কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড আটকে রাখায় দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সরকারি সকল কৃষি সহায়তা বঞ্চিত হয়েছে সিংড়ার চলনবিলের অর্ধশতাধিক কৃষক। উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের ১নম্বর সংরক্ষিত আসনের সাবেক ইউপি সদস্যা মোছাঃ মাঞ্জুয়ারা বেগম ওরফে মুঞ্জুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে তিনি ওই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড নিজ বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন। বুধবার চলনবিলের কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান সংগ্রহে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ করেন কৃষকরা। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কৃষকরা অভিযোগ করেন, আমন ধান সংগ্রহে প্রশাসনও দুর্নীতি করছে। পরে উপজেলা অডিটোরিয়াম হলরুমের সামনের রাস্তায় প্রায় ২শতাধিক কৃষক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেন।
সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে সিংড়া উপজেলা অডিটোরিয়াম হলরুমে সুকাশ ইউনিয়নের কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান সংগ্রহের জন্য লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন শুরু করে উপজেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটি। হঠাৎ দুপুর ২টায় কৃষক নির্বাচনে দুর্নীতির অভিযোগ এনে অডিটোরিয়াম হলরুমের সামনে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেন সুকাশ ইউনিয়নের প্রায় ২শতাধিক কৃষক। এ সময় মেম্বারের বাড়িতে কৃষি সহায়তা কার্ড আটকে রেখে কৃষি সহায়তা বঞ্চিত হয়েছেন অনেক কৃষক অভিযোগ করেন।
ধুরসন গ্রামের কৃষক আবদুস সাত্তার অভিযোগ করেন, সকল কৃষকদের না জানিয়েই আজকের এই কৃষক নির্বাচন করা হচ্ছে।
আগমুরসন গ্রামের কৃষক আবু বক্কর অভিযোগ করেন, সে সকালে লোক মুখে শুনে এখানে এসেছেন। দেরীতে আসায় তাকে রেজিস্ট্রেশন করতে দেয়া হয়নি। সিংড়ায় আসা-যাওয়া খচরসহ সারাদিন তার অনেক ক্ষতি হয়েছে।
বনকুড়াইল গ্রামের রাব্বানী আকন্দ ও মমিন আলী বলেন, আজকে তাদের কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড হাতে পেয়েছেন। দীর্ঘ প্রায় ১০বছর ধরে তাদের কার্ড সাবেক ইউপি সদস্যা মোছাঃ মাঞ্জুয়ারা বেগম ওরফে মুঞ্জু বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন। তারা সকল সরকারি কৃষি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবাইদুর রহমান বলেন, তার জানা মতে ধান সংগহের বিষয়ে মাইকিং বনকুড়ি গ্রামে করা হয়নি।
এবিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্যা মোছাঃ মাঞ্জুয়ারা বেগম ওরফে মুঞ্জুর ছেলে মোফাজ্জল হোসেন ফোনে বলেন, বাসায় আম্মা নেই। আর মাত্র ১০ থেকে ১২টি কার্ড ছিল সেগুলো সকালে কৃষকরা নিয়ে গেছে। ১০বছর ধরে কৃষি কার্ড তাদের বাসায় কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তো আর কার্ড বিতরণ করা সম্ভব নয়।
এবিষয়ে সুকাশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, আজকের কৃষক নির্বাচনের বিষয়টি আমার জানা মতে গ্রামে গ্রামে মাইকিং করা হয়েছে। আর কোন কৃষকের কার্ড যদি কোন মেম্বারের বাড়িতে থাকে সে দায় ভার ওই মেম্বারকেই নিতে হবে।
এবিষয়ে অতিরিক্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সালাউদ্দিন বলেন, তার জানামতে মাইকিং করা হয়েছে। আর কোন সাবেক মেম্বার কার্ড আটকিয়ে রেখেছে এটা তার জানা নেই।
এবিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, তিনি কৃষকদের অভিযোগ শুনেছেন। আগামী মিটিংয়ে এ বিষয়ে উপস্থাপন করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, তিনি জেলার মিটিংয়ে রয়েছেন। ফিরে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।