প্রতিবাদ-বিক্ষোভে আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে মণিরামপুরের প্রগতি ডিজিটাল-ডি ল্যাব এ- রিজু হসপিটাল। কথিত এই প্রতিষ্ঠানে নার্স-কর্মচারীরা ৬ মাসের বেতনের পাওনা টাকার জন্য মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে নিজ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তালাবদ্ধ করে আটক রাখার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ঘর মালিক পক্ষ ঘর ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের প্রায় ২ লক্ষ পাওনা টাকার কারণে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করেন। অপরদিকে প্রতিবাদকারী নার্সরা গোপন তথ্য ফাঁস করে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠান মালিকের স্ত্রী অবৈধভাবে রোগীদের আল্টাসনোগ্রাফী করে থাকেন। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নার্সদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভসহ অন্যান্য ঘটনা ঘটে।
জানাযায়, ইতঃপূর্বে নানা অঘটনের অভিযোগে যশোরের সিভিল সার্জনের নির্দেশে মণিরামপুর পৌর এলাকার মোহনপুর বটতলা নামক স্থানে অবস্থিত প্রগতি ডিজিটাল-ডি ল্যাব এ- রিজু হসপিটালের কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা হয়। অবশ্য অজ্ঞাত কারণে কিছুদিন পর ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে মালিক উপজেলার নেহালপুর এলাকার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ নামের ব্যক্তি।
২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মালিককে নিজ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন তথ্য জানার পর গণমাধ্যম কর্মীরা সরেজমিনে যায়। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠানের নার্স রিক্তা খাতুন, মনিরা খাতুন, সোনিয়া খাতুন, সুরাইয়া বেগম এবং আয়া কমলা রাণী তাদের মালিককে তালা মেরে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তারা ৬ মাসের বেতন বাবদ ৮১ হাজার ৩’শ টাকা পাবেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেতনের টাকা না দেয়ায় অনেক কষ্টে দিন অতিবাহিত হচ্ছে তাদের।
এ সময় প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর স্ত্রী পলি বেগমকে সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায়। এক পর্যায় নার্স-কর্মচারীদের সাথে মালিকের স্ত্রী বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এ সময় এ প্রতিবেদকের সামনে নার্স মনিরা খাতুনসহ অন্যান্যরা বলেন, কোন প্রকার অভিজ্ঞতা না থাকলেও মালিকের স্ত্রী পলি বেগম প্রতিষ্ঠানে এসে রোগীদের আল্ট্রাসনোগ্রাফীর রিপোর্ট করে থাকেন। এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পলি বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি চুপচাপ ছিলেন। একপর্যায় মুহুর্তের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন ঘর মালিক সাবেক ইউপি মেম্বর ব্যবসায়ী নূর ইসলাম গাজীর স্ত্রীসহ কয়েকজন। তিনি প্রতিবাদ কন্ঠে প্রকাশ্যে বলেন, ক্লিনিকের ব্যবসা করার জন্য ঘর ভাড়া দিয়ে চরমভাবে তাদের পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন ক্লিনিক মালিকের কাছে তাদের ঘরভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।
ঘর মালিক ব্যবসায়ী নূর ইসলাম গাজী বলেন, চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে তার পাওনা টাকা না পেলে প্রতিষ্ঠানে তালা লাগানো হবে। এদিকে ঘটনার সময় ওই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অপারেশন করাসহ কয়েকজন রোগী ভর্তি এবং তাদের স্বজনদের দেখা যায়। ভর্তি রোগীদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপস্থিত সকল নার্সরা বলেন, রোগীদের দেখা শোনা মালিক করবে। তারা আর ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করবেন না। এক পর্যায় তারা বেতনের পাওনা টাকার জন্য ওই প্রতিষ্ঠান থেকে মালিকের ফ্রিজসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যেতে তা জড় করতে থাকেন।
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে নার্সরা কর্তৃক তালাবদ্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে তার স্ত্রী পলি বেগম নার্সসহ অন্যান্যের পাওনা টাকা পরিশোধ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান।