আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার অলোচিত ধানখালী ইউনিয়ন। চম্পাপুর ইউনিয়নের মতো কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশংকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। চলছে পক্ষে বিপক্ষে সংবাদ সম্মেলন ও উপজেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত চিঠি চালাচালি। একদফা স্থগিতের পর আগামী ২৪ নভেম্বর এ সম্মেলনকে ঘিরে দৃশ্যত দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এক গ্রুপের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা শাহাজাদা পারভেজ টিনু মৃধা। যিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশীর্বাদপুষ্ঠ। অপর গ্রুপ তাঁকে হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে তাকে কমিটিতে স্থান না দিতে করেছে সংবাদ সম্মেলন। এ গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম শহিদুল আলম,সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম বিশ্বাস ও ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদার।
গত ১৯ নভেম্বর ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহাজাদা পারভেজ টিনু মৃধাকে অনুপ্রবেশকারী যুবদল নেতা ও হাইব্রিড আখ্যা দিয়ে তাকে কমিটিতে স্থান না দিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম বিশ্বাস। টিনু মৃধা এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েক করেছেন বলে তিঁনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
ধানখালী ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদারও স্থানীয় একাধিক নেতা কর্মী বলেন, যুবদলের সদস্য হয়েও বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা বনে গেছে টিনু মৃধা। তাঁর কারণে দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা কোণঠাসা ও নির্যাতিত হচ্ছে। তিঁনি দখল থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাজার থেকে চাঁদা আদায় করছেন।
তবে তাঁদের অভিযোগ মিথ্যা আখ্যায়িত করে ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বলেন-গত ইউপি নির্বাচিত নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছে শাহাজাদা পরভেজ টিনু মৃধা। এলাকায় তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। টিনু মৃধার বিরুদ্ধে যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত।
তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে শাহজাদা পারভেজ টিনু মৃধা বলেন, তার পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ তাকে ভালবাসে। তাই একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়াচ্ছে। এলাকায় গেলেই কার জনপ্রিয়তা কত তা প্রমান হবে।
ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম শহিদুল আলম বলেন, টিনু মৃধা অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রিড। তার কারণে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতারা আজ কোনঠাসা।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান বলেন, ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও অভিযোগ বিষয়ে তাঁরা অবগত। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অনুপ্রবেশকারী কেউ দলের সদস্য হতে পারে না। আর কে কমিটিতে আসবে তা নির্ভর করবে কাউন্সিলররা।
তবে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও সাধারণ নেতাকর্মীদের দাবি, যারা দলের দুঃসময়ে ছিলো এবং এলাকার উন্নয়নে কাজ করছে তাদের মূল্যায়ন করা হোক। তৃনমূলের দাবি না মানলে চম্পাপুর ইউনিয়নের মতো আগামী ২৪ নভেম্বর সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য উপজেলা নেতৃবৃন্দকে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচিত করার আবেদন করেন।