তথ্য উপাত্য গোপন করে মুক্তিযোদ্ধা কে নানা বানিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে ২০১৩ সালের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় চাকুরী প্রাপ্ত ভুয়া নাতনি হিসাবে বেতন ভাতা ভোগকরে আসছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার শ্যামগাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা বিউটি খাতুন।
অন্যদিকে দীর্ঘ দিন পর ঘটনার সত্যতা প্রকাশে বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাবেদ আলী বিষটি নিয়ে পড়েছেন জটিলতায়। কারণ খোঁজ খবর করতে গিয়ে এলাকার বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকুরী পাইয়ে দেবার ক্ষেত্রে একটি আদান প্রদান ও বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তির পর মুক্তিযোদ্ধা ছাবেদ আলী ভুয়া নাতনি হিসাবে বিউটি বেগমকে সনদ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছিলেন।
অভিযোগ সুত্রে ও অনুসন্ধানে জানাযায়, ২০১৩ সালে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের সময় ধুনট উপজেলার বিলকাজুলি গ্রামের মশিউর রহমানের মেয়ে শিক্ষিকা বিউটি খাতুন নানা বাড়ির প্রতিবেশি মুক্তিযোদ্ধা ছাবেদ আলীকে ভুয়া নানা বানিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার নাতনি হিসেবে কোঠায় চাকুরি বাগিযে নেন। পরে কৌশলে পুলিশ ভেরিভিকেশন রিপোর্ট এর কাজ ও সুসম্পন্ন করেন তিনি। বর্তমানে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে এর মিস্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিতে নিয়োগ পাবার ক্রেত্রে আগে এবং পরে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক চাকরি প্রার্থীর বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য প্রদানের সত্যতা যাচায়ে কয়েক বার ভেরিফিকেশন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে অধিকত্বর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু এত কিছুর পরও এরপরও ভূয়া পরিচয়ের বিষয়টি তদন্তে কেন ধরা পড়েনি এনিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা বিউটি খাতুনের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন- আমি মুক্তিযোদ্ধা নাতনি কোঠায় চাকরী পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা ছাবেদআলী আমার ধর্ম নানা হয়। আমার মাতা কহিনুর বেগমকে পালিত কন্যা হিসেবে তিনি লালন পালন করেছেন। সেই সম্পর্কে আমি মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় চাকুরী পেয়েছি।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা বিউটি খাতুনের আপন (নিজ)মামা আকতার হোসেন তালুকদার বলেন-আমার বাবা ইব্রাহীম তালুকদার। এই এলাকার আমাদের যথেষ্ঠ ধন সম্পদ রয়েছে। আমার বোন কে আমরা কারোর কাছে পালিত রাখি নাই। বা এমন কোন ঘটনা ঘটে নাই। মুক্তিযোদ্ধা ছাবেদ আলী আমরা একই গ্রামের প্রতিবেশি হিসেবে সুসম্পর্ক রয়েছে। একই গ্রামের বাসিন্দা সোলায়মার(৬০) সহ আরো কয়েকজন বলেন-বিউটির মা কোহিনুর বেগমকে তার বাবা ইব্রাহীম তালুকদার লালন পালন করে বিয়ে দিয়েছে। আমিও সেই বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলাম। তার মাতৃকুল বা পিতৃকুলের কেউই মুক্তিযোদ্ধা নেই।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাবেদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বিষটি কৌশলে এড়িয়ে যেতে চাইলেও পরে স্বিকার করেন। তিনি বলেন- কোহিনুর নামের আমার কোন মেয়ে নাই। আমি কাউকে দত্তক বা পালক নেই নাই। তবে আমার মেয়ে না হলেও কহিনুর সম্পর্ক মেয়ে। রক্তের কেউ না হলেও তাদের সাথে একই গ্রামের বাসিন্দা হিসেবে সু সম্পর্ক রয়েছে।
এদিকে অভিযোগকারী চরকল্যানী গ্রামের কানিজ ফাতেমা বলেন-বিউটি খাতুন সম্পর্কে আমাদের আত্মীয়। তার সাথে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বা নাতি নাতনি কোন রক্তের বা পালিত বা পোষ্য কোন সম্পর্ক নেই। তারা কাগজপত্র জালিয়াতি করা হয়েছে। যা মুক্তিযোদ্ধা কোঠা আইনের পরিপন্থি।আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু বিশেষ কোন কারণে সংশ্লিষ্ঠকর্মকর্তা ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি আরো বলেন অভিযোগ পত্রে মুক্তিযোদ্ধার নাম লেখা বাদ ছিলো পরে হাতে লিখে দিয়েছি অফিসারের সামনেই।
এ ব্যাপারে ধুনট উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন- আমি এমন অভিযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু অভিযোগ পত্রে সুস্পস্ট তথ্য না থাকায় এগোতে পারি নাই। শুনেছি পরে এ বিষয়ে জেলা অফিসে ও অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুন নাহারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন-অভিযোগ পেয়েছি,তদন্ত করে রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।অভিযোগ এক মাস আগে অভিযোগ পেলেও এতোদিনেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণ সমপর্কে জানতে চাইলে বিষটি তিনি বিষযটি এড়িয়ে যান।