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য মন্দিরের ব্যবস্থা করেন।
বরাদ্দ পাওয়া আদিবাসী শুকরা পাহান এবং ময়না পাহান বলেন, আগে মানুষের জমিতে থাকতে গিয়ে বিভিন্নভাবে মানুষের কটুকথা সহ্য করতে হতো। জমি পাওয়ায় সেই ভাবনা এখন আর থাকল না। সেজন্য সরকার ও এসিল্যান্ড স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রাউতনগর গুচ্ছগ্রাম, বাসনাহার গুচ্ছগ্রাম, মানিকা দিঘী গ্রচ্ছগ্রাম, মলানীদিঘী গুচ্ছগ্রাম ও রন্ধনদিঘী পাড়ে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। এসব গুচ্ছগ্রামে ২কয়েক’শ জন ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। জমি ও ঘর পাওয়ার পরও ভূমিহীনদের যে স্বপ্ন অপূর্ণ ছিল- বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে তা পূর্ণ হয়েছে।এছাড়াও উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা সম্প্রতি উপজেলার মহিষডোবা পুকুরপাড়ে মুসলমানদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করেন।
রাণীশংকৈল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য চলতি বছর ঘনশ্যামপুর, মহেষপুর, ব্রহ্মপুর, করনাইট গ্রামের ২পুকুরপাড়ের ২০ কয়েক একর জমি স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া জমিতে কয়েক’৩শ ৬০ভূমিহীনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। সরকারি খরচে বাড়িঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য গুচ্ছগ্রামের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাণীশংকৈল উপজেলা এলাকায় প্রায় ৩৪ ৩৬ একর খাস জমি অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে যার বর্তমান বাজার মূল্য১৪১৪কোটিরও বেশি।এরমধ্যে নেকমরদ বাজারের ৫ খাসজমিও দখলমুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, বর্তমান সরকার চান দেশের কোন মানুষ যেন গৃহহীন না থাকে। এই নীতির আলোকে ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল৫ উপজেলায় বেহাত থাকা খাস জমি উদ্ধারের কার্যক্রম চলছে। এরই অংশ হিসেবে রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ হাট এবং বিভিন্ন পুকুরের কৃষি ও অকৃষি মিলে প্রায় ৩৪ কয়েকএকর খাস জমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এসব জমিতে আমরা আশ্রয় প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম এবং জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন মানুষকে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি। রাণীশংকৈল উপজেলা এসিল্যান্ড সোহাগ সাহার নেতৃত্বে এসব জমি উদ্ধার করে স্থানীয় দুঃস্থ অসহায় ও ভূমিহীন মানুষকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। আশা করছি রানীশংকৈল উপজেলায় কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না।
রাণীশংকৈলে অশ্রুশিক্ত শ্রদ্ধায় আলী আকবর এমপির মৃত্যু বার্ষিকী পালিত
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)সংবাদদাতা ঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে গণমানুষের অশ্রুশিক্ত শ্রদ্ধায় মরহুম আলী আকবর এমপির ২৬ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়। ১৯৯৩ সালের ৪ অক্টোবর তিনি মৃত্যু বরণ করেন। এ উপলক্ষে শুকুবার সকাল থেকে সারাদিন ব্যাপী দলীয় কার্যালয়, রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ, কেন্দ্রীয় টাউন ক্লাব, মসজিদ, মন্দির সহ বিভিন্ন স্থানে এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে বিকালে প্রগতি ক্লাবে মিলাদ মাহফিল, দোয়া খায়ের ও আলোচনা সভা হয়। ক্লাব সভাপতি মিঠুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত ৩০১ আসনের সাবেক এমপি মোছাঃ সেলিনা জাহান লিটা, উপজেলা আ.লীগ সভাপতি অধ্যাপক মোঃ সইদুল হক, অধ্যাপক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, মোঃ জমিরুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক জীবনের ত্যাগ স্বীকার করে রাণীশংকৈলে মাটি মানুষের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মরহুম আলী আকবর এমপি। তিনার রাজনৈতিক শিক্ষা অনুসরন করে চললে আমরা জীবনে অনেককিছু করতে পারব। সুখ-দুঃখের ভাগিদার হয়ে সব মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। ভালবাসার টানে উপাধি পান রাণীশংকৈল উপজেলা বাসির প্রাণ পুরুষ। ভক্তকুলের মুখে উঠে আসে “ তোমার মুক্ত মানসিকতার রাজনৈতিক আদর্শ বেঁচে থাকবে সহস্র বছর”। উপজেলা বাসির রাখাল রাজা উপজেলা আ.লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনার মৃত্যুর ২৬ বছর পরেও মানুষের মনে ভালবাসার ফুল ফুটিয়ে রেখেছেন নিঃখাদভাবে। তিনি রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজের স্বপ্নদ্রষ্টা ও এলাকার মানুষের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন।