লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ১০ ইউনিয়ন এবং পৌর কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি সর্বশেষ কবে হয়েছে তাও ভুলতে বসেছেন খোদ ওই কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইউনিয়ন কমিটির মেয়াদ তিন বছর। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে দলের কাউন্সিলররা তাদের নেতা নির্বাচিত করবেন। কিন্তু রামগঞ্জ পৌরসভা ও ইউনিয়নে কমিটির মেয়াদ তিন বছরের জায়গায় ১১ বছর কিংবা এরও বেশি হলেও নতুন সম্মেলনের খবর নেই। পুরোনো কমিটির অনেকে মৃত্যুবরন করেছেন আবার অনেকে রাজনিতি থেকে সরে গিয়ে ব্যবসা বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ঢিলেতালে চলছে দলের কার্যক্রম। ফলে গতিহীন হয়ে পড়ছে তৃণমূল, উঠে আসছে না নতুন নেতৃত্ব।
আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতার সাথে আলাপ করে জানা যায়, ২০০৮ রামগঞ্জ পৌর আওয়ামীলের কমিটি হয়, ঐ কমিটি সাধারন সম্পাদক ছাড়া বলতে গেলে সবাই নিস্ক্রীয়। কাঞ্চনপুর ইউনিয়নে দুই সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগে কমিটি হয় ১০ বছর আগে। পূনাঙ্গ কমিটি নাহলেও গত বছর মারা যায় ওই কমিটি সভাপতি আবদুল করিম মাষ্টার। নোওয়াগাও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি হয় ৮ বছর আগের। সভাপতি ব্যবসার কাজে বেশীর সময় ঢাকাতে থাকে আর সাধারন সম্পাদক মাদকাসক্ত হওয়ায় ইউনিয়নের অবস্থা বেহাল। ৪ নম্বর ইছাপুর ইউনিয়নে ১০ বছর আগে ঘরোয়া বৈঠকে কাকতালীয় ভাবে সভাপতি আর সম্পাদকের নাম ঘোষনা দিলে এখনও হয়নি পুর্নাঙ্গ কমিটি। নেতৃত্ব নিলেও তারা বেশীর ভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করছেন। ১১ বছর আগে ৫ নম্বর চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি হয়। আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম মারা গেছে ৪ বছর আগেই। ১০ বছর আগের ৬ লামচর এবং ৭ নম্বর দরবেশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি। পূর্নাঙ্গ কমিটি না থাকলেও দায়িত্বে থাকা ৪/৫ জনের মধ্যে অন্তদ্বন্ধ লেগেই আছে দীর্ঘদিন থেকে। পূর্নাঙ্গ কমিটি না হলেও ১১বছর আগের ৯ নম্বর ভোলাকোট ও ১০ নম্বর বাট্টা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটির কোন কার্যক্রম নাই বললেই চলে।
ভাদুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন ভুঁইয়া জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের অবস্থাই তো খারাপ, ইউনিয়নে সম্মেলন হবে কিভাবে। ২০১৬ ইং সালের ১৫ জুলাই সম্মেলনের মাধ্যমে ৪ সদস্য কমিটি হয়। তারপর থেকে সভাপতিকেই তো খোঁেজই পাওয়া যায়না। খরছ করার ভয়ে তিনি জাতীয় প্রোগ্রামে রামগঞ্জে আসেন না। সিনিয়র সহ-সভাপতি আর্থিক সহযোগীতা না করলে তো জাতীয় প্রোগ্রামগুলো চালানো কষ্ট হতো। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বাচ্ছু জানান, ১০/১১/ আগে কমিটি হলেও কোন ইউনিয়নে পূনাঙ্গ কমিটি নেই। প্রতিটি ইউনিয়নে ২/৩ জন দিয়ে চলছে দলীয় কার্যক্রম। আমি বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও সভাপতি-সম্পাদকের অদক্ষতার কারণে গত তিন বছরে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটা বর্ধিত সভা করা সম্ভব হয়নি।উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আ.ক.ম রুহুল আমিন সত্যতা স্বীকার করে বলেন বর্ধিত সভার পরে সম্মেলনের মাধ্যমে পৌর এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি করা হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড.সফিক মাহমুদ পিন্টু বলেন,আমি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে শীর্ষস্থানীয় সকল নেতাদের সমন্বয়ে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করেছি। উপজেলা কমিটির জরুরী সভায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি গঠনে সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা করে অনিবার্য কারনবসত স্থগিত করা হয়েছে। শীর্ঘ্রই জেলা আ.লীগের সাথে সমন্বয় করে নতুন সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা করা হবে।