আগাম জাতের ধান ঘরে তুলে সেই জমিতে আলু চাষ করে লাভবান হওয়ায় আশায় এবারও আলু চাষের জন্য জমি প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলার বাগজানা, ধরঞ্জী, রতনপুর, নন্দইল, তাজপুর, আয়মারসুলপুর, কড়িয়া, কেশবপুর, নওয়ানাসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় কৃষকরা আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের গঙ্গাঁপ্রসাদ গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম বলেন, বাজারে যার আলু যত আগে উঠবে, তার লাভ তত বেশি। এবার আবহাওয়া অনুকূল। বীজের দামও কম। প্রয়োজনীয় সারের সরবরাহও স্বাভাবিক। তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু রোপন করছেন। একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম ১ একর জমিতে আগাম আলু চাষের প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রতি বিঘা জমিতে আগামজাতের আলু রোপনে খরচ হচ্ছে ১৫-২০ হাজার টাকা। বিঘায় আলু উৎপাদন হবে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ মন। বাজারে আগে আলু তুলতে পারলে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হবে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা মণ দরে। এতে বিঘা প্রতি আলু বিক্রি করে খরচ বাদে লাভ পাওয়া যাবে ৩০ হতে ৩৫ হাজার টাকা। ধরঞ্জী ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর গ্রামের আলু চাষী মতিউর রহমান জানান, ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে আলু তোলা যায় বলেই কৃষকদের আলু চাষে আগ্রহী বেশি। খোর্দ্দা এলাকার আলু চাষী স্বপন শাহা গতবছর পাঁচ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করে ভালো দাম পাওয়ায় এবার দ্বিগুণ জমিতে আলু আবাদের প্রস্তুুত নিচ্ছেন।
বর্তমান সময়ে গ্রামাঞ্চলে কোন কৃষি কাজ না থাকা আগাম জাতের আলু চাষের কারণে শ্রমিকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি এ কাজে নারী শ্রমিকরাও অংশগ্রহণ করছে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা শ্রম মূল্য বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুরুষ শ্রমিকদের দিন হাজিরা হিসাবে ৩শ টাকা করে দেওয়া হলেও নারী শ্রমিকদের ২শ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকরা জানায়, আগে এ সময়টা কোন কাজ থাকতো না। এখন আগুর (আগাম) আলু চাষ হওয়ায় কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, উপজেলায় এবার ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অধিক দামের আশায় কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদে নেমে পড়েছে। আগামি জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর মাসেই এই আলু বাজারে পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।