উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ ছয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ পদে ভারপ্রাপ্ত দিয়েই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম। ফলে এই উপজেলার সরকারি সকল সেবা প্রদানে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
ঋারপ্রাপ্ত পদগুলো হলো- আদিতমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, উপজেলা সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ইউএনও আসাদুজ্জামান গত ১২ সেপ্টেম্বর বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত ইউএনও’র দায়িত্ব পালন করছেন সদর উপজেলার ইউএনও জয়শ্রী রানী রায়। দুই উপজেলার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম থেকে শুলু করে যাবতীয় কাজের তদারকি করতে অনেকটা হাঁপিয়ে উঠেছেন জয়শ্রী রানী রায়। তবে একা হলেও দুই উপজেলাতেই নিজ দায়িত্ব পালনে নিয়মিতই চষে বেড়াচ্ছেন তিনি।
২০১১ সালের ১৬ মার্চ বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খালেদুর রহমান। এরপর থেকেই শূন্য রয়েছে পদটি। দীর্ঘ আট বছর ধরে জোড়াতালি দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ভূমি অফিসের উন্নয়ন কর আদায় ও নামজারিসহ অনেক গুরুত্ব কাজ গুলো। ফলে ভূমি জটিলতা নিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় ভূমি মালিকদের।
নামজারির মতো জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে শুরু করে সব ধরনের সেবা নিতে দিনের পর দিন ঘুরতে হয় উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ভূমি মালিকদের। তবে গত ০১ অক্টোবর থেকে এই পদে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পান সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিআর সরওয়ার। নিজ অফিসের ব্যস্ততায় দায়িত্বের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত আতিদমারী উপজেলা এ অফিসে বসতে পারেননি তিনি।
গত ১৯ তারিখ বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানাও। এরপর থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম। বর্তমানে সিনিয়র পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম একাই পালন করছেন ওসি-তদন্ত এবং ওসি-অপারেশনের দায়িত্ব।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শওকত আলী খন্দকার গত ৫ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে অবসর নিলে পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। এ পদে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করছেন পাটগ্রাম উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার প্রথম ধাপের কাজটি করে থাকেন উপজেলা কানুনগো। গত ২০১৭ সালের আবদুল কাইয়ুম বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করছেন কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো আবদুর রশিদ।
একইসঙ্গে প্রায় দেড় যুগ ধরে শূন্য রয়েছে সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা পদটিও। সব মিলে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ উপজেলার সাধারণ মানুষকে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও, ভারপ্রাপ্ত) জয়শ্রী রানী রায় বলেন, তার একার পক্ষে সব দেখা তো সম্ভব নয়। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) এ উপজেলার ভূমি অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
একা হলেও দুই উপজেলার জনগণকে সরকারী সকল কাক্সিক্ষত সেবা দিতে চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, শূন্য পদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত অবগত করা হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুতই নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে।