শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি না থাকলেও এমপিও ভুক্তির তালিকায় নাম এসেছে জামালপুর সদরের দিপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের কৃষি ডিপ্লোমা শাখার। স্বীকৃতি না থাকা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তির তালিকায় থাকায় আচার্য হয়েছেন গভর্নিংবডির সভাপতিসহ কলেজ সংশ্লিষ্টরা।
জানাযায়,জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের সংযুক্ত দুটি শাখার মধ্যে একটি এইচএইসসি (বিএম) শাখা অপরটি কৃষি ডিপ্লোমা শাখা। এইচএসসি (বিএম) শাখা এমপিওভুক্তির জন্য জামালপুর-৫ সদর আসনের সংসদ সদস্য কলেজ গভনির্ং বডির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর হোসেন এমপি তিনি গত চলতি বছরের ২৭ মে বিএম শাখার জন্য ডিও লেটার প্রদান করেন। এই শাখার অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি আছে এবং ফলাফল সন্তোষজনক। পাসের হার শতকরা ৮৭%। এইচএসসি (বিএম) শাখার ৩টি ট্রেডে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে বর্তমানে ২৪৬ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে এই শাখায় কর্মরত আছেন ৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী। গত ১৪ বছর ধরে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীরা এমপিওভুক্তি না হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাই তাদের মানবেতর জীবন যাপনের কথা বিবেচনা করে সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর হোসেন এমপিও ভুক্তির জন্য ডিও লেটার প্রদান করেন। কিন্তু এমপিও ভুক্তির তালিকায় এইচএসসি বিএম শাখার নাম নাই। অখচ এমপিও তালিকায় নাম এসেছে দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের কৃষি ডিপ্লোমা শাখার। কৃষি ডিপ্লোমা শাখার শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৪ জন। কৃষি ডিপ্লোমা শাখার শিক্ষক কর্মচারী নাই। নাই অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতিও। এই শাখা এমপিও ভুক্তি করার জন্য সংসদ সদস্য কোনো ডিও লেটারও দেননি। বেনবেইজের সঠিক তথ্য যাচাই-বাচাই না করেই কৃষি ডিপ্লোমা শাখা এমপিও ভুক্তি করা হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি না থাকলেও এমপিও তালিকায় নাম দেখে আচার্য হয়েছেন দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজ সংশ্লিষ্টরাসহ সদর আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর হোসেন। অপরদিকে এইচএসসি বিএম শাখার কম্পিউটার অপারেশন, হিসাব রক্ষণ ও সেক্রেটারিয়াল সায়েন্স ৩টি ট্রেডে শতভাগ যোগ্যতা থাকার পরেও এমপিও ভক্তি না হওয়ায় এলাকায় চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। জামালপুর-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে ৬ দশমিক ১৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি বিস্তীর্ণ এলাকার দরিদ্র মানুষের সন্তানদের মাঝে শিক্ষা প্রসারে ব্যাপক অবদান রাখছে।
এই কলেজে এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখার প্রভাষক মোহাম্মদ মকবুল হোসেন, প্রভাষক মোহাম্মদ তাজুল ইসাম ও প্রভাষক একেএম হুমায়ুন শরীফ জানান, তারা ৩ জনসহ ৭ জন শিক্ষক কর্মচারী ২০০৫ সালের ১২ জানুয়ারি যোগদান করেন। যোগদানের পর শিক্ষক কর্মচারীদের দিনরাত পরিশ্রমে এই শাখার ফলাফল সন্তোষজনক। এমপিও ভুক্তি না হওয়ায় তারা চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
অপর দিকে দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মহির উদ্দিন তালুকদার জানান, কৃষি ডিপ্লোমা শাখার শিক্ষক কর্মচারী নাই। নাই অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতিও। বর্তমানে ৪ জন শিক্ষার্থী আছে। কিভাবে এই শাখা এমপিও হলো সেটা তার জানা নাই।
জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর হোসেন এমপি জানান, এইচএসসি বিএম শাখা এমপিও করতে তিনি ডিও লেটার তিনি দিয়েছেন। কিন্তু এমপিও ভুক্তি তালিকায় নাম এসেছে কৃষি ডিপ্লোমা শাখার। তিনি বিএম শাখা এমপিওর তালিকায় উঠাতে গত ২৪ অক্টোবর পুনরায় ডিও লেটার প্রদান করেছেন বলে জানান।
এইচএসসি (বিএম) শাখা এমপিও করতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমন প্রত্যাশা দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজ সংশ্লিষ্টদের।