সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হলেও বগুড়ার আদমদীঘিতে কমেনি মাদক ব্যবসায়িদের তৎপরতা। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে মাদকের আখড়া নামে পরিচিত সান্তাহার জংশন শহরে বিভিন্ন ধরনের মাদক অবাধে কেনাবেচা হচ্ছে। এ পর্যন্ত মাদক বিরোধী অভিযানে আদমদীঘি থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়িদের মুল হোতাদের গ্রেপ্তার করলেও মাদক ব্যবসা বন্ধ নেই। সান্তাহার শহরের বিভিন্ন মহল্লাসহ ষ্টেশন এলাকায় প্রতিদিন চলছে মাদকের কেনাবেচা। রেলওয়ে জংশন কেন্দ্রিক শহর হওয়ার কারণে বগুড়ার সান্তাহার শহর মাদকের অভয়ারণ্য হিসেবে অনেক আগে থেকে পরিচিত। তবে বর্তমান সান্তাহার চা-বাগান হরিজন কলোনি ও মালশন গ্রাম মাদকের বেশি বেশি অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। এখানে ট্রেন পথ, সড়ক পথে মাদক এসে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায়। সান্তাহার শহরের চা-বাগান হরিজন কলোনী, মালশন গ্রামে ও রথবাড়ীতে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ি মাদকের পাইকারি কেনাবেচা করে। পুলিশের ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা করে বলে তার এলাকার লোকজন অভিযোগ করেছে। এ সকল মাদক ব্যবসায়িদের কাছে হোরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের নেশার ইনজেকশন পাওয়া যায়। পাশের জেলা নওগাঁর ১১টি উপজেলাসহ বগুড়া জেলার সমগ্র এলাকা এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় সান্তাহার শহর থেকে মাদক সরবরাহ হয়ে থাকে। বর্তমানে সারা দেশে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হলেও আদমদীঘি থানা পুলিশ সান্তাহার শহরের কিছু মাদক সেবীদের গ্রেপ্তার করতে পারলেও বাকি মাদক ব্যবসায়ীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে নি।
সরেজমিন সান্তাহার শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং একাধিক মাদক সেবীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অভিযানের প্রথম দিকে মাদকের কেনাবেচা কিছুটা কমে গেলেও বর্তমানে আবারো পুরোদমে শুরু হয়েছে মাদক কেনাবেচা। মুল ব্যবসায়িরা আড়ালে থেকে মাদক সেবীদের দ্বারা কেনাবেচা নিয়ন্ত্রন করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মাদকসেবী জানান, অভিযানের প্রথম দিকে কয়েক দিন মাদক মেলেনি, তবে এখন সব ধরনের মাদক মিলছে কিন্তু দাম অনেক বেশি। তারা আরোও জানান, আগে এক পুড়িয়া হোরোইনের দাম ছিল ১৫০ টাকা সেটি বর্তমানে কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকায়। একই ভাবে ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাজার দামও অনেক বেড়ে গেছে। সে জানায় শহরের চা বাগান হরিজন এলাকায়, মালশন গ্রামে ও রথবাড়ীতে এখন সবচেয়ে বেশি মাদক পাওয়া যাচ্ছে। শুধুমাত্র হরিজন সম্প্রদায় লোকজন প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার মাদক বিক্রি করে। হোরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাঁজার বিক্রয় বন্ধ হয়নি। মাঝে মাঝে আদমদীঘি থানা পুলিশ এ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক সেবীদের আটক করে থাকে। তবে অভিযোগ রয়েছে পুলিশ এ সকল মাদক সেবীদের আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের না করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ৩৪ ধারায় মামলা গ্রহন করে।
এ বিষয়ে আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন বলেন, মাদক বিরোধী অভিযান অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং সকল মাদক ব্যবসায়ী কে আইনের আওতায় আনা হবে।