বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি-বিআরটিএ’র ফিস জমা দেয়া নিয়ে যশোরে পাঁচটি ব্যাংকে ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। কাগজ-কলমে সরকারি ফি নেয়ার বিধান থাকলেও ব্যাংক কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে দিনের পর দিন গ্রাহকদের ঘোরাচ্ছেন। ফলে গ্রাহকদের পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে, আর রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
তবে, ব্যাংক কর্মকর্তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ঘটনা সত্য হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন যশোরের জেলা প্রশাসক।
যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকার প্রদীপ, পূর্ববারান্দীপাড়ার মনির হোসেন, মোল্লাপাড়ার খলিলুর রহমান রাজ, সদর উপজেলার ভগবতীতলার জামাল হোসেন, একই উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের জাকির হোসেন এবং বেনাপোল পোর্ট থানা এলাকার আবু মুছাসহ কয়েকজন অভিযোগে বলেছেন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, রুট পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্যাক্স এবং টোকেন ফি দিতে বিআরটিএ অফিসে এলে তারা চালানের কাগজ দিয়ে টাকা ব্যাংকে জমা দিতে বলেন। এরপর বিআরটি‘র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ন্যাশনাল ব্যাংক, এনআরবিসি, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক এবং ওয়ান ব্যাংকে যেতে হয় টাকা জমা দিতে। গ্রাহকদের তখন এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে পাঠান সেইসব ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এভাবে গ্রাহকরা চরকির মতো ঘুরতে থাকেন এ ব্যাংক থেকে ওই ব্যাংকে। এভাবে দিনের পর দিন পার হয়ে গেলেও কোনো কাজ হয় না। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে এভাবে ঘোরাতে থাকে। টাকা জমা দেয়ার এমন দুর্ভোগের কারণে অনেকেই বিমুখ হয়ে ফিরে যান। অবশ্য দালালদের মাধ্যমে গেলে হয়রানি হতে হয় না, কাজও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হয়ে যায় বলে তারা দাবি করেন।
এ বিষয়ে যশোর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক কাজী মো. মুরসালিন বলেন, গ্রাহকরা মূলত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, রুট পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্যাক্স এবং টোকেন ফিস জমা দিতে যান। শুনেছি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হন। কিন্তু এটি বিআরটিএ’র বিষয় না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে কোনো দালাল নেই।
বিষয়টি নিয়ে আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংকের ম্যানেজার সালাউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, টাকা জমা না নেয়ার অভিযোগ ঠিক না। এই টাকায় তো আমাদের ব্যবসা হয়। মাঝে মাঝে সার্ভারের সমস্যার কারণে বিলম্ব হয় মাত্র।
ওয়ান ব্যাংকের ম্যানেজার দেবাশীষ পাল বলেন, বিআরটিএর টাকা জমা নেয়ার জন্য আমাদের হেড অফিসের টার্গেট দেয়া থাকে। আমরা বসে আছি ওই টাকা নিতে। সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটার মধ্যে যে কেউ টাকা জমা দিতে পারেন, কোনো সমস্যা নেই।
এ ব্যাপারে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফ বলেন, বিআরটিএর সাথে কোন কোন ব্যাংকের চুক্তি আছে, এডির সাথে কথা বলে জেনে নেব। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।