কুষ্টিয়া সদরের সাব-রেজিষ্টার সুব্রত কুমার সিংহ ঘুষের টাকাসহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর হাতে আটকের খবরে তার নিজ উপজেলা মণিরামপুরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। একই অসদুপায়ে তার বিরুদ্ধে মণিরামপুর পৌর এলাকায় ৫ তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি নির্মাণ এবং শশুরবাড়ী ফরিদপুরে ও নিজ এলাকায় প্রায় শতবিঘা জমি নামে বে-নামে ক্রয়সহ চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য বেরিয়ে আসছে। তার রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপট ও জনপ্রতিনিধি পিতার ক্ষমতাসহ অজ্ঞাত নানা কারণে তার বিরুদ্ধে এতদিন মুখ খুলতে সাহস পায়নি এলাকবাসী।
জমি কিনে আলিশান বাড়ি নির্মাণের সত্যতা জানতে শুক্রবার সকালে সরেজমিনে যাওয়া হয় মণিরামপুর পৌর এলাকার ভগবান পাড়ায়। সেখানে গেলে স্থানীয় নারী-পুরুষরা জানায়, বাড়িটি নির্মাণ করেছেন উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউপির সদ্য প্রায়ত চেয়ারম্যান জয়পুর গ্রামের দূর্গাপদ সিংহ’র ছেলে সাব-রেজিষ্টিার কর্মকর্তা সুব্রত সিংহ। বাড়ির প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ওই আলিশান বাড়ি নির্মাণে দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন তারই ভাই বাদল কুমার সিংহ।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, সাব-রেজিষ্টার সুব্রত সিংহের পিতা দুর্গাপদ সিংহ নিজের পৈত্রিক জমি হিসেবে ৪/৫ বিঘার মত রেখে গেছেন। সুব্রত সিংহ চাকুরীতে প্রবেশ করে একের পর এক জমি ক্রয়ের পাশা-পাশি বছর তিনেক আগে নিজ এলাকায় তরিকুল ইসলাম, দাউদ হোসেন, শামছুদ্দীন ও ছমিরসহ একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে জমি ক্রয় করেছেন বলে স্থানীয় অনেকে জানান। এছাড়া সুব্রত সিংহ শশুর বাড়ি ফরিদপুর এলাকায় তার শাশুড়ীর নামে প্রায় ১৫ বিঘা জমি কিনেছেন। বিভিন্ন এলাকায়ও নামে বে-নামে অঢেল সম্পত্তি গড়েছেন বলে সূত্রটি দাবী করেছেন।
অন্যদিকে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে তার অঢেল অর্থ রয়েছে বলে স্থানীয়দের মাঝে প্রচার পাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে তা দিয়ে নির্মাণ করা আলিশান বাড়ি এবং সম্পত্তির ব্যাপারে কেউ যেন মুখ খুলতে না পারে তার জন্য কিছু লোকজনকে ম্যানেজ করে সর্বক্ষণ প্রস্তুত রাখতেন তিনি। তবে মৃত্যুর আগে পিতা দুর্গাপদ সিংহ ইউপি চেয়ারম্যান থাকলেও তার বিরুদ্ধে জোরালো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর দাবী আটক সাব-রেজিষ্টার সুব্রত সিংহের অঢেল অর্থ-সম্পত্তি এবং আলিশান বাড়ি নির্মাণের ব্যাপারে যদি দুদক কর্মকর্তারা মণিরামপুরে এসে তদন্ত করেন তাহলে এর সকল রহস্যর জট খুলবে। পাশা-পাশি তার ভাই বাদল সিংহসহ আরও অনেকের মুখোশ খুলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে বাদল সিংহের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।