যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরা পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে হাবিবুর রহমান (২৩) নামে এক যুবককে ইয়াবা দিয়ে চালান দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই যুবকের পিতা শহিদুল ইমলাম।
সংবাদ সম্মেলনে শহিদুলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার মেয়ে ফারিয়া সুলতানা ময়না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হাবিবুর রহমানের মা পারুল বেগম ও হাবিবুরের দুই ভাই মাহবুব ও জিসান আহমেদ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমি অত্যন্ত গরিব ও ফুটপাথের হোটেল ব্যবসায়ী। আর্থিক সমস্যার কারণে কর্মচারী রাখতে না পারায় আমি, আমার ছেলে এবং স্ত্রী মিলে বাঘারপাড়ার খাজুরা বাজারে একটি ক্ষুদ্র খাবার হোটেল চালায়। গত ১৫ অক্টোবর আমার ছেলে হাবিবুর রহমানকে (২৩) গ্রামের বাড়ি ইন্দ্রায় পাঠাই বর্গা জমিতে সেচ দেয়ার জন্য। এদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্য খাজুরা বাজার তেলপাম্পে পৌঁছালে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলামের নির্দেশে সহকারী এএসআই হযরত আলী আমার ছেলেকে আটক করে।
খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জের সাথে আমার একটি পুরনো সোফা সেট কেনা নিয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। কয়েক দিন আগে আমার দোকানের পাশের ফার্নিচার ব্যবসায়ী লিটন সোফা সেটটি বিক্রি করার কথা বললে আমি প্রতিবেশী ব্যবসায়ী হওয়ায় কমমূল্যে সেটি কিনে নিই। সেদিন রাতে ক্যাম্প ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম আমাকে ফোন করে ক্যাম্পে যেতে বলে। আমি যেতে না চাইলে তিনি বলেন, সোফা সেটটি আমি নিচ্ছি। এ ব্যাপারে কোন কথা বললে ফল ভালো হবে না। আমি বিষয়টি আমলে না নেয়ায় তিনি রাগের বশবর্তী হয়ে আমার নির্দোষ ছেলেকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে বেদম মারপিট করেন। এ সময় ইনচার্জের মোবাইলে ভিডিও অন করে আমার ছেলের হাতে ৫০ পিস ইয়াবা দিয়ে সে ব্যবসায়ী ও সেবনকারী হিসেবে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়েও রাতভর তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় পুলিশ।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, পরদিন সকালে থানায় গেলে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন ও খাজুরা ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম থানার বকশী নাছিমার মাধ্যমে আমাকে সিড়ির নিচে ডেকে নিয়ে এক লাখ টাকা দিলে আমার ছেলেকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানায়। আমি গরিব মানুষ। আমার পক্ষে এত টাকা দেয়া সম্ভব না হওয়ায় আমানুষিক নির্যাতন করে আমার নিরীহ ছেলেকে মিথ্যা মাদক মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। আমার এবং আমার ছেলে সম্পর্কে এলাকার কোনো লোকই খারাপ বলতে পারবে না। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এ বিষয়ে জানার জন্য খাজুরা পুলিশক্যাম্প ইনচার্জের ফোনে কয়েকদফা যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে বাঘারপাড়া থানার ওসি জসিমউদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে ওঠানো অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ওসি বলেন, ওই ব্যক্তিকে ক্যাম্প ইনচার্জ ইয়াবাসহ আটক করেন। তাকে আদালতে চালান দে হয়েছে। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বাঁচার জন্য নানা ধরনের মিথ্যা কথা বলেই থাকে।