যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কুন্দিপুর গ্রামের হুমায়ুন কবির হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার চার্জশিটের উপর নারাজি আবেদনের শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসু এই নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ঝিরগাছার কুন্দিপুর গ্রামের আবদুর রজ্জাকের সাথে দীর্ঘদিন ধরে ফজলুর রহমানসহ অন্যান্যের বিরোধ চলে আসছিল। ২০১৫ সালের প্রথম দিকে আবদুর রাজ্জাক বাড়িঘর ভাংচুরের অভিযোগে ফজলুল রহমানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আসামিরা বাদীকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। গত ২২ জানুয়ারি বিকেলে আবদুর রাজ্জাকের ভাতিজা হুমায়ুন কবির পাঁচপোতা বাজারে যায়। রাতে বাড়ি না ফেরায় খোজাখুঁজি করেও হুমায়ুনকে পাওয়া যায়নি। পরদিন গভীররাতে পাঁচপোতা সড়কের নিয়ামত আলীর কলাবাগান থেকে হুমায়ুনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের ভাই আওরঙ্গজেব বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে ঝিকরগাছা থানায় মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলো, ফজলুর রহমান, হাফিজুল হক ঝন্টু, বাশার, শাহারুল ইসলাম, বাবলুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, একরামুল হক, আলমগীর হোসেন, মোজাম্মেল হক খোকা, লিটন হোসেন, মোহন ও রুবেল। মামলাটি প্রথমে থানা এবং পরে ডিবি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। এ মামলার তদন্তকালে এজাহারভুক্ত ১২ আসামি পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে আদালতে আত্মসমর্পণ করে। হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করা হয় আরও কয়েকজনকে। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে আটক ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে অব্যাহতির আবেদন করা হয় এজাহারনামীয় ১৩ আসামিকে। অভিযুক্ত আসামিরা হলো, শার্শার পাঁচপোতা গ্রামের জব্বার মোড়লের ছেলে আনিছুর রহমান, জিড়েনগাছা গ্রামের মৃত ইবাদ আলীর ছেলে আবদুল কাদের, ঝিকরগাছা উপজেলার খলিলুর রহমান গাজীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, পারবেড়াই গ্রামের মৃত অহেদ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম লাট, বায়সা গ্রামের মোশারেফ হোসেন মোড়লের ছেলে বজলুর রহমান টিটু, কেরামত আলীর ছেলে আলামিন ও শুকুর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর। চার্জশিটে মুল অভিযুক্ত আসামিদের অব্যাহতি দেয়ায় বাদী আওরঙ্গজেব আদালতে চার্জশিটের উপর নারাজি আবেদন করেন। বুধবার নারাজি আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক সিআইডি পুলিশকে পুন:তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিলের আদেশ দেন।
মামলার বাদী আওরঙ্গজেব জানিয়েছেন, হত্যাকারীদের আড়াল করে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে মনগড়া চার্জশিট দিয়েছেন। আমি এই চার্জশিটের উপর পুন:রায় নারাজি আবেদন করায় আসামিরা আমার উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়েছে। চার্জশিটের রিপোর্ট আসামিদের পক্ষে নিতে যে টাকা খরচ হয়েছে তা আমার কাছ থেকে আদায় করে নেবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। এই হত্যা মামলাটি সঠিক ভাবে তদন্ত হলে এজাহারনামীয় আসামি কেউ বাদ যাবে না।
তিনি আরো বলেন, চার্জশিটে অভিযুক্ত আাসামিদের কাউকে আমি ও আমার পরিবারের কেউ চিনি না। তাদের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই।