রংপুরের পায়রাবন্দে ঘাঘট নদীর কোল ঘেষে তিন দিনব্যাপী শুরু হওয়া ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে প্রায় তিন লাখ মুসল্লি একসাথে জুমার নামাজ আদায় করেছে। শুক্রবার বেলা পৌনে দুইটায় খুতবা শেষে জুমার নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা ইউসুফ আলী।
প্রায় ৪০ একর আয়তনের বিশাল মাঠে দূর-দূরান্ত থেকে আসা লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শামিয়ানার নিচে অবস্থান নেয়। এখানে নির্ধারিত ১৫০টি কাতারের ব্যবস্থা থাকলেও মুসল্লির নামাজের স্থান সংকুলান না হওয়ায় আরো অন্তত ৫০টি কাতার করা হয়।
ইজতেমাতে রংপুর বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত প্রায় তিন লাখের উর্দ্ধে ছোট ও বড় নানান বয়সী মানুষ জুমার নামাজ আদায় করেন। জুমার নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লির জন¯্রােতে মুখরিত হয়ে উঠে ময়দায়।
মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ ইসলামপুর সড়কসহ রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে ছোট বড় যানবাহনে ভরপুর হয়ে উঠে। দুপুর এগারোটার পর থেকে ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের ঢল নামে। মরা ঘাঘটের বুকে গড়ে তোলা ফসলি জমির ওপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষ হেটে হেটে ময়দানের দিকে যান। নামাজের আগে জন¯্রােতে পরিণত হয় পুরো ইজতেমা ময়দান।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থেকে আসা জাহাঙ্গীর নামে একজন মুসল্লি বলেন, আমি আল্লাহর রহমতে গত বছরও রংপুরে ইজতেমায় জুমার নামাজ পড়েছি। এবারও লাখ লাখ মানুষের সাথে কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে পেরেছি। এটা আল্লাহর রহমত আর আমার সৌভাগ্য।
অন্যদিকে রংপুরের পীরগাছা এলাকার খুরশীদ, রাসেল ও সুমন জানান, তারা সবাই গাড়িতে রংপুরে এসেছে। ইজতেমা মাঠে জুমার নামাজ পড়ে চলে যাবে। শনিবার (আজ) আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে আবারও আসবে।
এদিকে জুমার নামাজের পর কোরআন হাসিদের আলোকে ইমান, আকিদা, দুনিয়া ও আখিরাতের ওপর বয়ান করা হয়। শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১১টায় আখেরি মোনাজাতের ইজতেমা শেষ হবে। এ ইজতেমা থেকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার জন্য হাজার হাজার মুসল্লি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাবেন। গত বছরের চেয়ে এবার ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতের দিনে মুসল্লির সংখ্যা বাড়বে মনে করছেন তাবলীগ জামাতের মুরব্বিরা। হাফিজুল ইসলাম হাফিজ নামে একজন মুরব্বি জানান, শেষ দিনে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ মুসল্লি হবে। ধর্মপ্রাণ মানুষরা ইমামি দায়িত্ব থেকে আল্লাহ্ দ্বীনের জন্য অনেক ত্যাগ, পরিশ্রম, সময় ব্যয় করে তাবলীগ জামাতের মাধ্যমে পথভ্রষ্টদের নবী রাসূলের হুকুম আহকাম আদায়ের পথে থাকার দাওয়াত দিচ্ছেন।
এদিকে রংপুর অঞ্চলের এই ইজতেমায় আইনশৃঙ্খলঅ বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকাতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবিরা নিরাপত্ত্বা বেষ্টিনি গড়েছে। নিñিন্দ্র নিরাপত্ত্বা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরাও।
বুধবার থেকে ইজতেমা মাঠে ইমামতি করেছেন মাওলানা মোজাইদুল ইসলাম। শনিবার মাওলানা আমিনুল ইসলাম ইমামতি করবেন বলে জানা গেছে। এবারও ইজতেমায় ইসলামি শরীয়াহ্ মোতাবেক যৌতুকবিহীন কয়েকজনের বিবাহ সম্পন্ন হবে।