দীর্ঘ ১০ বছর দরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দলের গণতান্ত্রিক ও তৃণমূলের ভোটের মাধ্যমে কোন কমিটি গঠন করা হয়নি। এ কারণে দলে কোন নেতৃত্ব সম্পন্ন ব্যক্তি গঠে উঠেনি। হজবরলভাবে চলছে নাম খোয়াস্তে কমিটি। ওদিকে কোম্পানীগঞ্জ ও সদর উপজেলায় শত শত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজগুলো বেস্তে গেছে। মওদুদ আহমেদ সদর উপজেলা কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মক্তব, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছিলেন। কিছু কিছু নেতার কারণে এ সমস্ত উন্নয়ন কাজগুলো আলোচনা সমালোচনার বাহিরে চলে গিয়েছে। অপরদিকে মওদুদ আহমদের নির্বাচনে কিছু কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করে ভোটের সময় কেন্দ্রেই আসে নাই। এরা বর্তমানে আবার কমিটিতে ঢুকার জন্য বিভিন্ন প্রকার দেন দরবার করছেন। যোগ্যতা নেই, অর্থ নেই এমন নেতার পিছনে থাকতে রাজি নয় তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনার বিষয় কে হচ্ছেন নতুন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক। এদিকে কমিটি ঘোষণা নিয়ে জটিলতা যেন পিছু ছাড়ছে না বিএনপির। কমিটি চূড়ান্ত করার ঘোষণা আসার সাথে সাথেই সৃষ্টি হয়েছে নতুন জটিলতা। বলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত ও উপিেক্ষত তৃণমূল নেতৃবৃন্দের শূণ্য দৃষ্টি পড়েছে এ নেতৃত্বের ওপর। যখনি কমিটি ঘোষণার প্রস্তুতি নেয়া হয় তখনি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ না কেউ বাগড়া বসান। নানা নাটকীয়তার পর ২০১০ সালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ আবদুল হাই সেলিমকে সভাপতি ও নুরুল আলম শিকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হলেও নানা জটিলতায় কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। ২০১০ সালে গঠিত কমিটিই এখন পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার কথা আলোচনায় আসলে শুরু হয় পদ প্রত্যাশীদের তোড়জোড়। সাথে যুক্ত হয় তৃণমূল নেতাদের পছন্দ অপছন্দ। তৃণমূল নেতাদের মতে দীর্ঘদিন তাদের প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করে স্থানীয় বিএনপির অভিভাবক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ তাঁর পছন্দমত লোকদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এ ধরনের সিদ্ধান্ত দলকে আন্দোলন সংগ্রাম ও ভোটের রাজনীতিতে অনেকখানি পিছিয়ে দিয়েছিল। এবার সেই ধারাবাহিকতায় অবসান চান তাঁরা। তাদের পছন্দের প্রতিফলন চান তারা। তৃণমূল নেতাদের দাবী এবার অন্তত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কমিটি গঠন করা হোক। যেহেতু দল এখন অস্তি¡ রক্ষার্থে লড়াই করে যাচ্ছে সেহেতু দলকে চাঙ্গা করতে পারে এমন কাউকে দায়িত্ব দেয়া হোক। যাতে করে পুণরূদ্ধার করা যায় বিএনপির পুরানো ঐতিহ্য ও সুনাম। অনেকের সাথে আলাপ করে এ দুটি পদে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, সভাপতি পদে পৌর বিএনপির বর্তমান সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপির নেতা হুমায়ুন কবির পলাশ। সম্পাদক পদে যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন, উপজেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম শিকদার। উপজেলা যুবদলের সভাপতি আবদুল মতিন লিটন ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, যুবদল সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন। নোয়াখালী জেলা কৃষক ও তাঁতী, উপকূলীয় অঞ্চল উন্নয়নের সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান (চরএলাহী) আবদুল মতিন তোতা জানান, আমি ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদকে মতামত দিয়েছি। উনি যেন আমাদেরকে উপজেলায় ও পৌরসভায় যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে সভাপতি ও সম্পাদক পদে নিয়োজিত করেন। আমি আরও বলেছি দীর্ঘ দিন দরে অত্যাচার, অনাচার সহ্য করে মওদুদ আহমদের পিছনে রাজনীতি করিয়া আসিতেছি। এতে করে স্যার যেন আমাকে ভালো একটি পদ দেন।
বিএনপির নেতা হুমায়ুন কবির পলাশ জানান, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এবং আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নাই। তিনি আমাকে যদি যোগ্য মনে করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে নির্বাচিত করেন, তাহলে আমি তৃণমূল থেকে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক ও তাঁতী দল কে অর্থ ও রক্ত দিয়ে হলেও খুবই দ্রুত প্রতিষ্ঠিত করিব। এতে দেশনেত্রী বেগম খালেজা জিয়া ও ব্যারিষ্ট্যার মওদুদ আহমদের হাত অনেক অনেক শক্তিশালী হবে। যেখানে মওদুদ, সেখানে পলাশ, মওদুদের সকল উন্নয়নের কর্ম আমার জানা আছে।
আমরা বলছি সম্ভব হলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি করার জন্য এবং এতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা শক্তিশালী হবে। তবে তিনি যদি তাঁর মতো করে কমিটি গঠন করে দেন তাহলেও আমাদের কোন আপত্তি নেই।
একই কথা বলেছেন, ৮নং চরএলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইসমাইল হোসেন জানান, আমাদের চাওয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করা হোক। কিন্তু ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ তাঁর নিজের মতো করে কমিটি গঠন করলে কোন আপত্তি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু দলের অভিভাবক ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ সেহেতু উনি যেটি ভালো মনে করবেন সেটিই করবেন। এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। এদিকে সম্মেলন বিষয়ে হুমায়ুন কবির পলাশ, নুরুল আলম শিকদার, আবদুল মতিন লিটন, মাহমুদুর রহমান রিপন, জেলা কৃষক দলের সভাপতির সাথে আলাপ করলে তারা জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। উনি যা ভালো মনে করবেন তাই করবেন। এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।