যশোর জেনারেল হাসপাতালের অপারেশন কক্ষে রোগীদের জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে পরিচ্ছন্ন কর্মী কৃষ্ণ দেবসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে। অপারেশনের জন্য ওয়ার্ড থেকে রোগী আনতে টাকা, রোগী ফেরত পাঠাতে টাকা। সন্তান হলে মিষ্টি খেতে টাকা। তাদের চাহিদা মতো এ টাকা দিতে না পারলে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। এমনকি টাকা দিতে অস্বীকার করলে রোগীর সাথে মারমুখী আচারণ করেন কৃষ্ণ দেবের সহযোগীরা। হাসপাতাল প্রশাসনের ব্যর্থতায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে রোগীর স্বজনরা অভিযোগে জানিয়েছে।
২২ অক্টোবর যশোর শহরের বেজপাড়া তালতলা এলাকার মৃত আবুল কালাম হাওলাদারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক বিভিন্ন টেস্টের পর রোগীকে জানান, তার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। তাকে অপারেশন করাতে হবে। রোগীর পরিবারের অর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সরকারি হাসপাতালে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২৬ অক্টোবর সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতারের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অজয় কুমার সরকার তাকে অপারেশন করেন। এরপর রোগীকে ট্রলিযোগে অপারেশন কক্ষের সামনে নিয়ে আসেন পরিচ্ছন্ন কর্মী কৃষ্ণ দেব। রোগীর স্বজনরা ট্রলি ওয়ার্ডে নেয়ার চেষ্টা করলে কৃষ্ণ দেব বাধা দেয় ও পাঁচশ’ টাকা বকশিস দাবি করেন। রোগীর স্বজনরা জানান, তারা দরিদ্র পাঁচশ’ টাকা দেবার মতো তাদের ক্ষমতা নেই। এতে কৃষ্ণ দেব ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, টাকা ছাড়া রোগী অপারেশন কক্ষ থেকে ছাড়ার কোনো নিয়ম নেই।
রোগীর মেয়ে নাসিমার অভিযোগ, তারা দরিদ্র তাই সরকারি হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু পদে পদে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে ওয়ার্ড বয়রা। পাঁচশ’ টাকার জন্যে অপারেশন কক্ষের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ট্রলি আটকে দেন। পরে অন্য রোগীর কাছ থেকে দুইশ’ টাকা ধার করে তাদের দিয়েছেন। তারপর রোগীকে ছাড়েন তারা।
এ ব্যাপারে তিনি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে নাছিমা জানিয়েছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া তার করার কিছুই নেই।