ফরিদপুরে পরীক্ষা হলে এক শিক্ষার্থীকে খাতা না দেখানোয় আরেক শিক্ষার্থী বহিরাগতদের দিয়ে মারধোর করেছে ওই শিক্ষার্থীকে। মারপিটে আহত ওই শিক্ষার্থী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছে আহত শিক্ষার্থীর বাম কানের পর্দা ফেটে গেছে। এর জন্য অস্ত্রপচার করতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে শহরের চাঁনমারি এলাকায় অবস্থিত ন্যাশনাল পরিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী সৈয়দ শাওন আলী (১৭) ওই ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল তৃতীয় পর্বের শিক্ষার্থী। সে সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের সৈয়দ রাশেদ আলীর ছেলে।
সৈয়দ শাওন আলী জানান, গত ২৪ অক্টোবর থেকে ইনস্টিটিউটে মধ্য পর্ব পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামি ৫ নভেম্বর এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা। পরীক্ষা হলে তার পাশে আসন পড়েছে সিভিল বিভাগের তৃতীয় পর্বের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদের (১৮)। সাজ্জাদ শহরের পূর্বখাবাসপুর এলাকার বাসিন্তা।
তিনি বলেন, পরীক্ষার শুরু থেকে সাজ্জাদ তার খাতা দেখে লেখা শুরু করে। সে খানার এক পাতায় লেখা শেষ করলেও সাজ্জাদের লেখা না হওয়া পর্যন্ত তাকে খাতা উল্টাতে দিত না সাজ্জাদ। গত বৃহস্পতিবার ছিল সমাজিক বিজ্ঞান পরীক্ষা। ওই দিন সাজ্জাদকে খাতা না দেখানোয় পরীক্ষা শেষে ইনস্টিটিউট থেকে বের হওয়ার পর সাজ্জাদ ও তার কয়েকজন বহিরাগত সহযোগী তাকে পাশের ঈদগাঁ ময়দানে নিয়ে বেদম ভাবে কিল চড় ও থাপ্পড় মারে। পরে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ থাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নিখিল চন্দ্র দত্ত বলেন, শাওনের বাম কানের পর্দা ফেটে গেছে। এর জন্য তাকে অস্ত্রপচার করতে হবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ন্যশনাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার মো. লুৎফর রহমান বলেন, শাওন বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে ভর্তি রয়েছে। এ ব্যাপারে সাজ্জাদের অভিভাবকদের ইনস্টিটিউটে ডেকে পাঠানো হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত সাজ্জাদের অভিভাবকগণ ইনস্টিটিউটে আসেন নি। তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থীর (সাজ্জাদ) বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ওই ইনস্টিটিউটের সিভিল বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ জানায়, ওই দিন যে ভাবে ঘটনার কথা বলা হয়েছে তেমন ভাবে ঘটনা ঘটেনি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আমি ইনস্টিটিউটের সামনে দাঁড়ানো ছিলাম। ওই সময় আমি দেখেছি দুইজন অপরিচিত ছেলে এসে শাওনকে মারছে। আমি বরং তাদের হাত থেকে শাওনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মুকুল হোসেন জানান, মৌখিক ভাবে অভিযোগ পেয়েছি। চিকিৎসা শেষ করে শাওনকে লিখিত অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।