ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে আমতলী-তালতলী উপজেলার পাঁচ শতাধিক ঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পরেছে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কয়েক হাজার একর জমির আমনের ক্ষেত। পায়রা নদীর ঢেউয়ে ভেঙ্গে গেছে এক কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ।
আমতলী উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর অফিস সুত্রে জানাগেছে, রোববার সকাল নয়টার দিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আমতলী-তালতলীতে আঘাত হানে। চার ঘন্টা ব্যাপী চলে দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি। বুলবুলের আঘাতে আমতলী-তালতলী উপজেলার পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ¦স্থ হয়েছে। উপড়ে পরেছে হাজার হাজার গাছপালা। মাটিয়ে আমনের ক্ষেত লুটিয়ে পড়ে কয়েক হাজার একর জমির ধান ও সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান কৃষি বিভাগ। বুলবুলের প্রভাবে পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঢেউয়ের আঘাতে পায়রা নদী সংলগ্ন ঘোপখালী, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, ডাঙ্গারখাল, বৈঠাকাটা, তেতুলবাড়ীয়া ,নলবুনিয়া ও জয়ালভাঙ্গার এক কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। হুমকির মধ্যে বসবাস করছে ওইসব এলাকার মানুষ। দ্রুত ব্যবস্থা না নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সম্পুর্ণ ভেঙ্গে ওই এলাকায় পানি ঢুকে তলিয়ে যাবে বলে জানান স্থানীয়রা। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে বুলবুল আঘাত হানার খবর পেয়ে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বালিয়াতলী বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ এলাকার সাইদুর রহমান বলেন, অল্পের জন্য বাঁধ নদীতে বিলিন হয়ে যায়নি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে বাঁধ ভেঙ্গে এই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ও ফসলের ব্যপক ক্ষতি হবে।
মঙ্গলবার আমতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ঘুরে দেখাগেছে, বিভিন্ন স্থানে ঘর বিধ্বস্থ ও গাছপালা উপড়ে পড়ে আছে। আমতলী পৌরসভার বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজ, গাজীপুর বন্দর সিনিয়র মাদ্রাসা ও ঘোপখালী আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসা, আমতলী পৌরসভার সবুজ বাগ এলাকায় হাবুল মৃধার মুরগীর ফার্ম ও খোকন মুসুল্লীর ঘরে চাম্বল গাছ উপড়ে পড়ে পাঁচটি ঘর বিধ্বস্থ হয়েছে।
তালতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মহসীন বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চেয়েছি। তারা তালিকা দিলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা যাবে।
আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, আমন ক্ষেতের ৩০ ভাগ ও সবজির ক্ষেতের ৭০ ভাগ ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বলেন, ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। তিনি তালিকা প্রনয়ন করছেন। তিনি আরো বলেন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।