সিংড়ার চাঞ্চল্যকর শিশু হেদায়েত আলী হত্যার মূল আসামি সৎ ভাই মোঃ ইছহাক আলী ওরফে সুবোল কে গ্রেফতার করেছে সিংড়া থানা পুলিশ। এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে আসামি মোঃ ইছহাক আলী ওরফে সুবোল। এর আগে গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়া এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আর গত জুন মাসের ১৪ তারিখে সিংড়া থানার শেরকোল ইউনিয়নের পুঠিমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ হেদায়েত আলী (১০) তার সৎ ভাই মোঃ ইছহাক আলী ওরফে সুবোল এর হাতে খুন হয়।
পরিবারের লোকজন এবং এলাকাবাসী জানায়, নিহত শিশুর পিতা আবদুল কাদের প্রামানিক তার বসতবাড়ির জমি কনিষ্ঠ ছেলে মোঃ হেদায়েত আলীর নামে হস্তান্তর করে দেয়ার জন্য মনস্থির করেন। এতে তার পিতার সাথে আসামি ইছাহাক আলী এর বিবাদের সূত্রপাত হয়।
এর জেরে ধরে আসামি তার সৎ ভাইকে ঘুমন্ত অবস্থায় শাবল দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন এবং এলাকাবাসীর সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার দিনই দুপুর ১২টার দিকে শিশু হেদায়েত আলী মৃত্যুবরণ করে।
সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ জামিল আকতার জানান, হত্যা সংবাদটি থানায় দেরিতে আসায় আসামি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তাকে ধরার জন্য আমরা চেষ্টা অব্যাহত রাখি। তার গতিবিধি আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করি।
গত তিন মাস যাবত আসামি রাজশাহীর চারঘাট এলাকা, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা এবং যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় ঘনঘন অবস্থান পরিবর্তন করে। নিহতের পরিবারের লোকজন আমাদেরকে সুস্পষ্ট তথ্য দিতে না পারায় আমাদেরকে বেশ বেগ পেতে হয়। তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামীর সাথে যোগাযোগ হয় এমন একজনকে আমরা সনাক্ত করি।
এই সূত্র ধরে গত ২৩ তারিখে অভিযান পরিচালনা করি এবং রাজধানীর সূত্রাপুর থানাধীন ধোলাইখাল এলাকায় অবস্থিত মানিক মোটরসের দোকানের কর্মী বোরহানউদ্দিন সুমনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসি। তার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আসামি যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইল ও শনিরআখড়া এলাকায় রিক্সা চালায়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমরা অভিযান পরিচালনা করি এবং গত ২৪ তারিখে শনিরআখড়া এলাকার ছনটেক স্থানের এক গোডাউন ঘরের সামনে থেকে তাকে আমরা গ্রেপ্তার করি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আমাদের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে আসামি মোঃ ইছহাক আলী ওরফে সুবোল।
এই শিশু হত্যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তবে তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি বিরাজ ফিরেছে।।